এবারের এইচএসসি থেকেই থাকছে না সেরা প্রতিষ্ঠান

HSC-no-best-college_সিটিএন ডেস্ক:

আগামী ৯ আগস্ট প্রকাশিতব্য এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে থাকছে না সেরা প্রতিষ্ঠানের (টপ-২০, টপ-১০) তালিকা। সেরা হতে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করছে বলে পাবলিক পরীক্ষায় এ তালিকা থাকছে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল থেকেই এটা কার্যকর হচ্ছে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আবু বক্কর ছিদ্দিক শনিবার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলে সেরা প্রতিষ্ঠানের তালিকা থাকছে না। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী আগেই ঘোষণা দিয়েছেন। তবে সেরা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত নতুন কোন বিষয়ও এবার চালু হচ্ছে না। বোর্ডগুলোর পাসের হারসহ অন্যান্য বিষয়গুলোই স্থান পাবে ফলাফলের সার-সংক্ষেপে।’
এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের এইচএসসি, মাদ্রাসা বোর্ডের আলিম ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৮৮৪ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। ৮ হাজার ৩০৫টি প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষা ২ হাজার ৪১৯টি কেন্দ্রের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবছর এইচএসসিতে বোর্ডভিত্তিক সেরা ২০ ও জেলাভিত্তিক সেরা ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা হয়। বোর্ডগুলোর অধীনে নেওয়া অন্যান্য পাবলিক পরীক্ষাগুলোতেও এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছিল।
২০১০ সাল থেকে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত পরীক্ষার্থীর শতকরা হার, শতকরা পাসের হার, মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও প্রতিষ্ঠানের গড় জিপিএ মূল্যায়নের ভিত্তিতে এ সেরা তালিকা করা হতো। এর আগে শতভাগ পাস এবং সর্বাধিক জিপিএ’র ভিত্তিতে সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্ধারণ করা হতো।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, চাপ দিয়ে কোন কোন প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার কেন্দ্র সুবিধামত মতো স্থানে ফেলছে। তারপর কেন্দ্রের শিক্ষকদের সঙ্গে আঁতাত করে পরীক্ষা শুরুর সঙ্গে সঙ্গে প্রশ্ন নিয়ে উত্তর লিখে নিজেদের পরীক্ষার্থীদের বলে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। সব চেষ্টাই সেরা হওয়ার জন্য। সেরা তালিকা কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা করার দুয়ারও খুলে দিচ্ছে।
গত এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় এমন কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা।
গত ৩০ মে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কিছু প্রতিষ্ঠান টপ-২০ ও টপ-১০ এর তালিকায় থাকার জন্য অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করে থাকে। এ জন্য কোন পাবলিক পরীক্ষায় সেরা প্রতিষ্ঠানের কোন তালিকা থাকবে না।’
মন্ত্রী বলেন, ‘ভাল একটা উদ্দেশ্য নিয়ে সেরা প্রতিষ্ঠানের তালিকা করার বিষয়টি আমরা চালু করেছিলাম। আমরা মনে করেছিলাম এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি সুস্থ প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে। তারা আরও ভাল করার চেষ্টা করবে। এখন দেখা যাচ্ছে এই প্রতিযোগিতায় কে উপরে থাকবে সে জন্য একটি অস্বাভাবিক পথ কিংবা অনৈতিক পথ গ্রহণ করার চেষ্টা কেউ কেউ করছেন।’
মন্ত্রী আরও বলেছিলেন, ‘যারা সত্যিকারভাবে ভাল করার চেষ্টা করছেন তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। তাদের উৎসাহিত করার পথটি একবারে বন্ধ করে দিচ্ছি না। আপনারা ভাল ফল করুন। আমরা এর স্বীকৃতি দিতে নিশ্চয়ই কোন না কোন পথ বের করবো।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, সেরা তালিকা করা হলে সমতা ও আন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা নিশ্চিত করা যাবে না। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানের উন্নতির জন্য কাজ করতে হবে।


শেয়ার করুন