কুতুবদিয়ায় শেষ মুহুর্তে জমে উঠেছে ঈদবাজার

26-06কুতুবদিয়া প্রতিনিধি : মুসলমানদের সবচেয়ে ধর্মীয় বড় উৎসব ইদুল ফিতর বা রমজানের ঈদ। আর মাত্র ৫/৬ দিন বাকী আছে ঈদুল ফিতরের।  রমজানের ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই ভিড় বাড়ছে কুতুবদিয়ার বিপনী বিতানগুলোতে। বিপনী বিতানগুলোর ব্যবসায়ীরা প্রথম দিকে ঈদবাজার ফাঁকা দেখে হতাশ হলেও শেষ মুহুর্তে ঈদের বাজার জমজমাট হওয়ায় ব্যবসায়ীরা হতাশামুক্ত হয়েছেন। কুতুবদিয়া উপজেলার প্রধান বাজারগুলোর প্রায় ৫০টি বিপনী বিতানে সকাল থেকে পুরো রাত ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যেদিকে যাই সেই দিকে শুধু নারী -পুরুষ ক্রেতাদের  ভিড়। শেষ মুহুর্তে ভাল বিক্রিতে ব্যবসায়ীরা বেশ খুশি। গতকাল ৩০ জুন বৃহস্পতিবার বিকালে কুতুবদিয়া উপজেলার প্রধান বাজার বড়ঘোপ এর বেশ কয়েকটি বিপনী বিতান ঘুরে দেখা গেছে,বিপনী বিতানগুলোর বেশির ভাগ শাড়ির দোকান নারী ক্রেতাদের দখলে রয়েছে। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন,আসন্ন ঈদে নারী ক্রেতাদের পছন্দ নামিদামি ব্রান্ডের শাড়ি ও ভারতীয় ডিজাইনের শেলোয়ার কামিজ। এদিকে ক্রেতাদের আকর্ষন করতে দোকান গুলোতে আলোকসজ্জায় সাজানো হয়েছে। মুসলিম সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে কুতুবদিয়া উপজেলার সবগুলো দোকানে নিত্য-নতুন ডিজাইন ও মডেলের কাপড়ের সমারোহ চোখে পড়ার মত। সরজমিনকালে দেখা গেছে,উপজেলার বড়ঘোপ বাজারের সোনালী গার্ডেন,একতা ষ্টোর,আবিদ কালেকশন,আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্স,কহিনুর ষ্টোর,জিয়া কা¬র্থ ষ্টোর, জলাল গার্মেন্টস,সততা ষ্টোর,মনে পড়ে বস্ত্র বিতাণ,ধূরুং বাজারের মাহি ফ্যাশন,অপরুপা ফ্যাশন,আতিক শফিং কমপ্লেক্স,বাদশা ফ্যাশন,মা-ফ্যাশন হাউস,নীল দরিয়া,খাদি মিউজিয়াম,নেজাম ষ্টোরসহ ২টি বাজারের প্রায় ৫০টি দোকান। এসব দোকানে শোভা পাচ্ছে মেয়েদের পছন্দের শেলোয়ার, কামিজ, কিরণমালা, আনার কলি, লেহেঙ্গা, পাগলু, শিলা, ছাম্মাকছালো, ঝিলিক, ফুলকলি, শিপন, স্কাট টপস, থ্রি-পিস, জিন্স প্যান্ট, জামদানি শাড়ি, বেনারশি, কাতান, সিল্ক, জর্জেট জয়পুরি, ছেলেদের নবাবী পাঞ্জাবি, শেরওয়ানি, ফতুয়া, টি-শাট, প্যান্ট এবং ছোটদের জন্য রয়েছে,বাহারি ডিজাইনের তৈরী পোশাক। প্রত্যেকটি দোকানে ক্রেতাদের ভিড় উপচে পড়েছে। জিয়া ক্লার্থ ষ্টোরের সত্ত্বাধিকারী মোঃ জিয়া বলেন,এবারের রমজান মাস শুরুর আগে কুতুবদিয়া উপজেলার ব্যাপক এলাকা ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু আঘাত ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায়  প্রথম দিকে ক্রেতা সমাগম কম হলেও শেষ পর্যায়ে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়ে ব্যবসায়ীরা খুব খুশি হয়েছেন। ব্যবসায়ীরা জানায়,কুতুবদিয়া উপজেলার প্রায় অর্ধলাখ নারী পুরুষ প্রতিদিন উপজেলার বিপনী গুলোতে ভিড় করছে। এতে ব্যাপক ভাবে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। বেচাবিক্রিও মোটামুটি ভাল হচ্ছে। ক্রেতারাও বিভিন্ন পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে পাচ্ছে। এতে করে ঈদবাজারমুখি ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দে কেনাকাটা সারতে পারছে। নেজাম ষ্টোরের মালিক নেজাম জানায়,অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার কাপড়ের দাম একটু বেশি হলেও গুনগত মান ভাল হওয়ায় ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দে ক্রয় করছে। এই দোকানে নারীদের চাহিদা বশি বলে দাবী করেন। একতা শফিং কমপ্লেক্স এর মালিক মোঃ ফারুক জানায়,ঈদ উপলক্ষে দোকানে ভাল মানের শাড়ি,থ্রি-পিস,কসমেটিক,ও শিশুদের কাপড়সহ বিভিন্ন পোশাকের সমারোহ নিয়ে এসেছেন।বেশির ভাগ পণ্যের দামও অনেকটা ক্রেতাদের নাগালের ভিতরে রয়েছে। এদিকে ক্রেতা এরশাদ জানায়,বিপনী গুলোতে ঈদের কাপড়-চোপড়ের দাম দ্বিগুনে হাকাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তার ক্রেতাদের নিকট অতিরিক্ত টাকা দাবী করে নিচ্ছেন বলে জানান এ প্রতিবেদকে। অপর ক্রেতা নূর হোসেন ফকির জানায়,এবারের ঈদ বাজারে অন্যান্য বছরের তুলনায় কাপড়-চোপড় চওড়া দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়াীরা। সাইফুল ইসলাম নামে ক্রেতা জানায় মেয়েদের ভিড়ের কারনে কাপড়ের দোকান থেকে কাপড় না কিনে চলে আসতে হয়েছে। এ ব্যাপারে বড়ঘোপ বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সচিব ও কুতুবদিয়া উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আওরঙ্গজেব মাতবর জানায়,প্রতি বছরের ন্যায় বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি অনিয়ম প্রতিহত করতে মনিটরিং টিম গঠন করে বিপনীগুলো আমি নিজেই প্রতিদিন পরিদর্শনে যাই। এ পর্যন্ত ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের সাথে কোন গন্ডগোল হয়নি। আশা করি হবেওনা। এব্যাপারে কুতুবদিয়া থানা ওসি অংসা থোয়াই বলেন,ঈদ বাজারে আগত নারী –পুরুষরা নির্বিঘেœ কেনাকাটা করে বাড়ি ফিরতে পারে সেই জন্য পুলিশ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিয়েছে। উপজেলার ২টি বাজারে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা জোরদার কার লক্ষ্যে ২টি পুলিশ টহল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা বাজারে সার্বক্ষিক টহল দিচ্ছে।


শেয়ার করুন