উখিয়া বনভূমি দখল করে মার্কেট নির্মান

1শফিক আজাদ, উখিয়া :

উখিয়া উপজেলায় সরকারী বনভুমিতে মার্কেট নির্মান করে রীতিমত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তাছাড়া অস্তিত্বহীন ভূয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দখল পূর্বক বনভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের করে মোটা অংকের অর্থের মাধ্যমে হস্তান্তরের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সামাজিক বনায়নের মূল্যবান বনসম্পদ লুটপাট করে নির্ধারিত বনভূমিতে ব্যক্তিমালিকানাধীন মার্কেট নির্মান করার নেপথ্যে সংশ্লিষ্ট বনবিট কর্মকর্তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
উখিয়া উপজেলা বনরেঞ্জের ৭টি বনবিট ও ১টি পরীক্ষণ ফাঁড়ির আওতায় সাড়ে ১৯ হাজার একর রক্ষিত ও সংরক্ষিত বনভূমি কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে নেই। পরিবেশবাদী সচেতন মহলের মতে সংশি¬ষ্ট বনবিট কর্মকর্তাদের উৎকোচ বাণিজ্যের কারণে লুটপাট হয়ে যাচ্ছে সামাজিক বনায়নের গাছ-গাছালি সহ সরকারি বনভূমি। বেশ কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, হেফজখানা, ক্লাব, সমিতির নাম ভাঙ্গিয়ে বনভূমি দখলের প্রবণতা আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্তমানে সামাজিক বনায়ন প্রকল্প অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। তাছাড়া বনভুমিতে রীতিমত নির্মান করা হয়েছে মার্কেট।
সরেজমিন এ উপজেলার টিএন্ডটি ও হাজেম রাস্তা এলাকা বনভূমি ঘুরে দেখা যায়, বনভুমির জায়গায় প্রকাশ্যে দুটি মার্কেট নির্মান করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। তাছাড়া শত শত ভূয়া অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠানের নাম ভাঙ্গিয়ে বনভূমি জবর দখল করা হয়েছে। স্থানীয় আব্দুস সালাম সহ বেশ কয়েকজন গ্রামবাসী জানান, এলাকার একদল ভূমিদস্যু বিট কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে মার্কেট ২ টি নির্মান সহ সাইনবোর্ড দিয়ে বনভূমি দখল করছে প্রভাবশালী মহল। পরে দখলকৃত বনভূমির শ্রেণি পরিবর্তন সহ ঘেরা বেড়া দিয়ে মোটা অংকের টাকায় দখল বিক্রি করছে।
রাজাপালং ইউনিয়নের লম্বাঘোনা, টিএন্ডটি, মাছকারিয়া, কুতুপালং, দোছরী, হরিণমারা ও মধুর ছড়া এলাকায় এভাবে শত শত একর বনভূমি ও সামাজিক বনায়নের জায়গা দখল হয়ে যাওয়ার ঘটনায় বিগত সময় উখিয়া সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ ইব্রাহিম মিয়া, সদর বনবিট কর্মকর্তা মোজাম্মেল হককে প্রত্যাহার করা হলেও থামেনি বনভূমি জবর দখল প্রবণতা। থাইংখালী বনবিটের আওতাধীন ২০১১ সালের সামাজিক বনায়নে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে নিয়োগকৃত সুফলভোগী সদস্য মুজিবুর রহমান, হাবিবুর রহমান, নুরুল হক, আজিজুল হক ও ঝুলু সহ একাধিক লোকজন অভিযোগ করে জানান, থাইংখালী বিট কর্মকর্তা আব্দুল মান্নানের নির্দেশে সামাজিক বনায়নের গাছ-গাছালি লুটপাট করা হচ্ছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, বনভূমির দখল প্রবণতা চলে আসছে দীর্ঘ দিন থেকে। এরই ধারাবাহিকতায় সামাজিক বনায়নের গাছ লুটপাট ও জায়গা দখল, বেদখলের বিষয়টি এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এদিকে এ উপজেলা বৃহত্তম বন সমৃদ্ধ এলাকা উখিয়ার ঘাট বালুখালী বিটের আওতায় সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু ও কাঠচোর সন্ত্রাসীদের অসহনীয় দৌরাত্মা বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনায় সামাজিক বনায়নের অংশীদার সুফলভোগীর সদস্যরা জিম্মি হয়ে পড়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ মনিরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের অসহযোগিতা মুলক মনোভাবের কারনে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ প্রত্রিুয়া বাধাগ্রস্থ। তাছাড়া লোকবল সংকটতো রয়েছে। তবুও আমরা সাধ্যের মধ্যে চেষ্টা করে যাচ্ছি।


শেয়ার করুন