আরব আমিরাতে বোরকা পরিহিত প্রথম নারী রক ব্যান্ড দল!

1আরিফ সিকদার বাপ্পী, ইউএই থেকে:

এই মুহূর্তে বদ্ধ আরব দেশে নারীদের মুক্তির সুবাতাস বলে আখ্যায়িত করা যায় যে বিষয়কে সেটি হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রথম নারী ব্যান্ড দল। মধ্যপ্রাচ্য যেখানে মিউজিকএবং প্রকাশ্যে নারীদের চলাফেরা খারাপ চোখে দেখা হয় সেখানেই পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট এই নারী ব্যান্ড দল প্রথম অল আমিরাতি গার্লস রক ব্যান্ড যারা গোটা মধ্যপ্রাচ্য তথা সারা পৃথিবীজুড়ে সাড়া ফেলেছে।

এই ব্যান্ড এর সদস্য মোট পাঁচজন হামদা আল ঘাইতি (লিড গিটারিস্ট) মিউজিকের শিক্ষার্থী,আয়েশা আল কবি(বেজ), আয়েশা আল মাসকারি(ড্রাম), আলমায়েশা আল কবি (কিবোর্ড)এবং বুশরা আল হাশেমি এরা সবাই আল আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। এঁদের মধ্যে কেবল একজনেই সঙ্গীতের উপর পূর্ব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন, বাকীরা নতুন হলেও বাদন শিখে নিয়েছেন।গত এক বছর আগে ব্যান্ড গ্রুপটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং গ্রুপ প্রতিষ্ঠায় সরাসরি সহায়তা করেন তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী শিক্ষিকা জ্যাকি স্মল।

রিদম গিটার বাজানো এই দলের সদস্য বুশরা হাসান (২২) বলেন, রক অ্যান্ড রোল গাওয়া দারুণ ব্যাপার। আমরা প্রথম নারী যারা ব্যান্ড হিসেবে ইলেকট্রনিক গিটার বাজিয়েছি যাআরব আমিরাতে প্রথম।এটি আমাদের ঘরের কাজ এবং কলেজের কাজের চাপ থেকে দূরে রাখে। আমরা মিউজিক বাজাচ্ছি এবং নিজস্ব গান নিয়েও কাজ করছি। আমি সবসময়ই রকঅ্যান্ড রোল খুব ভালোবাসি।

ব্যান্ড দলটি গড়ার ইতিহাস সম্পর্কে জ্যাকি স্মল বলেন,আমি যেখানেই যাই সবসময়ই একটি ব্যান্ড দল তৈরি করি। যুক্তরাজ্যেও আমি একই কাজ করেছি।যখন আরব আমিরাতে আমিতাদের শেখাতে শুরু করি তখন ভেবেছি একটা মিউজিক ক্লাব খুলব কিন্তু এখানে আগে থেকেই একটি মিউজিক ক্লাব ছিলো।তাই আমি একটি গিটার ক্লাব খোলার সিদ্ধান্ত নিলাম এবংকিছু আগ্রহী মানুষও পেয়ে গেলাম। আমি একটি ড্রাম কিট, বেস কিনে ফেলি এবং তাদের বাজানো শিখাই।

লিড গিটারিস্ট হামিদা বলেন, ‘আমি গত দুবছর থেকে পিয়ানো এবং গিটার বাজাই।আমার যখন মিসেস স্মলের সঙ্গে দেখা হলো তিনি আমাকে জানালেন যে মেয়েরা একটি ব্যান্ড দলকরতে আগ্রহী। শুরু তে আমি রক মিউজিকটা পছন্দ করতাম না কারণ তখন ক্লাসিকাল গিটার শিখতাম। কিন্তু এখন আমি রক গিটারকেই প্রাধাণ্য দেই। আশা করছি পড়াশোনা শেষকরে আমি মিউজিক ও ক্লাসিকাল পিয়ানো বিষয়ে আরো পড়াশুনা করবো।

ব্যান্ড দলটি ‘স্মোক অন দ্য ওয়াটার’, ৬০ এর দশকে জ্যাক জোনসের জনপ্রিয় ‘বেবি আই অ্যাম ইয়োরস’ এর মতো ক্লাসিক গান দ্বারা অনুপ্রাণিত।

ব্যান্ড প্রতিষ্ঠায় নারী সদস্যগণ তাদের পিতা-মাতাদের সমর্থনেই ব্যান্ড প্রতিষ্ঠা করেছেন বলে জানা গেছে।ইতিমধ্যেই এই ব্যান্ড দল আরব আমিরাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং একইসাথে ব্যান্ড দলটি বিভিন্ন কলেজের সমাবর্তন সহ নানা অনুষ্ঠান এমনকি জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানেও পারফর্ম করেছে।

আগামী সেপ্টেম্বরে এই নারী ব্যান্ডটি তাদের নিজস্ব গানের কাজ শুরু করবে,আশা করা যায় তারা তাদের গায়কী এবং মিউজিক দিয়ে মধ্যপ্রাচ্য সহ সারা পৃথিবীতে আলোড়ন তুলতেপারবেন।


শেয়ার করুন