আমদানীর অনুমতি

কক্সবাজারের লবণ শিল্পে অশনি সংকেত

কক্সবাজারের লবণ শিল্পে ctn copyআতিকুর রহমান মানিক, বিশেষ প্রতিবেদক :

বিদেশ থেকে লবন আমদানীর অনুমতি দিয়েছে সরকারের শিল্প মন্ত্রনালয়। কতিপয় অসাধু মিল মালিক, বিসিক এ ঘাপটি মেরে থাকা একটি চক্র ও ঢাকা-নারায়নগঞ্জ কেন্দ্রীক মধ্যসত্ত্ব ভোগীদের সমন্বয়ে গঠিত কুখ্যাত সিন্ডিকেটের বহুমূখী লবিং গ্র“প সরকারকে ভূল বুঝিয়ে শেষ পর্যন্ত লবন আমদানীর ব্যবস্থা করেছে। এতে দেশের একমাত্র লবন উৎপাদনকারী জেলা কক্সবাজারের ২০ লক্ষ লবন চাষীর জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, এক লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত লবন বিদেশ থেকে আমদানীর জন্য লবন আমদানী নিষিদ্ধ সংক্রান্ত আমদানী নীতিমালা ইমপোর্ট পলিসি অর্ডার-২০১২-২০১৫ এর ২৬ (৫৮) অনুচ্ছেদ’র কার্যকারিতা আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। সে মোতাবেক আগামী ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যেই উপরোক্ত এক লাখ টন লবন আমদানী করতে হবে।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আমদানী ও রপ্তানী প্রধান নিয়ন্ত্রকের দপ্তরের লবন আমদানী সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একজন লবন মিল মালিক সর্বোচ্চ ১০ হাজার মেট্রিক টন অপরিশোধিত লবন আমদানী করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে এল সি খোলার ১ মাসের মধ্যেই আমদানীকৃত লবন শিপমেন্ট করতে হবে। এ দিকে লবন আমদানী হলে কক্সবাজারের স্বয়ংসম্পূর্ণ লবন শিল্প হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চাষীরা। দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী-কুতুবদিয়াসহ পেকুয়া-চকরিয়া-টেকনাফ ও সদর উপজেলার উপকুলীয় ৭৫ হাজার হেক্টর জমিতে প্রতিবছর প্রায় বিশ লাখ মেট্রিক টন লবন উৎপাদন হয়। দেশের বাৎসরিক চাহিদার ১৬ লাখ টন মিটিয়েও প্রতিবছর ৩/৪ লাখ মেট্রিক টন লবন উদ্ধৃত থাকে। গত মৌসুমে উৎপাদিত সাড়ে ৩ লাখ টন লবন অবশিষ্ট থাকার পরেও লবন আমদানী কক্সবাজারের অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

দেশের একমাত্র লবন উৎপাদনকারী জেলা কক্সবাজারের উৎপাদিত লবন প্রক্রিয়াজাত ও পরিশোধন করে দেশব্যাপী সরবরাহের জন্য ইসলামপুর শিল্প এলাকায় ৪২ টি কারখানা গড়ে উঠেছে। এ ছাড়াও অপরিশোধিত লবন পরিবহণের জন্য জেলাব্যাপী গড়ে উঠেছে কার্গো বোট শিল্প। আমদানীর খবরে হতাশা দেখা দিয়েছে লবন মিল-মালিক, দশ সহস্রাধিক শ্রমিক পরিবার, ট্রলার মালিক শ্রমিক ও চাষীদের মাঝে। বাংলাদেশ লবন চাষী সমিতির সদর উপজেলা সভাপতি হান্নান মিয়া জানান, আর মাত্র দুই মাস পরেই জেলাব্যাপী লবন উৎপাদন মৌসুম শুরু হবে। আমদানীর ফলে দরপতন হলে লবন চাষী ও উদ্যোক্তারা এ খাত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়ার আশংকা রয়েছে।


শেয়ার করুন