এক দশকেই কর্মক্ষেত্রে নারী হবে সংখ্যায় পুরুষের সমান

Women-400x224সিটিএন ডেস্ক:

বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের অগ্রগতির প্রশংসা করে শুক্রবার বক্তব্য দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। তিনি বাংলাদেশকে একটি অনুপম উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পেরুর রাজধানী লিমাতে বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের বার্ষিক সভায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো দেশগুলো কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করছে। যদি তারা (বাংলাদেশ) এ ধারা অব্যহত রাখতে পারে তবে আগামি দশকের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ৩৪ থেকে ৮২ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। যা তাদের জিডিপিতে ১.৮ ভাগ প্রবৃদ্ধি নিয়ে আসতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন গবেষণা থেকেও দেখা যায়, নারীরা যখন বেশি টাকা উপার্জন করবে তারা তাদের পরিবারের শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতে তা ব্যয় করবে।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ শ্রমশক্তি জরিপ ২০১০ অনুসারে, বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রে ৮২.৫ শতাংশ পুরুষের তুলনায় নারীদের অংশগ্রহণ ৩৬ শতাংশ। এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশে সর্বোচ্চ গড়ে ৩৫ শতাংশ নারী কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের অবস্থান ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে। ভারতে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ ২৭ শতাংশ এবং পাকিস্তানে ২৫ শতাংশ। তবে কর্মক্ষেত্রে সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ করে নেপালের নারীরা। তাদের অংশগ্রহণ ৮০ শতাংশ।
জরিপ অনুসারে, নারী ক্ষমতায়নের আরেকটি উদাহরণ হচ্ছে সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে নারী সাংসদদের সংখ্যা তৃতীয় অবস্থানে।
বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বেশি গ্রামীণ কৃষি এলাকাগুলোতে এবং গার্মেন্টসের মতো নির্দিষ্ট কিছু খাতে।
সাম্প্রতিক সময়ে এসব উন্নতি সত্ত্বেও শ্রমবাজারে এখনও রয়েছে লিঙ্গ বৈষম্য বলেও মনে করে বিশ্বব্যাংক।
দেশের কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ায় প্রায় দশকব্যাপী চলমান ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থেকে উত্তরণের একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব কমানোর মাধ্যমে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো সম্ভব।
এক বছরে বাংলাদেশে কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের অংশগ্রহণ বেড়েছে ২.৫ মিলিয়ন এবং আগামী এক দশকের মধ্যে এটা পুরুষদের সমান হয়ে যাবে।
বিশ্বব্যাংকের ভাষ্যমতে, এটা প্রতিবছর বাংলাদেশের জিডিপিতে ১.৮ ভাগ অবদান রাখবে। এতে বাংলাদেশের জিডিপি বেড়ে হবে ৭.৫ শতাংশ।
আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্যেও নারীদের অংশগ্রহণ দরকার বলেও মনে করে বিশ্বব্যাংক।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘পুরুষদের জন্য নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টির পাশাপাশি আমাদেরকে নারীদের জন্যও প্রচুর কর্মের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, নারীদেরকে কাজে অংশগ্রহণে বাধা দেয় কিংবা ব্যবসায়ী ক্ষেত্র থেকে দূরে সরিয়ে রাখে এমন প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের সভায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সফলতা নারীদের কর্মক্ষেত্রে অংশগ্রহণের কারণেই সম্ভব হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আতিউর রহমান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের এ ধরনের বৈশ্বিক স্বীকৃতিতে আমরা গর্বিত। নারীর ক্ষমতায়ন বাংলাদেশকে একটি বড় ধরনের উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে।’


শেয়ার করুন