৭১ বছরে আওয়ামীলীগের অর্জন সমুহ

নজরুল ইসলাম বকসী ।।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামীলীগ সমার্থক শব্দের মতো। বাঙালির হাজার বছরের কাঙ্খিত স্বপ্ন চিরদুঃখিনী বাংলা মায়ের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠা করা আওয়ামীলীগের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন। তারপরেই আসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তারই সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার মতো মহান নেতৃত্বকে দলের নেতা হিসাবে পাওয়া আওয়ামীলীগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অর্জন। এছাড়াও বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির সুখসমৃদ্ধি এবং এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে হাজারো অর্জনে আওয়ামীলীগের দীর্ঘ ইতিহাসের ভাণ্ডার পরিপূর্ণ। তারই উল্লেখযোগ্য কয়েকটি আজ তুলে ধরছি।

১। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে উঠে আওয়ামীলীগ। তখন এর নাম ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ। পরে ১৯৫৫ সালে অসাম্প্রদায়িক দল হিসাবে প্রতিভাত করার লক্ষ্যে নাম থেকে মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগ করা হয়। কালক্রমে এই নামই স্থায়ী রূপ নিলে আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য বেড়ে যায়। তাই নাম সংস্কারের এই চিন্তা একটি অর্জনই বটে।
২। আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার আগেই রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবীতে বিচ্ছিন্ন ভাবে আন্দোলন শুরু হয়। আওয়ামীলীগ গঠিত হওয়ার পর এই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে দলটি। নতুন নেতৃত্ব পেয়ে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন আরো দুর্বার হয়ে উঠে এবং ৫২’র ২১শে ফেব্রুয়ারী তা চূড়ান্ত রূপ লাভ করে।
৩। ১৯৫৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে দলটি আশানুরুপ ফলাফল অর্জন করে স্বল্প কালীন সরকার গঠন করে।
৪। ১৯৬২ সালে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনের সফল নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ।
৫। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক বাঙালির অধিকার আদায়ের ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবী সারা বাংলায় দারুন গ্রহনযোগ্যতা লাভ করে এবং একপর্যায়ে তা বাঙালি জাতির প্রাণের দাবী হয়ে উঠে।
৬। ১৯৬৯ সালের প্রবল গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেয় আওয়ামী লীগ। এই গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে ক্ষমতা ত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে হয় এবং মিথ্যা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আটক বঙ্গবন্ধুকে কারামুক্ত করে নিয়ে আসা হয়।
৭। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে পাকিস্তানের শাসন ক্ষমতার দাবীদার হয়।
৮। ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয় এবং ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্যের নিঃশর্ত আত্মসমর্পনের মধ্যদিয়ে বাঙালি জাতি পূর্ণ বিজয় লাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে।
৯। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারী পাকিস্তানের জিন্দানখানায় মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত কারাবন্দী বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন।
১০। ১৯৭২ সালের ১২ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহন করেন এবং এর মাত্র দুই মাস পরেই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ১২ মার্চ ভারতীয় সেনাবাহিনী বাংলাদেশ ত্যাগ করে।


শেয়ার করুন