অনলাইন পত্রিকা চালু আছে, থাকবে : তথ্যমন্ত্রী 

1-thereport24-1সিটিএন ডেস্ক

দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘অনলাইন পত্রিকা থাকার জন্যই এসেছে। সরকার অনলাইনকে স্বাগত জানায়। এর কার্যক্রম সূচারুভাবে সম্পন্ন করতে সরকার একটি নীতিমালা করে দেবে।’
অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা চিন্তা করবেন না। অনলাইন নিউজ পত্রিকা চালু হয়েছে, চালু থাকবে।’

দ্য রিপোর্টকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আমি এর আগে এখানে এসেছিলাম। অনলাইন পত্রিকায় যে এত জনবল থাকে তা আমার ধারণায় ছিল না। এখানে এসে দেখে তা বিশ্বাস হয়েছে। আসলে একটি কম্পিউটার দিয়ে অনলাইন পত্রিকা চালানো যায় না।’
তিনি বলেন, ‘অনেকে বিভিন্ন নামে অনলাইন চালানোর চেষ্টা করছেন। এতে বহু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা; আমরাও হচ্ছি। তবে সব মিলিয়ে এ গণমাধ্যম একটি নতুন মাত্রার সংযোজন করেছে। সরকারও অনলাইনকে স্বাগত জানায়। আপনাদের কর্মকাণ্ড যাতে সূচারুভাবে করতে পারেন সেজন্য সরকার নীতিমালা করে দেবে। যাতে সংবিধান ও দেশের আইনের আওতায় স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে আপনারা কাজ করতে পারেন। না হলে ঝুঁকি থেকেই যায়।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র সবসময় আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। গণতন্ত্রে সংবিধান ও আইনের আওতায় যা চলে সেই জিনিসগুলোর কার্যক্রম বৈধ। গণতন্ত্রে গণমাধ্যম সম্পর্কেও উল্লেখ করা আছে। আর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা আমাদের অঙ্গীকার। যেহেতু আমরা সামরিক সৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি, সেক্ষেত্রে গণমাধ্যমের বড় ভূমিকা রয়েছে। তাই একে পবিত্র রাখা আমাদের দায়িত্বও।’

তিনি দ্য রিপোর্টের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যারা অনলাইন চালাবেন তাদের দায়িত্বশীলতা থাকতে হবে। সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে, আইনের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে আপনাদের কাজ করতে হবে। আইন ও নিয়মনীতির বাইরেও বিবেক থেকে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে। দায়বদ্ধতা থেকে খবর সংগ্রহ এবং তা পরিবেশন করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এটি হচ্ছে যাচাই-বাছাইয়ের চাকরি, বিবেক-বুদ্ধির চাকরি। তথ্য বাছাই করতে হয়, সঠিকতা যাচাই করতে হয়। সেখানে সমাজের অগ্রগতি ও বিভিন্ন বিষয় দেখে তথ্য সরবরাহ করতে হয়। আর অনলাইন পত্রিকা এমন একটি পত্রিকা যা তাৎক্ষণিকভাবে জনগণের কাছে তথ্য সরবরাহ করে। জনগণকে দ্রুত তথ্য দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম এটি। সরকার ও জনগণকে কাছে আনার মাধ্যম হল অনলাইন। এখানে চট করে তথ্য দিতে হয়, যাচাই করতে হয়, চট করে সরবরাহ করতে হয়; সেখানে ভুল হলে বড় সমস্যা হয়ে যায়।’

দ্য রিপোর্টের সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনাদের নতুন বছরের চ্যালেঞ্জ যেন হয় তথ্যের জগতে মিথ্যাচারের যে বেলুন তা ফুটো করে দেওয়া। মিথ্যাচার ও ইতিহাস বিকৃতি দূর করা যেন আপনাদের চ্যালেঞ্জ হয়।’

তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে সুন্দর করতে চাইলে এর ভেতরে যে খারাপ অপরাধীরা বসবাস করে, এখানে অতীতের রেশ ধরে যারা ক্রিয়াশীল; এ অপরাধের সঙ্গে যুক্ত রাজনীতিবিদদের মুখোশ খুলে দেওয়া, যাতে রাজনীতিতে তারা আর বিচরণ করতে না পারেন। সেটি একা রাজনীতিবিদ ও ভোটাররা পারবেন না।’

ইনু বলেন, ‘আগুন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে কোনো নেতা-নেত্রীর সম্পর্ক থাকলে, জঙ্গিদের সঙ্গে, দুর্নীতি-মাস্তানির সঙ্গে সম্পর্ক থাকলে তাদের চেহারা আপনারা পরিষ্কার করুন। যাতে নির্বাচনের অঙ্গনে তারা না থাকতে পারে, গণতন্ত্রের অঙ্গনে না থাকতে পারে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্রে গণমাধ্যমের জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা থাকা দরকার। পাশাপাশি রাজনীতি থেকে অপরাধীদের বিতাড়িত করার দায়িত্বও পালন করতে হবে। অন্যথায় রাজনীতি থেকে দুর্বৃত্তায়ন ও জঙ্গিবাদ বিতাড়িত হবে না।’

দ্য রিপোর্টের মতিঝিল কার্যালয়ে রবিবার দুপুর ১২টা ৪৬ মিনিটে উপস্থিত হন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বর্ষপূর্তি উৎসবের আনন্দঘন মুহূর্তে দ্য রিপোর্ট পরিবারকে শুভেচ্ছা জানান। পরে মন্ত্রী কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভ উদ্বোধন করেন।

‘সবার আগে সঠিক সংবাদ’— এই ধারণা নিয়ে ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করে দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকম। ঢাকায় এর প্রধান কার্যালয়ে কর্মী সংখ্যা ৯০ জন। এ ছাড়া বিভাগীয় শহরগুলোতে ব্যুরো অফিসসহ সবকটি জেলায় এর প্রতিনিধিরা কাজ করছেন।
অনুষ্ঠানে ইতোমধ্যে উপস্থিত হয়েছেন ইউনাইটেড মিডিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান কাজী ফরিদউদ্দীন আহমেদ এফসিএ, কোম্পানি সচিব মুশফিকুর রহমান, উপদেষ্টা এ কে এম আশরাফুল হক, পরিচালক আহসান কবির, রেজাউল হক ও প্রাইম ফাইন্যান্স ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোশাররফ হোসেন এফসিএ।
অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের শুভেচ্ছা জানান দ্য রিপোর্ট সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম মিন্টু, নির্বাহী সম্পাদক আমিরুল ইসলাম নয়ন, বার্তা সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সহকারী বার্তা সম্পাদক সোহেল রহমান, প্রধান প্রতিবেদক নূরুজ্জামান তামিম।


শেয়ার করুন