উখিয়ায় থামছেনা পাহাড় কাটা, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংখা

1স্টাফ রিপোর্টার, উখিয়া

উখিয়া উপজেলার সর্বত্র পাহাড় কেটে মাটি বাণিজ্য উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। পাহাড় কেটে বসতবাড়ী তৈরী, অপরিকল্পিত সড়ক, উপ-সড়ক নির্মাণ ও সনাতনি পদ্ধতির অনুমোদনে ইটভাটা স্থাপন করার ফলে পাহাড় ধ্বস, ভূমিক্ষয়, পাহাড় কাটা ও বন উজাড় করার মধ্যদিয়ে একদিকে প্রাকৃতিক বৈশিষ্ঠ নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে প্রতি বর্ষা মৌসুমে পাহাড় ধ্বসে প্রাণহানির ঘটনাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাহাড় কর্তন প্রতিরোধে পরিবেশ আইন বিদ্যমান থাকলেও তা এখানে কার্যকর না হওয়ায় পাহাড় কাটা অপ্রতিরোদ্ধ হয়ে উঠেছে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।
জানা গেছে, এ উপজেলার এক-তৃতীয়াংশ পরিবারের ১/২জন করে সদস্য মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছে। এসব প্রবাসীদের পাঠানো টাকায় পারিবারিক ভাবে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে অধিকাংশ পরিবারে। তারা নতুন করে বাড়ী ঘর নির্মাণ করতে গিয়ে অবকাঠামো ভরাট কাজে মাটির দুষপ্রাপ্যতার অভাবে স্থানীয় বনকর্মীদের ম্যানেজ করে সংরক্ষিত বনভূমির পাহাড় কেটে মাটির চাহিদা পুরন করছে। তাছাড়া বর্তমান সরকারের বিগত ৬ বছরে এ উপজেলার ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজে প্রচুর পরিমান অবৈধ মাটি ব্যবহৃত হচ্ছে। পাশাপাশি সনাতনি প্রদ্ধতির অনুমোদনে এ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিষ্ঠিত ইটভাটা গুলোতে প্রচুর পরিমান মাটি সরবরাহ করছে স্থানীয় কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী। এতে সরকারী বনাঞ্চল, ব্যক্তিমালিকাধীন ও খাস খতিয়ানভূক্ত পাহাড় কেটে মাটি পাচার করা হচ্ছে নির্বিচারে। এসব মাটি কাটা, পরিবহন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ঠ বনবিভাগের কিছু কিছু অসাধূ কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত রয়েছে নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে। সরজমিন থাইংখালী,পালংখালী,কুতুপালং মরিচ্যা পাগলির বিল,হলদিয়া থিমছড়ি,পাতাবাড়ী,ধোয়াপালং, খুনিয়া পালং, রাজাপালং ইউনিয়নের মধূরছড়া,দুছড়ি,হাঙ্গরঘোনা ও এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পাহাড় কেটে মাটি পাচারের দৃশ্য। মাটি পরিবহনে নিয়োজিত ডাম্পার চালক নুর আলম জানান, প্রতি গাড়ী মাটি নির্ধারিত স্থানে পৌছে দেওয়ার পরিবর্তে গাড়ী প্রতি ১ হাজার টাকা করে পেয়ে থাকেন। সে বেশির ভাগ মাটি বন বিভাগের পাহাড় কর্তন করে সংগ্রহ করা হয় বলে জানান। মাটি বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাইংখালী এলাকার শফি আলম জানান, পাহাড় কেটে মাটি সরবরাহ দেওয়ার জন্য বনকর্মীদের গাড়ী প্রতি ২শত টাকা দিতে হয়। তাছাড়া মাঝে বিভিন্ন প্রশাসনের লোকজন আসলে তাদেরকে ম্যানেজ করতে হয়। সংগ্রহকৃত মাটি বিভিন্ন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত ইটভাটাগুলোতে সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে বলে ও সে অভিমত প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে উখিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পাহাড় কাটা ও অবৈধ বালি উত্তোলনের ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে এ অঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা প্লাবিত হয়ে শতশত পরিবারকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এবং পাহাড় ধ্বসে প্রাণ হানির ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে । এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মাঈন উদ্দিন জানান, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে পাহাড় কর্তন, অবৈধ বালি উত্তোলন সহ বন সম্পদ ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য বনবিভাগসহ পুলিশ প্রশাসনকে অভিহিত করা হয়েছে।


শেয়ার করুন