ধর্ষণ বিরোধী প্রচারে গিয়ে ধর্ষিত

130981_1সিটিএন ডেস্ক

এক মার্কিন নারীবাদী মানবাধিকার কর্মী অভিযোগ করেছেন, তিনি ধর্ষণ বিরোধী প্রচারণার কাজে সাউথ আফ্রিকা সফর করার সময় একজন পুরুষ দ্বারা ধর্ষিত হন। তার সাথে ঘটা এই লোমহর্ষক ঘটনাটি তিনি একটি ভিডিও ব্লগ সাইটে প্রকাশ করেন।

নিউয়র্কের অধিবাসী অ্যাম্বার আমুর নামের ঐ নারী একটি হোস্টেলের বাথরুমে ঘটা ঐ লোমহর্ষক ঘটনাগুলোর অনেক গুলো ছবি তিনি জনপ্রিয় ছবি ব্লগ সাইট ‘ইন্সট্রাগ্রামে’ শেয়ার করেন।

যুক্তরাজ্যের ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকা জানায়, ২৭ বছরের ওই তরুণীর দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন ‘ধর্ষণ বন্ধ করো, শিক্ষিত হও’ শীর্ষক একটি প্রচারণার কাজে। গত সপ্তাহে অ্যাম্বার ইনস্টাগ্রামে একটি ছবি আপলোড করেন। যাতে দেখা যায়, একটি বাথরুমের মেঝেতে বসে কাঁদছেন তিনি।

আর ওই ছবির নিচেই ধর্ষণের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন এই মানবাধিকারকর্মী। অ্যাম্বার জানান, দুই দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। এরপর হোস্টেলের এক ব্যক্তি তাকে গোসল করাতে বাথরুমে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে তাঁকে হাঁটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন ওই পুরুষ।

এরপর অ্যম্বার তাকে থামতে বললেও থামেননি ওই ব্যক্তি। বরং আরো উগ্র হয়ে উঠে জোর করে তাঁকে হাটু গেড়ে বসতে বাধ্য করেন। একপর্যায়ে শারীরিক দুর্বলতার জন্য জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন অ্যাম্বার। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই সম্বিত ফিরে পেয়ে আবিষ্কার করেন ওই ব্যক্তি তার লালসা চরিতার্থ করার কাজে লিপ্ত।

ধর্ষণের পর ওই ব্যক্তি যখন দেখেন জ্ঞান ফিরে এসেছে অ্যাম্বারের, তখন তিনি ‘যত্ন করে’ তাকে গোসল করিয়ে দেন। যাতে গোসলের সাথে সাথে শরীরে থাকা ধর্ষণের আলামতও মুছে যায়।

অ্যাম্বার বলেন, যখন আমাকে ধর্ষণের পর লোকটি চলে গেল তখন আমার মনে লজ্জা, ঘৃণা ও ব্যথা ছাড়া আর কোনো অনুভূতিই কাজ করেনি। আমার কাছে ধর্ষণের অভিজ্ঞতা এই প্রথম, আর আমি খুবই অসহায় হয়ে আবিষ্কার করলাম এই ভয়াবহ অনুভূতির ভেতর দিয়ে যাওয়ার পর একজন ধর্ষিতা কী অনুভব করে।

ইনডিপেনডেন্টকে অ্যাম্বার জানান, ‘এর পরই আমি ভাবলাম আমার বসে থাকলে চলবে না। এই ঘটনা জানাতে হবে মানুষকে। আমার জন্য নয়, সেই সব নারীর জন্য যারা বছরের পর বছর এই নির্মম অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাওয়ার পরও মুখ খুলতে সাহস পায় না।’

ধর্ষণের পর ঘটনাস্থল থেকে ছবি প্রকাশের পর ইনস্টাগ্রামে আরও দুটি ছবি প্রকাশ করেন অ্যাম্বার। যার একটিতে তিনি একটি ‘ধর্ষণ পরীক্ষা যন্ত্রের’ উপর শুয়ে আছেন।

ইনস্টাগ্রামে লেখা অ্যাম্বার তার বার্তাটি শেষ করেন এভাবে, ‘আমি জানি অনেকেই এখন আমাকে অভিযুক্ত করবেন, কেন আমি ওই ব্যক্তিকে আমাকে গোসল করাতে নিয়ে যেতে দিলাম। কিন্তু আমি অসুস্থাবস্থায় আমাকে গোসল করিয়ে আনতে বলেছি, আমি তাকে ধর্ষণের আমন্ত্রণ জানাইনি।’

অ্যাম্বার লিখেন, ‘এটা কোনো ব্যাপার নয় যে আমি তাকে চুমু খেয়েছি কি না, সে মাতাল ছিল কি না এবং এটাও কোনো ব্যাপার নয় আমি অসুস্থ অবস্থায় গোসল করতে তার সাহায্য নিয়েছি। কিন্তু আমি তাকে আমার প্রতি হিংস্র আচরণ করতে বলিনি, আমাকে রক্তাক্ত করার অধিকার তাকে দেইনি। আমি তাকে বলিনি আস, আমাকে ধর্ষণ করো।’

নিজের লেখার শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশেরও সমালোচনা করেন অ্যাম্বার। তিনি লিখেন, ‘আমার ওপর এই নির্যাতনের ঘটনা শুনে পুলিশ এমন আচরণ করছিল যেন এই ঘটনা খুবই স্বাভাবিক। বাড়ি গিয়ে দুটো ওষুধ খেয়ে নিলেই তো হয়!’


শেয়ার করুন