নাইক্ষ্যংছড়ি

উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাইল গ্রেপ্তার!

সিটিএনTofail-01-768x443 ডেস্ক

কক্সবাজারের সবচেয়ে কাছের পার্বত্য উপজেলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাইল আহমদ আবারও গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঢাকার একটি আবাসিক হোটেল থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সদস্যরা গভীর রাতে তাঁকে আটক করে নিয়ে যান। রোববার দিবাগত রাত প্রায় দুইটার দিকে রাজধানীর হোটেল সুন্দরবন থেকে চেয়ারম্যান তোফাইলকে তুলে নেয়া হয়।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশ নিতে ঢাকায় অবস্থানকারি তোফাইলকে তুলে নেয়ার পর কোথায় নেয়া হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। তাঁর পরিবারের সদস্যরাও সোমবার বেলা ২টা পর্যন্ত কিছুই জানেন না।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদে বারবার নির্বাচিত এই চেয়ারম্যানকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিশ্চিত করা না হলেও তিনি রামুর আলোচিত বৌদ্ধবিহার সহিংসতার মামলার তিনি চার্জশীটভূক্ত আসামি।

তোফাইল আহমদের পারিবারিক সূত্র জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিষদের অন্য দুই জনপ্রতিনিধি এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারি প্রকৌশলী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের (পিআইও) অংশগ্রহণে তিনদিনের কর্মশালায় অংশ নিতে তোফাইল আহমদ ও তাঁর পরিষদের অন্য ৪ জনকে জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাকে নিয়ে তিনি তিনদিন আগে ঢাকায় যান। তিনি ঢাকার সুন্দরবন হোটেলের ৩১৮ নাম্বার কক্ষে উঠেন। ওখানে অবস্থান করেই তিনি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে দুইদিন কাটান।

পারিবারিক সূত্র মতে, পুলিশের নতুন তদন্তকারি সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) সদস্যরা সোমবার ভোর রাত ২টার দিকে ওই হোটেল থেকেই তুলে নিয়ে যান।
ওই হোটেলে অবস্থানরত আলীকদম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম পুলিশ সদস্যদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘কেন তোফাইল আহমদকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে?’। ওই সময় পিবিআই সদস্যরা তাঁকে জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নেয়া হচ্ছে।
তবে অন্য একটি সূত্র দাবি করেছেন, তোফাইল আহমদ বর্তমানে পিবিআই সদর দপ্তরে রয়েছেন।
এদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের সাংবাদিকদের জানান, তোফাইলের বিরুদ্ধে রামুর আলোচিত বৌদ্ধ বিহার সহিংসতার সময় বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগ, হামলার ঘটনাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
তবে পিবিআই প্রধান ও পুলিশের উTofail-03-768x492প-মহাপরিচালক (ডিআইজি) মাহাবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের অভিযান চলছে।’

প্রসঙ্গত, ফেইসবুকে কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে কক্সবাজারের কাছের উপজেলা রামুর বৌদ্ধবসতিতে রাতভর সাম্প্রদায়িক সহিংসতা একদল চেনা-অচেনা দুস্কৃতিকারি।

ওই ঘটনার পরদিন উখিয়া ও টেকনাফের ১৯ বৌদ্ধ বিহার ও শতাধিক বসতঘরে অগ্নিসংযোগ, ভাংচুর, হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। পরে সরকারের পক্ষ থেকে এসব বিহার পুর্নর্নিমাণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াও ওই সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ ঘটনায় রামু, কক্সবাজার সদর, উখিয়া ও টেকনাফ থানায় ১৯টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রামু ও উখিয়ায় বৌদ্ধবিহারে হামলার তিনটি মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ, যাতে ৯২ জনের নাম রয়েছে।
উল্লেখ্য, রামু উপজেলায় ত্রিশ হাজারের বেশি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী বসবাস করেন। এখানে ছোট-বড় মিলিয়ে ২৪টি বৌদ্ধ বিহার রয়েছে। যার মধ্যে ২৯ সেপ্টেম্বরের ওই রাতে ১২টিতে অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুর করা হয়।


শেয়ার করুন