আদম ও হাওয়া (আ.) (ভিডিও)

vlcsnap-2015-08-24-01h43m13s38-400x266সিটিএন ডেস্ক:

নবীদের (সা.) মধ্যে সর্ব প্রথম হজরত আদমের (আ.) নাম কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। হজরত আদম ও হাওয়া (আ.) সম্পর্কে ৬টি সূরায় মোট ৪৫টি আয়াত রয়েছে। সৃষ্টির পর আল্লাহ তায়ালা তাদের জান্নাতে বসবাস করতে দিয়েছিলেন। জান্নাতে বসবাসকালে নিষিদ্ধ গাছের নিকটবর্তী হয়ে নিষিদ্ধ ফল খাওয়ার মাধ্যমে ভুল করার কারণে আল্লাহ তায়ালা তাদের পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন। কোন স্থানে তাদের নামিয়ে দেয়া হয়, তা নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে। প্রসিদ্ধ মতে, আদমকে (আ.) বর্তমান শ্রীলঙ্কা (সিংহল) ও হাওয়াকে (আ.) আরবের জেদ্দায় পাঠানো হয়। এতে তারা পরস্পর যোগাযোগের অভাবে বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করেন। স্বীয় ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী হয়ে আদম (আ.) দীর্ঘ সময় কান্নাকাটি করেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আদম (আ.) এত বেশি কান্না করেছিলেন যে, দুনিয়ার সব লোকের কান্না একত্র করলেও তার সমান হবে না। এভাবে কান্না ও তওবা-এস্তেগফারের পর আল্লাহ তায়ালা তাদের প্রার্থনা কবুল করেছিলেন। প্রথিবীতে পতিত হয়ে হজরত আদম ও বিবি হাওয়া (আ.) নিজেদের কৃতকার্যের জন্য আল্লাহু তায়ালার দরবারে দীর্ঘকাল ধরে অনুতপ্ত হৃদয়ে ক্ষমার জন্য আরাধনা করতে লাগলেন। উভয়ে বলতে লাগল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক। আমরা আমাদের আত্মার ওপর বড় জুলুম করেছি, অতএব আপনি যদি আমদের ক্ষমা না করেন এবং আমাদের প্রতি রহমত প্রদর্শন না করেন, তবে আমরা অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাব।’ (সূরা আল আরাফ : আয়াত ২৩)।

হজরত আদম এবং বিবি হাওয়া (আ.) তাদের ক্রটি মার্জনার জন্য উপরোক্তভাবে আল্লাহর কাছে আবেদন-নিবেদন করেছিলেন। তাই সারা বিশ্বে মুসলমান সম্প্রদায় আজও নামাজান্তে ওই আয়াত পাঠ করে প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন। হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) এ দু’জনের পৃথিবীতে আগমনের পর সর্বপ্রথম আরাফায় তাদের পরিচয় হয়, সেখান থেকে এর নাম হয় আরাফা। আরাফা শব্দের অর্থ চেনা, চিনতে পারা, পরিচয় লাভ করা, জানা, বোঝা ইত্যাদি। হজরত আদম এবং বিবি হাওয়া (আ.) এবার পৃথিবীতে বসবাস করতে লাগলেন। হজরত জিবরাঈলের (আ.) মারফতে তারা গৃহ নির্মাণ, পশুপালন, খাওয়া-খাওয়া, ভ্রমণসহ বিভিন্ন বিষয়ে আস্তে আস্তে শিক্ষাগ্রহণ করতে লাগলেন। তারা পৃথিবীতে একে-অন্যের সাহায্যে জীবনযাপন করতে শুরু করলেন। এভাবে দিন অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে তাদের পৃথিবীতে বসবাসের দিনগুলো জমা হতে লাগল।

তাদের সন্তান-সন্ততি জন্ম হতে লাগল এবং ছেলেমেয়েরা ক্রমেই বড় হতে লাগল। তাদের বংশ বৃদ্ধির জন্য তাদের মধ্যে পরস্পরে ভাই-বোনে বিবাহসিদ্ধ বলে গণ্য হলো। হজরত আদম এবং বিবি হাওয়ার (আ.) দাম্পত্য জীবনে এক সঙ্গে একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান জমজভাবে জন্মগ্রহণ করতে লাগলেন। হজরত আদম (আ.) এ জগতে সহস্র বছর জীবিত ছিলেন।


শেয়ার করুন