আকাশ ছুঁবে ওরা

Merit - Copy-2শাহেদ ইমরান মিজান, সিটিএন:
শাকিল, আরফাত, সাদ্দাম ও শাহাজাহান; ৪ তরুণ। এইচএসসি পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফল জয় করেছে তারা। জয়ের আনন্দ তাদের চোখে-মুখে। এই ঝিলিক ছড়িয়ে পড়ছে যেন ফোরারা হয়ে! মানুষ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি আনন্দিত হয় জয়ে। এই জিনিষটিতো এখন তাদের মুঠোবন্দি; তাই আনন্দের বাঁধতো ভাঙবেই! জীবনের এমন একটি আনন্দঘন মুহূর্তে তারা এভাবে ধরা পড়েছেন এই প্রতিবেদকের কাছে।
কক্সবাজার টাইমস টাইম নেটওয়ার্ক (সিটিএন) এর দেয়া তাৎক্ষণিক সংবধর্ণার মুহূর্তে আলাপে উঠে আসে এই ৪ তরুণের বর্তমান থেকে আর ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়াের নানা কথা। উঠে আসে তাদের একটি স্বপ্নের কথা। সেই সাথে স্বপ্নের পথ ধরে অনাবিল স্বপ্ন রাঙা পৃথিবীতে এগিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ের বাসনা তাদের যেন আলোড়িত করে তুলছিল! তারা প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন পৃথিবীকে এগিয়ে দেয়ার।
মোঃ শাহাজাহান: কক্সবাজার সদর উপজেলার ঈদগাঁওর নূরুল আলম ও নুর আয়েশা দম্পতির সন্তান মোহাম্মদ শাহাজাহান। শাহাজাহান লাভ করেছে জিপিএ ৫। কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে সে এই কৃতিত্ব লাভ করেছে। তার শখ গল্পের বই পড়া। ছেলেটার হয়তো ঠাকুমার ঝুলি ছেড়ে রোমাঞ্চকর গল্পগুলো পড়তে বড়ই ভালো লাগে। এইসব গল্পের পরতে পরতে লেগে আছে জীবন থেকে শ্ক্ষিা নেয়ার কথা। আছে আদব কায়দা, মানবিকতা আর স্বপ্নজয়ের অপূর্ব কথা। যার স্পর্শে এক মহৎ মানুষ রূপে গড়ে মোহাম্মদ শাহাজাহান।
মোঃ শাহাজাহানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা চিকিৎসা বিজ্ঞানে অবদান রাখা। বিশ্বজোড়া খ্যাতিমান চিকিৎসক হয়ে আর্তমানবতার সেবায় অসধারণ অবদান রাখবে সে। একই সাথে তার হাত ধরে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে চিকিৎসা বিজ্ঞান-এই প্রত্যাশাই থাকলো।
শাখাওয়াত হোসেন শাকিল: কক্সবাজার শহরের বার্মিজ স্কুল এলাকার বাসিন্দা হাজী আবু শামা ও আমেনা বেগম দম্পতির সন্তান শাখাওয়াত হোসেন শাকিল। সদ্য ঘোষিত এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ পেয়ে কৃতিত্বে স্বাক্ষর রেখেছে সে। কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে সে এই কৃতিত্ব লাভ করে। তার শখ নাকি নূতন নূতন চশমা পরা! এমন অদ্ভুদ শখের এই ছেলেটির অবয়ব থেকেও ছড়িয়ে পড়ছে যেন অদ্ভুদতার ছায়া। তবে প্রাণচঞ্চলে ছেলেটির ভালা লাগার জগৎ দখল করে আবিষ্কারের নেশা। নূতন নূতন জিনিস আবিষ্কার করা তার খুব ভালো লাগে। তবে পুরনো জিনিস খোঁজে বের করা? নাকি একদম নতুন কিছু সৃষ্টি করা; তার বিস্তারিত ব্যাখ্যায় যাওয়া সম্ভব হয়নি। প্রত্যাশা থাকবে একদম নতুন কিছু আবিষ্কার পৃথিবীকে আরেক ধাপ এগিয়ে দেবে শাকিল। তাহলে তার ভালো লাগা আর ভবিষ্যত পরিকল্পনা সেবা করা; দু’টি মিলে একাকার হয়ে যাবে।
আরফাতুল ইসলাম: কক্সবাজার শহরের পেশকার পাড়াস্থ বড় বাজারের আবদুল ছোবাহন ও নিলু আকতার দম্পাতির সন্তান আরফাতুল ইসলাম। আরফাতও লাভ করেছে জিপিএ ৪। ঢাকার শেখ বোরহান উদ্দিন কলেজ থেকে সে এই কৃতিত্ব লাভ করেছে। তার শখ বই পড়া। এই শখটি একবারে গতানুগতিক হলেও গুরুত্ব্রে দিকে সর্বাগ্রে। কেননা বই-ই মানুষকে পৌঁছে দিতে পারে মনোজগতের সিংহ দুয়ারে! জগতের যে মানুষ গুলো কৃতির স্বাক্ষর রেখে গেছেন তাদের জীবন গড়ায় বইয়ের অবদান সবচেয়ে বেশি। সে ধারা থেকে বলে দেয়া যায় আরফাতও একদিন চূড়ান্ত কৃর্তিমান মানুষ রূপে প্রতিষ্ঠিত হবে বইয়ের বদৌলতে। গান করাও তার আরেকটি শখ। আরফাতুল ইসলামের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাটি সত্যিই আশা জাগানিয়া। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখা। আহা! দেশপ্রেম আর মানব প্রেম না থাকলে কী এমন পরিকল্পনাটি কেউ করতে পারে? লক্ষ্য যদি অটুট থাকে; নিশ্চিত আরফাত তার জায়গায় পৌঁছে যাবে। দেশের তরে; মানুষের তরে।
সাদ্দাম হোসেন: কক্সবাজার শহরের রফিক তালুদকার ও আরেফা বেগম দম্পতি সন্তান সাদ্দাম হোসেন। আরফাত লাভ করেছে জিপিএ ৪.১৭। কক্সবাজার সরকারি কলেজ থেকে সে এই কৃতিত্ব লাভ করে। তার শখ আড্ডা। মনে হয় ছেলেটি খুব আড্ডাবাজ! হোক না আড্ডাবাজ; সেই আড্ডা যদি গঠনমূলক। তাহলে নিশ্চিত সেই আড্ডায় উঠে আসবে জীবন জয়ের কথামালা। তার ভবিষ্যত পরিকল্পনা ব্যবসায়ী হয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়া। হ্যাঁ প্রতিষ্ঠিততো হতে হবেই। সাদ্দাম ব্যবসা জগতের মোঘল হয়ে দেশের উন্নয়নের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। যার ফল পাবে দেশ ও মানুষ এই প্রত্যাশা।
স্বপ্নবান মানুষের খুব একটা সঙ্কট দেখা যায় না। তবে স্বপ্নের পথে দৃঢ় প্রত্যয়ী মানুষের অভাব রয়েছে। সবাই স্বপ্ন দেখে। কিন্তু বাবস্তবায়নে অনেকে ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করে না। শাকিল, শাহাজাহান, আরফাত ও সাদ্দাম; এই ৪ তরুণ তাদের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে দৃঢ়প্রত্যয়ী থাকবে। তবেই একদিন ‘আকাশ ছুঁবে ওরা’।


শেয়ার করুন