অন্তর্দ্বন্দ্বে জ্বলছে জাতীয় পার্টি

6_297436 সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব সেভাবে প্রকাশ্যে রূপ না নিলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। প্রকৃত অর্থে দলটি নানামুখী অন্তর্দ্বন্দ্বে জর্জরিত। ভেতরকার দ্বন্দ্ব বিশ্লেষণ করলে এককথায় এটাই বলতে হবে যে, জাতীয় পার্টি আজ চতুর্মুখী অন্তর্দ্বন্দ্বে জ্বলছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল দলটির সাধারণ নেতাকর্মীদের এমন প্রতিক্রিয়ার সঙ্গে একমত পোষণ করে বলে, এখনও জাতীয় পার্টি বলতে শুধু এরশাদকেই বোঝায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও এক বছরের বেশি সময় ধরে দলের এমন অবস্থানে কিছুটা চিড় ধরেছে। পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ অনেকটা দুই মেরুতে অবস্থান করছেন। আর এই দুই মেরুকে কেন্দ্র করে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণসহ অনেক ক্ষেত্রে দলটি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে কেন্দ্র থেকে একেবারে মাঠপর্যায়ে। আর এ রকম পরিস্থিতিতে দলের শীর্ষ নেতা সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ তার কোনো বক্তব্য ও সিদ্ধান্তে বেশিক্ষণ স্থির থাকতে পারছেন না।
এ রকম অভ্যন্তরীণ বিরোধকে কেন্দ্র করে দলের প্রতি অনেকের ভালোবাসা উবে গেছে। বেশিরভাগ নেতা এখন জাতীয় পার্টি করেন দলকে ভালোবেসে নয়, নিজেদের সুযোগ-সুবিধা আদায়ের জন্য। সরকারের সঙ্গে মন্ত্রিত্বের ভাগাভাগি থাকায় দলের সুবিধাবাদীরা সবখানে ভাগ বসাতে চান। তাই নামে বিরোধী দলের হলেও কাজে তারা পুরোদস্তুর সরকারি দল। অনেকের আচার-আচরণ দেখে বোঝার উপায় নেই যে তারা জাতীয় পার্টি করেন। অনেক ক্ষেত্রে কেউ কেউ বড় আওয়ামী লীগার বনে গেছেন। অপরদিকে কেউ কেউ সুবিধাভোগের লাইন ধরতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপির স্বার্থ রক্ষায় মনোনিবেশ করেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় পার্টির আঁতাত হতে পারে, এমন ধারণা থেকে ভেতরে ভেতরে তারা বিএনপি লবিতে কাজ করছেন।
এদিকে দলের বিদ্যমান দুটি স্পষ্ট মেরুকরণকে ভিত্তি করে কেউ কেউ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সৃষ্টি করে রেখেছেন নিজস্ব বলয়। আর এ বলয়ের বাইরে গিয়ে কেউ মুখ খুললে কিংবা প্রতিবাদ জানালে তার ওপর নেমে আসে আকস্মিক বহিষ্কারের মতো শাস্তির খড়গ। অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতা ও অন্তর্দ্বন্দ্ব দলটিকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে থাকায় কথায় কথায় যেমন দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনা ঘটে, পরক্ষণে আবার পুনর্বহালও করা হয়। এমন নজির স্থাপন জাতীয় পার্টিতে এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। জানা গেছে, জাতীয় পার্টির নেতাদের মতে, কাজী জাফর আহমদ, ড. টিআইএম ফজলে রাব্বি চৌধুরী, মোস্তফা জামাল হায়দার, এসএমএম আলম, আহসান হাবিব লিংকনসহ অনেক ত্যাগী ও প্রভাবশালী নেতা বহুল আলোচিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে দল ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন এই অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে। জিএম কাদের, কাজী ফিরোজ রশীদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খানসহ অনেক ত্যাগী নেতা দলে থাকলেও অভ্যন্তরীণ অপরাজনীতিতে কুলিয়ে উঠতে না পেরে অনেকটাই নিভৃত জীবনযাপনের পথ বেছে নিয়েছেন। একই কারণে জাতীয় পার্টির টিকিটে একাধিকবার নির্বাচিত এমন বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যও গুটিয়ে রেখেছেন নিজেদের। এ অবস্থায় ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতারা নিষ্ক্রিয় থাকার সুযোগে সুবিধাভোগী একটি চক্রের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে দলটি।
জানতে চাইলে এ বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য জিএম কাদের শুক্রবার বলেন, জাতীয় পার্টিতে ‘চেইন অব কমান্ড’ বলে কিছু নেই। দলে কোনো নিয়ম-শৃংখলা নেই। কেউ কারও কোনো কথা শোনেন না। দলকে নিয়েও ভাবেন না। অথচ জাতীয় পার্টির নাম ভাঙিয়ে অনেকেই নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা আদায়ে ব্যস্ত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের অপর একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য এ বিষয়ে বলেন, জাতীয় পার্টির বেশিরভাগ নেতা হয় নিজের স্বার্থে দল করেন, না হয় দলে থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির স্বার্থ রক্ষায় সময় পার করেন। এরা মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের কথা ভাবেন না। নেতাকর্মীদের দুঃসময়ে এদের দেখা যায় না। আরেক নেতা বলেন, এরশাদ ও রওশন এরশাদকে ঘিরে তৈরি হওয়া সুবিধাভোগীরাই মূলত নিজেদের স্বার্থে এই অন্তর্দ্বন্দ্ব জিইয়ে রাখছেন।
