শফিক আজাদ, স্টাফ রিপোর্টার
উখিয়ার খরা প্রবণ এলাকা হরিণমারা-দোছরী রাবার ড্যাম নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় এলাকার কৃষকদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। গত রবিবার ৩ জানুয়ারি সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি রাবার ড্যাম নির্মাণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। গতকাল সোমবার কক্সবাজার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম ছিদ্দিকী বাস্তবায়নাধীন রাবার ড্যাম এলাকা পরিদর্শন করে পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের সাথে মত বিনিময়কালে স্থানীয়দের আন্তরিকতা ও সহযোগীতা কামনা করেন। তিনি আগামী মৌসুমে এ রাবার ড্যামের পানিতে বোরো ও শাকসবজি উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশ্বস্থ করেন।
স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সীমান্তের নাফ নদী হয়ে থাইংখালী এলাকার বিভিন্ন স্থানে প্রবহমান এ খালটি মাছকারিয়া, দোছরী ও হাজিরপাড়া হয়ে হরিণমারার উপর দিয়ে রেজু খালের সাথে সংযুক্ত হয়ে গেছে। এ খালে এককালে জোয়ার-ভাটা হলেও কালের আবর্তে এখন আর জোয়ার-ভাটা না হলেও পানির প্রবহমানতা রয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, থাইংখালী, দোছরী, হরিণমারা ও হাজিরপাড়া এলাকায় প্রায় অর্ধ শতাধিক পয়েন্টে নির্বিচারে বালি উত্তোলন, বাঁধ নির্মাণ, খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা তৈরি সহ পরিবেশ বিবর্জিত নানা কারণে হরিণমারা-দোছরী খালটি গভীরতা হারিয়েছে। ফলে মৌসুমে হাজার হাজার একর জমিতে বোরো সহ মৌসুমী শাকসবজি আবাদ হচ্ছে না বিধায় প্রায় ৫ হাজারেরও অধিক জমি বোরো আবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
হরিণমারা-দোছরী রাবার ড্যাম পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক হান্নান জানান, এলাকার অভাবগ্রস্থ কৃষক পরিবার সহ বৃহত্তর জনসাধারণের স্বার্থে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা বিনিয়োগ করে এ রাবার ড্যাম বাস্তবায়নের অনুমোদন প্রাপ্ত হয়েছে। তিনি জানান, এ রাবার ড্যামটির কাজ সম্পন্ন হলে এলাকার ৫ হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ সহ শাকসবজি উৎপাদন করে কৃষকেরা সাবলম্বী হতে পারবে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় বাস্তবায়নাধীন হরিণমারা-দোছরী রাবার ড্যাম নির্মাণ কাজে দায়িত্বশীল ঠিকাদার আবুল বশর জানায়, প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন এ রাবার ড্যামটির উপরে বিদ্যমান ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজটি অপসারণ করে তদস্থলে একটি মানসম্মত ও দীর্ঘস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। কক্সবাজার এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুরুল আলম ছিদ্দিকী মুঠোফোনে জানান, শতভাগ গুণগত মানসম্পন্ন নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহৃত হবে এ রাবার ড্যামে। সুতরাং রাবার ড্যামের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত স্থানীয়দের রক্ষণাবেক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের আন্তরিকতার সহিত সহযোগীতা করতে হবে। তাহলে আগামী মৌসুমে এ রাবার ড্যামে ধরে রাখা পানিতে বোরো চাষাবাদ সহ শাকসবজি ও যাবতীয় অর্থকরী ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে।