ইভটিজিং ঠেকাতে এবার আসছে ‘ইলেক্ট্রো শু’!

175172_1নিউজ ডেস্ক :

বছর সতেরোর সিদ্ধার্থের মনে নির্ভয়া কাণ্ড গভীরভাবে রেখাপাত করে গিয়েছিল। প্রতিনিয়ত মহিলাদের ওপর অত্যাচার, রাস্তাঘাটে ইভটিজিং আর ধর্ষণের ঘটনা আর কোনোভাবে সহ্য হচ্ছিল না তার। ধর্ষণ কীভাবে বন্ধ করা যায়? কী হতে পারে মহিলাদের আত্মরক্ষার হাতিয়ার? মাথায় সর্বক্ষণ এ ভাবনা ঘুরপাক খেত। আর সেই ভাবনা থেকেই এক বিশেষ ধরনের জুতা তৈরি করে ফেললেন তেলঙ্গানার সিদ্ধার্থ।

তার দাবি, এই জুতা মহিলাদের আত্মরক্ষার জন্য বড় হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। নাম ‘ইলেক্ট্রো শু’।

কীভাবে কাজ করবে এ অভিনব জুতা?

সিদ্ধার্থ জানিয়েছেন, এই জুতার পেছনে রয়েছে স্কুলে পড়া পদার্থবিদ্যা এবং কিছু বেসিক কোডিং-এর জাদু। জুতাতে রয়েছে একটি বিশেষ ধরনের সার্কিট বোর্ড। যেখানে থাকছে রিচার্জেবল ব্যাটারি। হাঁটার ওপর নির্ভর করবে এর চার্জিং প্রক্রিয়া। অর্থাৎ এই জুতা পরে যত বেশি হাঁটা হবে, তত বেশি চার্জ থাকবে ব্যাটারিতে। বৈজ্ঞানিক পরিভাষায় একে বলে ‘পিয়েজোইলেক্ট্রিক এফেক্ট’।

কেউ আক্রমণ করতে এলে জুতা পরা পা’টি শুধু আক্রমণকারীর শরীরে স্পর্শ করাতে হবে। আর সঙ্গে সঙ্গেই আক্রমণকারীর শরীরে ছড়িয়ে পড়বে ০.১ এএমপি তড়িৎ প্রবাহ। বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে যাবেন আক্রমণকারী। সঙ্গে সঙ্গেই খবর পৌঁছে যাবে কাছাকাছি থানা এবং আক্রান্তের পরিবারের কাছে।

দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সিদ্ধার্থ এরই মধ্যে এই জুতার নকশার স্বত্বের জন্য আবেদন করে ফেলেছেন। তবে বাজারে ছাড়ার আগে এই জুতা কতটা টেকসই হবে তা তিনি যাচাই করে নিতে চায়৷ এরই মধ্যে অনেকগুলো জুতা প্রস্তুতকারী সংস্থার সঙ্গে কথা বলতেও শুরু করেছেন তিনি। জুতাটিকে আকর্ষণীয় করতে তুলতে প্রয়োজনে নকশায় অদল-বদল করতেও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন সিদ্ধার্থ।

সিদ্ধার্থ মান্ডালা তেলেঙ্গানার একজন উদীয়মান কারিগরি উদ্যোক্তাও৷ ২০১২ সালে নির্ভয়া-কাণ্ড আর পাঁচজন ভারতীয়ের মতো তাকেও নাড়িয়ে দিয়েছিল৷ তখনই তিনি ঠিক করে ফেলেন, মহিলাদের আত্মরক্ষার জন্য অভিনব কোনো যন্ত্র তৈরি করবেন৷ সেই ভাবনারই ফলশ্রুতি এই ‘ইলেক্ট্রো-শ্যু’৷ সিদ্ধার্থ মান্ডালা জানিয়েছেন, এক বিশেষ ধরনের সার্কিট বোর্ড দিয়ে এই জুতা তৈরি করা হয়েছে৷ পায়ের চাপেই এই ‘ইলেক্ট্রো-শ্যু’ রিচার্জ হয়ে যাবে৷

তেলেঙ্গানায় এমনিতেই মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনা বাড়ছে৷ ২০১৫ সালে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের নিরিখে সারাদেশের মধ্যে দক্ষিণের এই রাজ্যটি ছিল তিন নম্বরে৷ এই পরিস্থিতিতে সিদ্ধার্থ মান্ডালার তৈরি এই জুতা বাজারে এলে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ অনেকটাই কমানো যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই৷


শেয়ার করুন