দলীয় নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র জানায়, এরশাদ ও রওশন যেমন দু’দিকে তেমনি পৃথকভাবে ‘একক’ একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছেন দলের বর্তমান মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তাই শাসক দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে আগাগোড়া সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলা জিয়াউদ্দিন বাবলুই জাতীয় পার্টিতে এখন গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। এ জন্য অনেকটা চাপের মুখে তাকে মহাসচিবের দায়িত্ব দেন এরশাদ। বাদ দিতে হয় বিএনপি ঘেঁষা হিসেবে পরিচিত এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে। মহাসচিব পরিবর্তনের সময় এরশাদ অবশ্য ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, এ পরিবর্তনের ফলে সাংগঠনিক অবস্থা আরও শক্তিশালী হবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যায়ের বেশিরভাগ নেতাকর্মী সহজভাবে মেনে নেননি জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে। ওদিকে বাদপড়া মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের বিরুদ্ধেও অভিযোগের অন্ত নেই। টাকার বিনিময়ে কমিটি গঠন, অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ উপার্জন, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারও রাতারাতি ভোল পাল্টে ফেলেছেন। একসময়ে এরশাদের কাছের লোক হিসেবে পরিচিত এই হাওলাদার মহাসচিব পদ হারিয়ে এখন ভর করেছেন রওশন এরশাদের ওপর। জাতীয় পার্টির অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে তাকে দেখা না গেলেও রওশনের অনুষ্ঠানে তার সরব উপস্থিতি অনেকটা চোখে পড়ার মতো।
জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ নানা বিরোধের কারণে জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা নির্বাচন করতে পারেনি। কেউ কেউ আরও পরিষ্কার করে বলতে চান, মূলত এরশাদ ও রওশনের বিরোধের কারণেই গত দেড় বছরে বিরোধীদলীয় উপনেতা নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়েছে দলটি। একসময় এরশাদের কাছের লোক বলে পরিচিত কাজী ফিরোজ রশীদকে বিরোধীদলীয় উপনেতা বানাতে চান রওশন এরশাদ। এতে জোর আপত্তি পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের। তিনি চান, জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে বিরোধীদলীয় উপনেতা বানাতে। এরশাদ এবং রওশন এরশাদ আলাদাভাবে তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে বিরোধীদলীয় উপনেতা বানাতে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে চিঠিও দেন। সেই চিঠি আজও অমীমাংসিত অবস্থায় পড়ে আছে স্পিকারের দফতরে।
এদিকে কাকরাইলে দলের বিশাল কেন্দ্রীয় কার্যালয় এখন বিরাণভূমি। এ রকম বহুমুখী বিরোধের কারণে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতা অনেকটা নিষ্ক্রিয়। তাই কাকরাইলস্থ পার্টির কার্যালয়ে নেতারা অফিসমুখী হন না। সংশ্লিষ্টদের মতে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে লজ্জাজনক পরাজয়ের পর জাতীয় পার্টির এই অন্তর্দ্বন্দ্ব আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। দলের অনেকেই এই ভরাডুবির জন্য বর্তমান মহাসচিবের বিতর্কিত কর্মকা-কে দায়ী করছেন। বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ ও পরিশ্রমের পরও প্রত্যাশিত ফল পাননি জাতীয় পার্টি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থীরা। তিন সিটিতে মাত্র ১৩ হাজার ৬০০ ভোট পেয়েছেন দলটির মেয়র র্প্রার্থীরা। দল-সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও ভোটের ফলে একই হাল হয়েছে। জাতীয় পার্টির ৮১ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে জয়ী হয়েছেন মাত্র একজন। আর দলের মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মেয়র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যা দলের ভেতরকার ছাইচাপা আগুনকে আরও উসকে দিয়েছে।
জাতীয় পার্টির নেতারা জানান, সাংগঠনিকভাবে দলকে শক্তিশালী করতে গত বছরের প্রথমদিকে মহাসচিব পদে পরিবর্তন আনেন এরশাদ। দীর্ঘ ১৪ বছরের মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে দিয়ে প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুকে মহাসচিব বানান এরশাদ। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। দলীয় কর্মকা- মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। মহাসচিব হয়েই জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ঘোষণা দেন, এখন থেকে জাতীয় পার্টির মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং সংসদ সদস্যরা নিয়মিত দলীয় কার্যালয়ে বসবেন। বাস্তবতা হচ্ছে তারা কেউ ভুলেও দলীয় কার্যালয়মুখী হন না। তবে মাঝেমধ্যে মহাসচিব আসেন। এ সময় তিনি শুধু তার সিন্ডিকেট দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকেন। সাধারণ নেতাকর্মীরা তার কাছে ভিড়তে পারেন না। বাকি সময় কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় খাঁখাঁ করে। দু-তিনজন প্রেসিডিয়াম