উন্নয়ন প্রকল্প নেই বিশেষ বরাদ্দও নেই, হতাশ এমপিরা!

আমাদের সময়.কম : 
সরকারের সোয়া বছরেও স্থানীয় উন্নয়নে কোনো প্রকল্প গ্রহণ না করায় সংসদ সদস্যরা হতাশ। এই সময়ের মধ্যে স্থানীয় উন্নয়নে তেমন কোনো দায়িত্ব পালন করতে না পারায় প্রায় সবাই ‘প্রতিশ্র“তি খেলাপি’তে পরিণত হয়েছেন। এ প্রতিবেদকদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেছেন, কাঙ্খিত উন্নয়ন করতে না পারলে আগামী নির্বাচনে ভোটারদের কাছে যাওয়াটাই কঠিন হয়ে পড়বে।
সাধারণত প্রতিটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর স্থানীয় পর্যায়ের অবকাঠামো ব্রিজ, কালভার্ট ও সড়ক উন্নয়নে সরকার বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে থাকে। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর গঠিত সংসদের সদস্যদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। যার মাধ্যমে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্যের চাহিদার ভিত্তিতে ১৫ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছিল। এর আগে অষ্টম সংসদে আমব্রেলা প্রজেক্টের মাধ্যমে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়েছিল।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে দশম সংসদ গঠিত হওয়ার পর বলা হয়েছিল এবার প্রকল্প বরাদ্দ ৫ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২০ কোটি টাকা করা হবে। কিন্তু সোয়া বছরেও প্রকল্প বাস্তবায়ন তো দূরের কথা প্রকল্পের ডিপিপিই অনুমোদন করা হয়নি। ফলে এ পর্যন্ত কোনো নির্বাচনী এলাকায় ১ টাকারও অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু হয়নি। সংসদ সদস্যরা জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত তারা টিআর-কাবিখা ও নিয়মিত কিছু বরাদ্দ ছাড়া আর কোনো বরাদ্দ পাননি। ফলে স্থানীয় উন্নয়নে তারা কোনো অবদান রাখতে পারছেন না।
এলজিইডি সূত্র জানিয়েছে, জাতীয় সংসদের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের এলাকার উন্নয়নে একটি প্রকল্প গ্রহণের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশন সম্মতি প্রকাশ করেছে। এজন্য সংসদ সদস্যদের কাছ থেকে তাদের স্ব স্ব নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নের জন্য কাক্সিক্ষত সড়ক, ব্রিজ, কালভার্টের নাম নেওয়া হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশন বলছে, যেকোনো প্রকল্পের অনুমোদনের পর এলজিইডি থেকে পরে নতুন নতুন সড়ক ও সেতুর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পরিকল্পনা কমিশন তাদের অনুমোদনের বাইরে কোনো সড়ক-সেতুর উন্নয়ন রোধেই এই কড়াকড়ি আরোপ করেছে।
এলজিইডি সূত্র জানিয়েছে, সংসদ সদস্যরা তাদের অগ্রাধিকারের তালিকা দিতে বিলম্ব করায় প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নে সমস্যা হয়েছে। তবে শিগগিরই প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের জন্য যাবে। এলজিইডি এমন আশ্বসের বাণী শোনালেও বাস্তবতা অনেকটাই ভিন্ন। আগামী জুনের আগে এ প্রকল্প অনুমোদনের সুযোগ খুবই কম। পরিকল্পনা কমিশন বলছে, এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া শুরু হতে আগামী অর্থবছরের আগে কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
জামালপুরের সংসদ সদস্য ফরিদুল হক খান দুলাল বলেছেন, আমরা এলজিইডিতে স্থানীয় উন্নয়নের যে তালিকা দিয়েছি তার একটিও বাস্তবায়ন শুরু হয়নি। অথচ আমরা নির্বাচনী এলাকায় উন্নয়নের অনেক প্রতিশ্র“তি দিয়ে এসেছি। সংসদ সদস্য মহিবুর রহমান মানিক বলেন, এভাবে এলাকায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড করতে না পারলে আগামী নির্বাচনে ভোটারদের কাছে যাওয়াই মুশকিল হবে। প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসা এমএ আউয়াল বলেন, নির্বাচনী এলাকার মানুষ আমাদের কাছে অনেক প্রত্যাশা করে। এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড এখনো শুরু না হওয়ায় আমরা হতাশ।


শেয়ার করুন