ঈদের ছুটিতে পর্যটকে মুখরিত বান্দরবান

ASSWWRরিপন চক্র বর্ত্তী, বান্দরবান।

ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের আগমনে মুখরিত হয়ে ওঠেছে প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের লীলাভূমি পাহড়ি কন্যা বান্দরবান। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পর্যটকরা ছুটে এসেছেন পাহাড়, ঝিরিঝর্ণা আর সবুজ শ্যামল প্রকৃতির টানে। বান্দরবানের নয়নাবিরাম বিস্তৃত পাকৃতিক সৌন্দয দেখে মুগ্ধ পযটকরা।ঈদের ছুটিতে রোববার দেশি-বিদেশি পযটকদের পদচাণায় এভাবেই মুখরিত হয়ে ওঠে সবুজে ঘেরা বান্দরবান।ঢাকা থেকে ঈদের ছুটিতে বান্দরবান দেখতে আসা মোঃ রানা ও রাজীব চক্র বত্তী জানায়, অসাধারন বান্দরবান! চারিদিকি সবুজ আর সবুজ। মন চায় এখানে খেকে যায়। হোটেল মালিক সমিতির নেতারা জানান, থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য ঈদের আগে থেকেই হোটেল-মোটেলগুলো বুক করে রেখেছেন পযটকরা। প্রতি বছর ঈদ মওসুমে বান্দরবানে হাজার হাজার পযটকের আগমন ঘটে।বান্দরবানের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান জানান, পযটকদের নিরাপত্তার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে অতিরিক্ত চেকপোস্ট।

পর্যটনের অফুরন্ত সম্ভাবনাময় প্রাকৃতিক সৌন্দয্যের লীলাভূমি বান্দরবানে রয়েছে অসংখ্য পযটনকেন্দ্র। এ জেলায় রয়েছে দেশের সবো্চ্চ পবতশৃঙ্গ বিজয়, দ্বিতীয় সবোচ্চ পবতশৃঙ্গ কেউক্রাডংসহ অসংখ্য পাহাড়। রয়েছে বাংলার দার্জিলিংখ্যাত চিম্বুক, নীলগিরি। যেখানে অনায়াসে মেঘের ছোঁয়া পাওয়া যায়। এছাড়াও রিঝুক ঝর্ণা নিজস্ব গতিতে সব মওসুমেই থাকে সচল।এছাড়া জেলা সদরে রয়েছে মেঘলা, নীলাচল, প্রান্তিকলেক, স্বর্ণ জাদি (লোকমুখে স্বর্ণ মন্দির হিসেবে পরিচিত) না দেখলে সৌন্দয দেখা অপূর্ণ থেকে যাবে বলে মনে করেন অনেকে।নীলাচলে দাঁড়ালে পাহাড় আর আকাশের মিতালী, দূরে সবুজ বন কিংবা চট্টগ্রাম সমুদ্র সৈকতের সৌন্দয আবছা আবছা উপভোগ করা যায়। পাহাড় থেকে শহরের সৌন্দয বিমোহিত করে পযটকদের।

বৌদ্ধ ধাতু জাদি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের তীর্থ স্থান হলেও পাহাড়ের ওপর সুন্দর কারুকায ও স্বর্ণাভরণে তৈরি হওয়ায় এটিও পযটকদের কাছে আকর্ষণীয় স্পট হিসেবে প্রাধান্য পেয়েছে।বান্দরবান চিম্বুক সড়কের পাঁচ কিলোমিটার এলাকায় রয়েছে শৈলপ্রপাত ঝর্ণা। বান্দরবান-থানচি সড়কের ২৫ কিলোমিটার দূরে রয়েছে চিম্বুক পাহাড়। একই সড়কের ৫০কিলোমিটার দূরে গড়ে ওঠেছে বাংলার দার্জিলিংখ্যাত নীলগিরি। সেনাবাহিনী পরিচালিত নীলগিরিতে দাঁড়ালে পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া সাঙ্গু নদীর অপরুপ সৌন্দয উপভোগ করা যায়।বান্দরবানের রুমা উপজেলায় রয়েছে দেশের সবোচ্চ পবতশৃঙ্গ বিজয়। এটি তাজিংডং নামেই পরিচিত। রুমা উপজেলা থেকে ৩০ কিলোমিটার পাহাড়ি রাস্তা অতিক্রম করে যেতে হয় তাজিংডংয়ে। পাশেই রয়েছে দেশের দ্বিতীয় পবতচূড়া কেউক্রাডং।

এছাড়া একই সড়কে ১৭ কিলোমিটার গেলে দেখা যায় কিংবদন্তী বগালেক। এটি পযটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।এছাড়াও এই জেলায় মারমা, ত্রিপুরা, মুরুং, বম, তঞ্চঙ্গ্যা, খুমি, খেয়াং, পাংখোয়া, চাকমা, চাক, লুসাইসহ ১২টি আদিবাসী সম্প্রদায় বসবাস করে। দেশের অন্য কোনো জেলায় এতো আদিবাসীর বসতি আর নেই। আদিবাসীদের বৈচিত্রময় জীবনচিত্র মানুষের মনকে উৎফুল্ল করে তোলে।পাহাড়ের পর পাহাড়, দিগন্তজোড়া আকাশের সঙ্গে মিশে সৃষ্টি হয়েছে পাহাড়ি সমুদ্রের। বান্দরবানে যেদিকে চোখ যায় দেখা মিলবে এ পাহাড়ি সমুদ্রের। তাই বান্দরবানের প্রকৃতির সৌন্দয্য উপভোগ করতে প্রতি বছর ঈদ বা পযটন মওসুমে পযটকদের ভিড় পড়ে যায়। আর বান্দরবানের প্রকৃতির সাথে পযটকের মেলবন্ধনে বান্দরবান হয়ে ওঠে অপরুপা বান্দরবান।


শেয়ার করুন