সদস্য, কয়েকজন যুগ্ম মহাসচিব আর কয়েকজন সিনিয়র নেতা কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়মিত যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ ছাড়া বেশিরভাগ নেতাই ব্যস্ত নিজের আখের গোছাতে, তদবির বাণিজ্য নিয়ে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, জাতীয় পার্টির মূল সংকট চলছে নেতৃত্বকে ঘিরে। মহাসচিব হিসেবে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে সংকট আরও ঘনীভূত হয়। ইতিমধ্যে তাকে রাজশাহীতে অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হয়েছে। সিলেটে তার উপস্থিতিতে গোলাগুলি করেছে দলের দু’পক্ষ। প্রায় দুই মাস আগে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের কাছে সাংগঠনিক রিপোর্ট চেয়েছেন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। কেউ তাতে সাড়া দেননি। দলের নেতাদের মতে, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়াকে কিছুদিন আগে হঠাৎ করে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়। অথচ দলের গঠনতন্ত্রে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব পদ বলে কিছু নেই। এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারের কছের লোক বলে পরিচিত অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া এখন জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর অতি ঘনিষ্ঠ, যা ভালোভাবে নিতে পারেননি বেশিরভাগ নেতাকর্মী।
অভিযোগ রয়েছে, জাতীয় পার্টির রাজনীতি করে এখন কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। দলের পদ-পদবি ভাঙিয়ে একই পথে আরও অনেকেই এখন কোটিপতি। যারা ব্যক্তিগত স্বার্থে কখনও এরশাদকে ব্যবহার করছেন, কখনও ব্যবহার করছেন রওশনকে। এই সুবিধাভোগী চক্রের কাছে পুরো জাতীয় পার্টি আজ জিম্মি হয়ে আছে। এদের কেউ কেউ সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। নিয়েছেন ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা সুবিধা, যা এখনও অব্যাহত আছে।
জানা গেছে, বর্তমান মহাসচিবের অধীনে সারা দেশে কাউন্সিল অধিবেশনের মাধ্যমে কমিটি গঠনের বিষয়টিও ঝুলে গেছে। গত ডিসেম্বরে কাউন্সিল শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা শুরুই হয়নি। জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক জেলা ৭৬টি। এর মধ্যে মাত্র একটি জেলায় কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি করা হয়েছে। আর তা হল রাজশাহী। বাকি ৭৫টি জেলায় কোনো কমিটি হয়নি। এসব জেলার মধ্যে অন্তত ২৫টি জেলা আহ্বায়ক কমিটি এবং বাকিগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে। গত বছরই সাংগঠনিক জেলার ৩৩টিতে সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটি করার জন্য চিঠি দেয়া হয়ছিল। কিন্তু এসব জেলার কেউই তখন সেই চিঠির জবাব দেননি। ফলে তারা সম্মেলন করবেন কিনা তাও জানতে পারেনি কেন্দ্রীয় কমিটি। এ অবস্থায় পরের পদক্ষেপ কী হবে তাও নির্ধারণ করতে পারেননি দলটির কেন্দ্রীয় নেতারা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, জাতীয় পার্টির ভেতরে চলছে হ য ব র ল অবস্থা। এককথায় অস্তিত্ব সংকটে এখন জাতীয় পার্টি। দলীয় বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়ছে শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত। হতাশা নেমে এসেছে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। দলীয় কোন্দল, কমিটি গঠন নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান, সাংগঠনিক দুর্বলতা, কারণে অকারণে বহিষ্কারসহ নানা ঘটনায় ডুবতে বসেছে দলটি। সব মিলিয়ে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জে পড়েছে জাতীয় পার্টি। বিষয়টি স্বীকার করে বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ সম্প্রতি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘জাতীয় পার্টি এখনও যে টিকে আছে এটিই বড় কথা।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জিএম কাদের বলেন, বিএনপি জাতীয় সংসদে নেই। জাতীয় পার্টি এখন প্রধান বিরোধী দল। প্রধান বিরোধী দল হওয়ার মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টি আগামী দিনের রাজনীতিতে নিজেদের একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করার সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু সুবিধাভোগীদের কারণে দলটি সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, বিরোধীদলীয় নেত্রীর উচিত হবে তার পদ ছেড়ে দিয়ে সরকারের মন্ত্রী হওয়া। আর না হয় মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে এসে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করা। এতে দল বাঁচবে। দলের ভবিষ্যৎ বলেও কিছু থাকবে। না হয় একসময় দেখা যাবে, জাতীয় পার্টি শাসক দলেই বিলীন হয়ে যাবে। সে সময় দল হিসেবে জাতীয় পার্টির নিজস্ব কোনো অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। যুগান্তর


শেয়ার করুন