অবশেষে গ্রেপ্তার ‘গজদন্তের রাণী’

121981_1সিটিএন ডেস্ক :

তাকে বলা হয় ‘গজদন্তের রাণী’।

তিনি হলেন ৬৬ বছর বয়সি ইয়াং ফেং গ্লান নামক একজন চাইনিজ নারী যিনি আফ্রিকায় অবৈধ বন্যপশু ব্যবসার সাথে জড়িত।

বৃহস্পতিবার কর্মকর্তারা জানান, ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি ৭০০ এরও বেশি হাতির দাঁত আফ্রিকার বাহিরে পাঠাতে সহায়তা করেছেন। কিন্তু পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

বৃহস্পতিবার তানজানিয়ার রাজধানী দারুস-সালামের নিকট পুলিশের একটি দল তাকে ধাওয়া করে এবং আটক করতে সক্ষম হয়।

তানজানিয়ার কর্মকর্তারা বলেন তিনি একটি নামকরা চাইনিজ রেস্টুরেন্টের মালিক। খাটো ও চশমা পরিহিত তাকে দেখলে মনেই হয় না তিনি চোরাকারবারি সাম্রাজ্যের রাণী।

কর্মকর্তারা বলেন, ইয়াং চীনা ও তানজানিয়ান প্রভাবশালীদের সহায়তায় সারাবিশ্বে হাতির দাঁত সরবারহের অবৈধ ব্যবসার মাধ্যমে কোটি কোটি ডলার উপার্জন করেছেন।

হাতির দাঁত পাচারের ফলে তানজানিয়ার বন্যপশু সম্পদের মারাত্নক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। ২০০৯ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে বন্য হাতির সংখ্যা ১,০৯,০৫১ থেকে কমে ৪৩,৩৩০ টিতে এসে দাঁড়িয়েছে।

আমেরিকা ভিত্তিক পরিবেশ সংগঠন এলিফেন্ট অ্যাকশন লীগের পরিচালক আন্দ্রে কস্তা বলেন, ‘হাতি হত্যার মূল হোতা ইয়াং।’

আফ্রিকায় চোরাকারবারিতে চীনের ভূমিকা এখন গোপন নয়। প্রত্যেক বছর চীন বিপুল পরিমাণ হাতির দাঁত অষুধ হিসেবে ব্যবহার করে। ইয়াং মূলত চীনে এসব দাঁত পাচার করতেন।

চীনে বিভিন্ন সংলাপের আলোচক হিসেবে সুপরিচিত ও বিখ্যাত ইয়াং তানজানিয়ার একটি আদালতে বিচারের মুখোমুখি হবেন। তার সংশ্লিষ্টতা প্রমান হলে হাতির দাঁত পাচার নিয়ে মানুষের ধারণাই বদলে যাবে।

তদন্তে জানা যায়, ইয়াং ১৯৭০ সালে তানজানিয়ায় সোয়াহিলি ভাষার অনুবাদক হয়ে একটি চীনা দলের সাথে এসেছিলেন। পরে তিনি পূর্ব আফ্রিকায় চলে যান এবং বেইজিং গ্রেট ওয়াল নামক একটি কোম্পানি গড়ে তোলেন। অল্প সময়েই তিনি নামকরা ব্যবসায়িতে পরিণত হন।

তদন্তে জানা যায়, তিনি চোরকারবারিদের আর্থিক সহায়তা দিতেন এবং তাদের বন্দুক, গোলাবারুদ কিনতে সাহায্য করতেন।

ইয়াং স্থানীয় চোরাকারবারি ও আন্তর্জাতিক বাজারের মধ্যে সংযোগকারী ছিলেন।

তানজানিয়ার গুরুতর অপরাধ তদন্ত দল তাকে এক বছর আগে চিহ্নিত করে।

তারা বলেন দারুস সালামে তার রেস্টুরেন্টের ব্যবসার আড়ালেই চোরাচালান সংক্রান্ত কার্যক্রম চালাতেন।

অবশেষে বহু নাটকের পরে ইয়াং গ্রেপ্তার হয়ে এখন বিচারের সম্মুখীন হয়েছেন।

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট


শেয়ার করুন