উখিয়া হিসাব রক্ষণ অফিসে বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য

042eafc3-1769-4b80-8ade-ed1dc4735f6eশফিক আজাদ, স্টাফ রিপোর্টার

উখিয়া হিসাব রক্ষণ অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্যে কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে সরকারী কর্মকর্তা,কর্মচারীরা। সরকারের ঘোষিত উন্নীত বেতল স্কেলে সরকারী চাকুরীজীবিদের অর্ন্তভূক্ত করার জন্য প্রতি সার্ভিস বইয়ের নিকট থেকে ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা করে আদায় করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সংশ্লিষ্ঠ কর্মকর্তা বললেন, প্রতি সার্ভিস বই থেকে অফিসের খবর অনুযায়ী ৫হাজার টাকা করে আদায় করা হচ্ছে।
সরেজমিন উখিয়া হিসাব রক্ষণ অফিসে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন সরকারী কর্মচারী অফিসের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। এ প্রতিবেদক সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অফিসের ভিতরে প্রবেশ করে হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা সুগত সেবক বড়–য়ার নিকট থেকে তার অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের ব্যাপারে জানতে চানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) এ আমার এক নিকটাত্মীয় সাংবাদিক রয়েছে, সুতারাং আমার বিরুদ্ধে লিখে কোন কাজ হবেনা। আমি আড়াই হাজার টাকা কেন প্রতি সার্ভিস বই থেকে উন্নীত বেতন স্কেলের ব্যাপারে ৫হাজার টাকা করে নিচ্ছি। উখিয়ারও অনেক সাংবাদিক প্রতি সপ্তাহ আমার কাছে আসে। আপনি ও আগামী সপ্তাহে আমার সাথে যোগাযোগ করিয়েন। আর যদি আমার বিরুদ্ধে আপনি পত্রিকায় লিখেন তাহলে আমার কিছু হবেনা পত্রিকা থেকে আপনার চাকুরী যাবে।
অভিযোগ রয়েছে, উখিয়া উপজেলার মনখালী চাকমাপাড়া সরকারী (সদ্য জাতীয়করণকৃত) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছৈয়দ আলম ১৯৮৯সালে বিদ্যালয়ে যোগদান করে। অল্প টাকায় চাকুরী করে পরিবারের খরচ পোষন করতে না পারায় সে ২০০৪সালে মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবে চলে যান। পরবর্তী সরকারী চাকুরীজীবিদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি পেলে ২০০৯সালে দেশে চলে আসে। দীর্ঘকাল বিদেশে টাকা কালীন সময়ে তৎকালীন শিক্ষা অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীর মাধ্যমে উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসার তার সমস্ত বেতন-ভাতা উত্তোলনের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষক ছৈয়দ আলম বলেন, উপজেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের টাকা দিয়ে আমার বেতন-ভাতা উত্তোলন করেছি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল হক বলেন, তখন বেতন-ভাতা কম হওয়ায় এত বেশি কড়াকড়ি ছিলনা। তাই ছৈয়দ আলম বিদেশে থাকা কালীন সময়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন সম্ভব হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পালংখালী ইউনিয়নের এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক অভিযোগ করে জানান, উপজেলার ৭৬টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহ¯্রাধিক শিক্ষক ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিকট থেকে উন্œীত বেতন স্কেলে অর্ন্তভূক্ত করার জন্য ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা করে আদায় করেছে হিসাব রক্ষণ অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তিনি আরো বলেন, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উক্ত অফিসের মাধ্যমে বেতন-ভাতা উত্তোলন করতে হয় বিধায় কেউ তাদের বিরুদ্ধে মূখ খুলতে পারছেনা। এমন কি সমস্ত সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী এই অফিসের কাছে জিম্মি। সচেতন মহলের দাবী উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসের এসব অনিয়ম,দুর্নীতি বন্ধ না হলে ঘুষ বাণিজ্যের আখড়ায় পরিনত হবে এই হিসাব রক্ষণ অফিস।


শেয়ার করুন