ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল

BNP Eidghon PICTURE 12.10.2015 (01)বার্তা পরিবেশক :
বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার সদর-রামু আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল বলেছেন, গণতন্ত্র থাকলে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়। আর গণতন্ত্র না থাকলে রক্তের মাধ্যমে সরকারের পতন হয়। তবে এমন পরিস্থিতি আমরা চাই না।
তিনি মনে করেন, ‘আমাদের হয়তো আরও সাড়ে তিন বছর নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। নির্বাচন হলেই আমরা নিরংকুশ ভাবে ফিরে আসবো। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিদায় হলে তারা আর কখনোই ফিরে আসতে পারবে না।’
তিনি সোমবার বিকালে ঈদগাঁও স্টেশনে এক কমিউনিটি সেন্টারে ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, অনেকেই বলেন বিএনপি বেকায়দায় আছে। আসলে এখন সবচেয়ে বেকায়দায় আছে আওয়ামী লীগ। তারা মগঢালে উঠে বসে আছে। এখন নামতেও পারছে না, আবার থাকতেও পারছে না!
সাবেক এই সাংসদ দাবি করেন, যারা আওয়ামী লীগ করেন তাদের ৫০ ভাগেরই কোন কাজ নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসলে এসকল নেতা-কর্মীরা দুর্ভিক্ষ হয়ে মারা যেতেন।
তাঁর মতে, বিএনপি রাজনীতি করে জনগণের জন্য। শহীদ জিয়া ক্ষমতায় আসার পর গণতন্ত্র এসেছিল, এসেছিল সংবাদপত্রের স্বাধীনতা।
তিনি তাঁর বক্তব্যে ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির ৫ জন উপদেষ্টার নাম ঘোষণা করেন। এই উপদেষ্টারা হলেন ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম মমতাজুল ইসলাম, অধ্যাপক আবু তাহের, সাবেক আহবায়ক এডভোকেট শাহাব উদ্দিন, ফরিদুল আলম ও জালালাবাদের মমতাজ আহমদ মেম্বার।
লুৎফুর রহমান কাজল কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে নতুন কমিটি নেতা নির্বাচনের জন্য এই ৫ উপদেষ্টার উপর দায়িত্ব দেন।
এই সম্মেলন ও কাউন্সিল উদ্বোধন করেন জেলা বিএনপির সভাপতি ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ শাহজাহান চৌধুরী।
শাহজাহান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার এমন ফ্যাসিবাদী হয়ে গেছে যে গণতন্ত্রের লেবাস পর্যন্ত তারা রাখেনি। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন তারা কবর দিয়ে দিয়েছে।
তাঁর মতে, দেশে এখন ইয়াজুজ-মাজুজের ক্ষমতা চলছে। তারা তো রক্তচোষা, তারা যা পাবে তাই খাবে।
শাহজাহান চৌধুরী মনে করেন, দেশে এখন কোন মানুষ মারা গেলে সেখানেও বিএনপির নাম জড়ানো হয়। ‘বিকাশ’ এমপিরা এখন জনগণের কথা চিন্তা করে না। তারা কেবল খাওয়ার তালে আছে।
বর্তমান সরকার নির্বাচন দিয়ে তাদের উন্নয়ন ও ভালোবাসার পরীক্ষা নিতে পারেন বলেও মন্তব্য করেন। তাঁর মতে, ১০০ বছর পরে নির্বাচন হলেও বিএনপিই ক্ষমতায় আসবে।
ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির আহবায়ক শহিদুর রহমান শহিদের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত এই সম্মেলন সঞ্চালনা ও বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব শওকত আলম এবং তিন যুগ্ম আহবায়ক মনজুর আলম, মোহাম্মদ শফি ও সেলিম মাহমুদ।
এছাড়াও সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হয়ে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার পৌর বিএনপির সভাপতি রফিকুল হুদা চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ মোহাম্মদ আলী, জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক ইউসুফ বদরী, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এম মমতাজুল ইসলাম, বিএনপি নেতা অধ্যাপক আবু তাহের, রামু উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসএম ফেরদৌস, সাধারণ সম্পাদক গোলাম মওলা, সদর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুল মাবুদ ও সদস্য সচিব গিয়াস উদ্দিন জিকু চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মুজিবুল হক মিয়াজী। এছাড়াও আন্তর্জাতিক সংগঠন ডেমোক্রেসী ইন্টারন্যাশনালের আঞ্চলিক কর্মসূচি কর্মকর্তা সদরুল আমিনও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও বক্তব্য রাখেন ঈদগাঁও সাংগঠনিক মহিলা দলের আহবায়ক পারভিন আকতার, ঈদগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আবদুস সালাম, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন সভাপতি সানা উল্লাহ, জালালাবাদ ইউনিয়ন সভাপতি বজল আহমদ, পোকখালী ইউনিয়ন সভাপতি আকতার কামাল প্রমূখ।
ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব শওকত আলম জানান, এবারের সম্মেলন ও কাউন্সিলে ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলাভূক্ত ৫ ইউনিয়নের ৩৫৫ জন কাউন্সিলর অংশ নেন। এতে মহিলা কাউন্সিলর ছিলেন ৭৫ জন।
তিনি জানান, ১০১ সদস্য বিশিষ্ট নতুন কমিটিতে ১৫ শতাংশ নারী নেত্রী ও কর্মী রাখা হবে।
উল্লেখ্য, এবারও ডেমোক্রেসী ইন্টারন্যাশনাল বিএনপির এই সম্মেলন ও কাউন্সিলে কারিগরী সহায়তা দিয়েছে।


শেয়ার করুন