একজন ধর্মভীরু নারীর গল্প

dhormoviro-400x332একজন মিশরীয় নারীর গল্প। তিনি পেশায় কুরআন শিক্ষিকা। ব্যক্তি জীবনে খুবই ধর্মভীরু। সেই সঙ্গে কুরআনের আলো ছড়াতেন সর্বময়। তিনি শিক্ষার্থীদের কোরআনের একটি আয়াত দ্বারা প্রতিনিয়ত উপদেশ দিতেন। তাদের পরকালের ভয় দেখাতেন। ‘হে আমার পালনকর্তা! আমি তাড়াতাড়ি তোমার কাছে এলাম যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও৷” (সূরা ত্বহা : ৮৪)
আয়াতটি দ্বারা তিনি খুবই প্রভাবিত ছিলেন। তিনি কোন জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকলেও আযান শুনে এ আয়াতের কথা মনে করতেন৷ কাজ ফেলে প্রভুর ডাকে সাড়া দিতেন। তিনি নিয়মিত তাহাজ্জুদ পড়ার জন্যও অ্যালার্ম সেট করে রাখতেন৷ অ্যালার্ম বাজছে। ক্লান্তিতে চোখ জড়িয়ে গেলেও ওই আয়াতের কথা মনে করে বিছানা ছেড়ে উঠে যেতেন।
স্বামীর সেবায় তিনি ছিলেন আদর্শ স্ত্রী। তার স্বামী অনেক রাত পর্যন্ত ডিউটি করতেন। প্রতিরাতে স্বামী বাসায় ফেরার পর স্বামীকে গরম খাবার খাইয়ে তিনি ঘুমাতেন। একদিন তার স্বামী ‘মাহশি’ খাওয়ার ইচ্ছা করেন। এটা একটা টাইম কনস্যুমিং রেসিপি। এটা বানাতে
অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়৷ অনেক রকম স্পাইস দিয়ে রাইসটা কুক করতে হয়, তারপর গ্রেপলিভস দিয়ে সেগুলো মুড়িয়ে ভাপ দিয়ে অথবা ওভেনে বেক করতে হয় এই আইটেম৷ স্বামীর জন্য মাহশি বানাচ্ছিলেন স্ত্রী৷ তিনটি পাতা মুড়তে তখনো বাকি ছিল৷ সেগুলো মুড়ে ভাপে বসাতে আর মিনিট পাঁচেক সময় লাগবে। এমন সময় এশার আযান হলো৷ তিনি হাতের কাজ অসমাপ্ত রেখেই সালাতের জন্য উঠে গেলেন৷ তার স্বামী বারবার কল করেও সাড়া পাচ্ছিলেন না৷ তিনি বাধ্য হয়ে একটু তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরলেন। দেখলেন আর তিনটি মাত্র ‘মাহশি’ বাকি ছিল প্রস্তুত করতে, তারপর এটা স্টোভে দেয়া যেত৷ তিনি খুব আপসেট হলেন, বললেন,
‘খাবারটা চুলায় চড়িয়ে দিয়েও তো নামায পড়া যেত! মোটে তো তিনটাই বাকি ছিল!’
দীর্ঘ সময় পার হয়ে গেল। স্ত্রীর কোন সাড়া শব্দ নেই। তাই এগিয়ে গেলেন স্ত্রীর নিকট। সেজদায় পড়ে আছেন স্ত্রী। সেজদারত স্ত্রীর মাথায় হাত রাখলেন স্বামী। তবে স্ত্রীকে মৃত পেলেন। প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে তিনি পাড়ি জমিয়েছেন পরকালে।
রাসুলুল্লাহ্ সা. বলেছেন, ‘প্রতিটি মানুষ সেই অবস্থায় পুনরুত্থিত হবে যে অবস্থায় তার মৃত্যু হয়৷’ (মুসলিম-২৮৭৮)


শেয়ার করুন