ঈদগাঁও বাজারে যত্রতত্র গাড়ী পার্কিং, পণ্য খালাস

Pic of janjotনুরুল আমিন হেলালী:
সদর উপজেলার বৃহত্তম বাণিজ্যিক নগরী ঈদগাঁও বাজারে যথাযথ তদারকি, ট্রাফিক ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক নজরদারী না থাকার কারণে দীর্ঘদিন ধরে প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে প্রতিটি অলিতে-গলিতে চলছে নৈরাজ্যকর অব্যবস্থাপনা। ঈদগাঁও বাজারের পরিধি সময়ের সাথে সাথে হু হু করে বাড়ছে, পণ্য পরিবহন, ব্যবসায়ী কার্যক্রম, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। ক্রমবর্ধমান চাহিদাকে যোগানের সমন্বয় করতে বেড়ে যাচ্ছে অনিয়ম, বিশৃঙ্খলা ও অব্যবস্থাপনা সহ নানা প্রকার সামাজিক অসংগতি। সরেজমিনে ঈদগাঁও বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, জনদূর্ভোগে নাকাল সাধারণ ভোক্তা, ক্রেতা-বিক্রেতা ও ব্যবসায়ী সহ হতাশ হয়ে পড়া ঈদগাঁও বাজার নির্ভর পরিবারসমূহের কর্তাব্যক্তিরা। অনিয়মের রাজ্যে যেনো অনিয়মই নিয়ম, নিয়মই অনিয়ম এমনটাই অভিমত বাজার নির্ভর সর্বশ্রেণির জন সাধারণের। প্রায় ২ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত ঈদগাঁও বাজারের প্রধান সড়ক থেকে শুরু করে প্রধান উপসড়কসমূহ, সংযোগ সড়ক অলিগলি সবখানেই ফুটপাত দখল করে রেখেছে বড় বড় দোকানের সানশেড, পণ্যপসরা, ভাসমান হকার, মৌসূমী ফল বিক্রেতা, কবিরাজী ঔষুধ বিক্রেতা, নির্মাণ সামগ্রী বিক্রয় প্রতিষ্ঠান রড সিমেন্ট ও হার্ডওয়ার সামগ্রী। ফুটপাত দৃশ্যমান থাকলেও ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। ফলে বাজারমুখি ক্রেতা-বিক্রেতা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীসহ সাধারণ জনগণের দূর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
অনুসন্ধ্যানে জানা যায়, বাজারের গুরুত্বপূর্ণ ও জনবহুল পয়েন্ট ঈদগাঁও বাসষ্টেশন, ডিসি রোড, নিউ মার্কেট, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ এলাকা, জালালাবাদ স্বাস্থ্য কেন্দ্র, ঈদগাঁও মেডিকেল সেন্টারের পার্শ্ববর্তী এলাকার চৌফলদন্ডী জীপ ষ্টেশন, বঙ্কিম বাজার, বাঁশঘাটা রোড, শহীদ মিনার এলাকা, চাউল বাজার, তরকারী বাজার, মাছ বাজার, বস্ত্রবিপনী, মরিচ বাজার, সুপারির বাজার, হাজী মার্কেট, বেদার শপিং কমপ্লেক্স এলাকা, জুয়েলারী পল্লীসহ সবখানেই নৈরাজ্যকর অবস্থা। ঈদগাঁও বাজারের সবচেয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম ডিসি রোডে অবস্থিত পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ১০০ গজ দূরত্বের মধ্যে দেখা যায়, রাস্তার উপর স্তুপীকৃত অবস্থায় পড়ে আছে ময়লা আবর্জনা। ফলে একদিকে যেমন যান চলাচল বিঘিœত হচ্ছে তেমনি বিঘিœত হচ্ছে পথচারী চলাচল ও পরিবেশ দূষণ। প্রতিনিয়ত সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। ঈদগাঁও বাসষ্টেশনের আরকান সড়ক এবং ডিসি রোড়ের সংযোগস্থলে যাত্রী ছাউনী ও দুরপল্ল¬ার বাস কাউন্টারগুলোর অবস্থান হওয়ার কারণে ওই স্থানে যাত্রী উঠানামা করাতে গিয়ে বাসগুলো থামালে বন্ধ হয়ে যায় ডিসি রোডের যান চলাচল। ফলে আরেকান রোডের দু’দিকে এবং ডিসি রোডগামীর যানসমূহের মধ্যে লেগে যায় দীর্ঘ যানজট। নিউ মার্কেট এলাকায় নির্মিতব্য বহুতলবিশিষ্ট অত্যাধুনিক কবিরাজ সিটি সেন্টারের সিড়ি রাস্তার উপর হওয়ায় পথচারী, স্কুলগামী শিক্ষার্থীসহ সর্বসাধারণের পায়ে চলার পথ কার্যত বন্ধ হয়ে পড়েছে। নিরুপায় পথচারী ফুটপাতের পরিবর্তে ব্যবহার করছে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যভাগ। যে কারণে যান চলাচল যেমন বিঘিœত হচ্ছে তেমনি ঘটছে মারাত্মক দূর্ঘটনাও। অবৈধদখল এবং অব্যবস্থাপনার একই চিত্র ঈদগাঁও বাজারের সবখানেই। এ ছাড়া সিএনজি চালিত অটোরিক্সা, ব্যাটারী চালিত ইজিবাইক (টমটম), যাত্রীবাহীজীপ ও রিক্সার জন্য কোথাও কোন পার্কিং না থাকায় যত্রতত্র পার্কিয়েংর ফলে বাড়ছে জনদূর্ভোগ। এছাড়াও পণ্যপরিবহন ও পণ্যখালাসের জন্য কোন সুনির্দিষ্ট নিয়ম কানুন ও সময়সূচী না থাকার কারণে পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক, কাভার্ড ভ্যন, বাজারে ঢুকে পুরো রাস্তায় দখল করে। পণ্যখালাস করে ওই সকল যানবাহন স্থান ত্যাগ না করা পর্যন্ত দীর্ঘসময় ধরে সৃষ্টি হয় যানজট। জানা যায়, আশংকাজনক হারে নতুন নতুন অবৈধ টমটম, অটোরিক্সা, সিএনজি, প্রতিদিন রাস্তায় নামছে। এ সকল যানবাহনের কোনপ্রকার সংবিধিবদ্ধ অনুমোদন নাই। অনেকক্ষেত্রে দেখা যায়, বেশিরভাগ অটোরিক্সা ও টমটম চালক ১৮ বছরের কমবয়সী শিশু। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব অনুমোদনহীন যানবাহন চলাচল করলেও নেই কোন নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা। অন্যদিকে ফুটপাত বেদখলের ফলে প্রতিদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতকারী শিক্ষার্থীদের পোহাতে হচ্ছে নানা দূর্ভোগ ঝুঁকি। এছাড়া ঈদগাহ কলেজ গেইট থেকে শুরু করে বাসষ্টেশন পর্যন্ত আরাকান সড়কের উভয় পাশে ফুটপাত দখল করে গড়ে উঠেছে শতাধিক গাড়ী মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান। পায়ের চলাচলের কোন পথ নেই বললে চলে। ঈদগাঁও বাজার এবং তৎসংশি¬ষ্ট এলাকার পরিবহণ ব্যবস্থা যানজট নিরসন ও পথচারী পারাপার নির্বিঘœ করতে অচিরেই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকার সচেতন সাধারণ জনগণ।


শেয়ার করুন