এরদোগানের সমর্থনে রাত জেগে রাজপথ পাহারা দিচ্ছে তুর্কিরা

0,,19425782_303,00আঙ্কারা: ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনার ১৩ দিন পরও রাজপথ ছাড়েননি তুর্কিরা। তাদের আশঙ্কা ফের অভ্যুত্থান চেষ্টা হতে পারে। তাই নির্বাচিত সরকার রক্ষায় তারা রাস্তা দখল করে রেখেছেন। পাহারা দিচ্ছে এরদোগানের রাজ প্রাসাদ।

১৫ জুলাই রাতের কথা, নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে অভ্যুত্থানের ঘোষণা দেয় সেনাবাহিনীর একাংশ। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান অভ্যুত্থান ঠেকাতে জনগণকে রাস্তায় নামার অনুরোধ জানান। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে অভ্যুত্থান চেষ্টাকারী সেনাদের ধরাশয়ী করে ফেলে সাহসী তুর্কিরা। রাস্তায় শুয়ে পড়ে ট্যাংক আটকে দেয়, সশস্ত্র সেনাদের অস্ত্র কেড়ে নেয় তারা।

ঘটনার পর ১৩ দিন পেরিয়ে গেলেও রাস্তা ছাড়েননি তারা। কিভাবে এরদোগানকে সমর্থন জানাচ্ছেন তুর্কিরা, কী ভাবছেন তারা এসব বিষয় নিয়ে ডয়েচে ভেলে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আরটিএনএন পাঠকদের জন্য নিম্নে তুলে ধরা হলো-

প্রতিবেদনে বলা হয়, তুর্কিরা প্রতিরাতে গাড়ি চালিয়ে আঙ্কারার ‘ডেমোক্রেসি ওয়াচ’ ব়্যালিতে হাজির হন। ব়্যালিতে অনেকের মতো হাজির ছিলেন ২১ বছর বয়সি জয়নিপ। তিনি বলেন, ‘এরদোগান যতদিন চাইবেন ততদিন আমি তার প্রতি সমর্থন জানানো অব্যাহত রাখবো। তিনি আমাদের কমান্ডার ইন চিফ’৷

0,,19425770_303,00১ বছর বয়সি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সাদিত বলেন, ‘যদি দরকার হয় তাহলে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে হলেও ব়্যালিতে থাকবো’। তার মতে, তুরস্কের মতো একটি উদীয়মান রাষ্ট্র শুধু এরদোগানের পক্ষেই চালানো সম্ভব।

যখন জানতে চাওয়া হয় কেন তিনি এরদোগানের সমর্থক, তখন ২১ বছর বয়সি পাবলিক ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী কামেল কায়া জানান, এরদোগানের একেপি পার্টি তুরস্কের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক পরিসেবার উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘(এরদোগান) ক্ষমতায় আসার আগে হাসপাতালগুলোর খুব করুণ দশা ছিল। তিনি সেগুলোর সংস্কার এবং সামগ্রিক অবস্থা ভালো করেছেন।’

২২ বছর বয়সি ইসমাইল জানান, তিনি এরদোগানকে সমর্থন দিচ্ছেন কেননা তিনি তুরস্কের সরকারকে দেশটির সমাজের ইসলামিক শেকড়ের কাছাকাছি নিয়ে গেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা ধর্মনিরপেক্ষতার বিরুদ্ধে কোনো সংবিধান চাই না, তবে আমরা এমন একটি চাই যেখানে ইসলামের জন্য আরো জায়গা থাকবে।’

ব়্যালিতে আগতদের বিনামূল্যে খাবার, পানি এবং পরিবহন সেবা দেয়া হয়, জানান তুরস্কের কুর্দিপন্থি এইচডিপি পার্টির চেয়ার সেলাহাতিন দিমিত্রাস।

তিনি বলেন, ‘অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া এরদোগানের সমর্থকদের পানি এবং খাবর দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। আর দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনীর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে আমার লোকেরা প্রতিবাদ করে তখন তাদের দিকে জলকামান ছোড়া হয়।’

তুরস্কে ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর এ পর্যন্ত ৬০০০০ মানুষকে আটক, গ্রেপ্তার অথবা চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে। এখানকার মানুষ বিশ্বাস করে যে, তারা ন্যয়বিচার পাবে।

এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সমালোচনাকে অগ্রাহ্য করে ৩৪ বছর বয়সি শাহিন বলেন, ‘ইউরোপ আমাদের সমাজ নিয়ে শঙ্কিত। কেননা তারা জানে, আমরা শীঘ্রই বিশ্ব শক্তিতে পরিণত হবে। আর এ জন্যই তারা আমাদের সমালোচনা করে।’

 


শেয়ার করুন