কক্সবাজার-বান্দরবান এখনও বিচ্ছিন্ন

ডেস্ক নিউজ:
বন্যাকবলিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়ক দিয়ে এখনও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে আছে। পানি নামতে শুরু করলেও চন্দনাইশ ও সাতকানিয়ার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক এখনও হাঁটু থেকে কোমর পানিতে ডুবে আছে। পানিতে হেঁটে কিংবা নৌকা-ভ্যানগাড়িতে চড়ে লোকজনকে সড়ক পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে।

অতি ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সোমবার (৭ আগস্ট) রাত থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ, সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া উপজেলায় পানি বাড়তে শুরু করে। সড়ক-মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ডুবে যাওয়ায় মঙ্গলবার সকাল থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে কক্সবাজার ও বান্দরবানের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। দুইদিনেও যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়নি।

চট্টগ্রাম হাইওয়ে সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাসিম খান সারাবাংলাকে বলেন, ‘গত (মঙ্গলবার) রাত থেকে বৃষ্টিপাত তেমন হয়নি। এ জন্য পানি নেমে যেতে শুরু করেছে। এরপরও কোথাও হাঁটু পানি, কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি আছে। বাস, ট্রাক, বড় যানবাহন চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। তবে অটোরিকশা কিংবা পিকআপ ভ্যানের মতো ছোট ছোট দুই একটি গাড়ি পানির ভেতর দিয়েও চলাচল করছে। যদি বৃষ্টি আর না হয়, তাহলে রাতের মধ্যে পানি নেমে যেতে পারে। এরপর যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হবে।’

সারাবাংলার স্টাফ ফটো করেসপন্ডেন্ট শ্যামল নন্দী বন্যাকবলিত মহাসড়কে গিয়ে দেখেন, চন্দনাইশের হাশিমপুর বড়পাড়া থেকে কসাইপাড়া হয়ে সাতকানিয়ার কেরাণীহাট পর্যন্ত অংশ বুধবার দুপুরেও পানিতে তলিয়ে আছে। মহাসড়কে পানির স্রোত আছে। এরপরও লোকজন পানির মধ্য দিয়ে হেঁটে কেউ বা আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছেন, কেউ অন্য গন্তব্যে যাচ্ছেন। অনেকে ভ্যানগাড়িতে করে ঘরের আসবাবপত্র, হাঁস-মুরগি, ছাগল নিয়ে যাচ্ছেন আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে।

চট্টগ্রাম-বান্দরবান সড়কে সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া, বুড়ির দোকান, বায়তুল ইজ্জতসহ কয়েক কিলোমিটার এলাকা এখনও পানিতে তলিয়ে আছে। বানের পানিতে ডুবে থাকা বান্দরবান থেকে চন্দনাইশে পৌঁছানোর অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন মো. শফিক।

সারাবাংলাকে শফিক বলেন, ‘বান্দরবান সদর থেকে নৌকায় করে প্রথমে বাজালিয়া আসি। সেখান থেকে পানিতে প্রায় চার কিলোমিটার হেঁটে বুড়ির দোকানে আসি। একটা মসজিদে রাত কাটাই। নৌকায় করে সকালে বায়তুল ইজ্জতে বর্ডার গার্ডের ক্যাম্পের সামনে আসি। সেখান থেকে আবার হেঁটে কেরাণীহাটে আসি। কেরাণীহাটে কোমর পর্যন্ত পানি। সেখান থেকে সিএনজি টেক্সিতে করে ২০ টাকা ভাড়ায় মৌলভীর দোকানে আসি। আরেকটি অটোরিকশায় চন্দনাইশ কসাইপাড়া আসি। আমার বাড়ি আরও তিন কিলোমিটার দূরে। এখন পানির মধ্যে হেঁটে বাড়িতে যাচ্ছি।’

এএসপি নাসিম খান সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, চন্দনাইশের দোহাজারি থেকে সাতকানিয়ার কেরাণীহাট পর্যন্ত এলাকায় অনেক যানবাহন বিকল হয়ে আছে। সড়কের ওপরেও বিকল যানবাহন আছে। প্রায় অর্ধেক ডুবন্ত অবস্থায় শত শত বাস, ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন এলাকায় মহাসড়কের পাশে।


শেয়ার করুন