কক্সবাজারে ষ্টুডেন্ট কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত

sfwsgwsgএম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন॥

এখানে কোন দৌঁড়াদৌড়ি বা ছুটাছুটি নেই। প্রার্থীদের প্রতীক নিয়ে হাঁক ডাকও নেই। নেই কোন মারামারি। ভোটাররা সুশৃঙ্খলভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছে। বলতে গেলে টুশব্দটিও নেই। যাকে বলে একদম নিরব ভোটকেন্দ্র। তবে উৎসাহ-উদ্দীপনার যেন কমতি নেই।
কক্সবাজার বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমির ষ্টুডেন্টস কেবিনেট নির্বাচন-২০১৫ উপলক্ষে আজ শনিবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত নির্বাচনের দৃশ্যটিই ছিল ঠিক এ রকমই।

দেশের মাধ্যমিক স্তরের বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ষ্টুডেন্টস কেবিনেট বা ছাত্র মন্ত্রিপরিষদ গঠনের লক্ষ্যে এ রকম নির্বাচনের আয়োজন করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে প্রথম পর্যায়ে আজ সারা দেশের এক হাজার ৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ষষ্ট থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহনের মাধ্যমে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে, স্টুডেন্টস কেবিনেট গঠনের উদ্দেশে বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমীতে আজ সকাল ৮টা থেকে বিরতিহীনভাবে দুপুর ১টা পর্যন্ত অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একজন সাব ইন্সপক্টেরের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল দায়িত্ব পালন করে।

এ ছাড়াও পর্যবেক্ষক হিসাবেও কেন্দ্রে এসেছিলেন আইনজীবী, সাংবাদিক, কবি-সাহিত্যিকসহ অনেকেই। তা ছাড়াও ভোটগ্রহণ চলাকালে স্কুলটির গেইটে বেশ কয়েকজন উৎসুক লোকের ভীড়। সেই ভীড় থেকেই একজন বললেন, গণতন্ত্র চাইতে মনে হইলে এডে চাই-জ। গণতন্ত্র কি জিনিষ স্কুলের পোয়া-মাইয়াঅলে দেহাইদের বাজিরে।
এ কথার মানে হলো- গণতন্ত্র যদি দেখার ইচ্ছা থাকে তাহলে এখানে দেখে যান। আর গণতন্ত্র কি রকম সেটা স্কুলের ছেলে-মেয়েরাই দেখিয়ে দিচ্ছে বাবারে।

বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমীর পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম,এম সিরাজুল ইসলাম ষ্টুডেন্টস কেবিনেট গঠনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিশুকাল থেকে গণতন্ত্রের চর্চা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া, অন্যের মতামতের প্রতি সহিষ্ণুতা প্রদর্শন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিখন শিখানো কার্যক্রমে শিক্ষকদের সহযোগিতা করা।
তা ছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিবেশ উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণসহ ক্রীড়া ও সংস্কৃতি কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহণই মূল লক্ষ্য।

এ ব্যাপারে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ সৈয়দ করিম জানান, স্কুলের প্রাতঃ ও দিবা শাখা মিলে ২ হাজার ৩০০ ভোটারের মধ্যে শতকরা ৯৭ জন শিক্ষার্থী ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া সবাই ছাত্র-ছাত্রী। এমনকি প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, পোলিং এজেন্ট, প্রিসাইডিং অফিসার থেকে শুরু করে আইন শৃঙ্খলায় নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকরাও স্কুলেরই ছাত্র-ছাত্রী।

স্কুলের শিক্ষকরা কেবল শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা দিয়েছেন মাত্র। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যক্ষ নির্বাচনে ৮ জন ষ্টুডেন্ট কেবিনেট প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছে।
নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আগামী এক বছরের জন্য স্কুলের পরিবেশ সংরক্ষণ, পুস্তক ও শিখন সামগ্রি, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সংস্কৃতি ও সহপাঠ কার্যক্রম, পানি সম্পদ, বৃক্ষ রোপন ও বাগান তৈরি, দিবস পালন, অনুষ্ঠান সম্পাদন, অভ্যর্থনা ও আপ্যায়ন এবং আইসিটি নিয়ে কাজ করবে ।


শেয়ার করুন