ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা

৬ মে উদ্বোধন হবে বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়ক

marine-drive-road-cox-bazarইসলাম মাহমুদ :

সৈকত নগরি কক্সবাজারের ১৯৯৩ সালে শুরু হওয়া বিশ্বের দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ সড়কের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হবার কথা আগামী বছর। কিন্তু এক বছর আগেই তা শেষ হয়ে গেছে। এ প্রকল্পের ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। শহরের কলাতলি থেকে টেকনাফের সাবরাং অর্থনৈতিক জোন পর্যন্ত দীর্ঘ ৮০ কিলোমিটার সড়কটি নির্মাণে সময় লেগেছে ১৪ বছর। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মাণ প্রকৌশল ব্যাটালিয়ান। বিশ্ব পর্যটনের দুয়ার যেমন খুলে যাবে তেমনি জল সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

 ৬ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেরিন ড্রাইভ সড়কটির উদ্ভোধন করার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১৬, নির্মাণ প্রকৌশল ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল কে.এম মেহেদী হাসান এসব তথ্য জানান।
সেনাবাহিনীর নির্মাণ প্রকৌশল ব্যাটালিয়নের কর্মকর্তা অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল কে.এম মেহেদী হাসানআরও জানান, ১৯৯৩ সালে তৎকালীন সরকারের আমলে ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কক্সবাজার মেরীণ ড্রাইভ প্রকল্পটি গ্রহন করা হয়। কক্সবাজার শহরের কলাতলী পয়েন্টে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ঠিকাদারের নির্মিত দুই কিলোমিটার সড়ক সাগরেই বিলীন হয়ে যায়।
পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে এই সড়কের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাবাহিনীর প্রকৌশল নির্মাণ ব্যাটালিয়নকে। বর্তমানে সড়কটির দৈর্ঘ্য বেড়ে ৪৮ কিলোমিটার থেকে ৮০ কিলোমিটার করা হয়েছে। তিন ধাপে নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। প্রথম ধাপে ২৪ কিলোমিটার, দ্বিতীয় ধাপে ২৪ কিলোমিটার ও তৃতীয় ধাপে ৩২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
মেরিন ড্রাইভ সড়কটি নির্মাণের জন্য সেনা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জের সন্মুখীন হতে হয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রকল্পের দীর্ঘসুত্রিতায় সড়কের মাটি সাগরের উত্থাল ঢেউয়ে বিলীন হয়ে যায়। এতে করে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পায়। তদুপরি পাহাড়ের পাদদেশ এবং সাগরের তীর দিয়ে এরকম দীর্ঘ সড়ক নির্মাণের সময় সেনা বাহিনীর ৬ জন সৈনিক পাহাড় ধ্বসে মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারান বলেও জানান তিনি। তবুও সেনা বাহিনীকে চ্যালেঞ্জের মুখে সড়ক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে। এরফলে একদিকে সাগরের তীরে বেড়িবাঁধ হিসাবে ব্যবহৃত হবে সড়কটি অন্যদিকে বিস্তীর্ণ জায়গা-জমি ও ফসল রক্ষা পাবে সাগরের ভাঙ্গণ থেকে। সেই সাথে পর্যটন শিল্পেও নতুন মাত্রা যোগ হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পাহাড় আর সাগরের মিতালীর অপূর্ব দৃশ্য ঘনিষ্টভাবে দেখার সুযোগ করে দিয়েছে এই সড়কটি। সড়কের একপাশে উঁচু পাহাড়ে সবুজের হাতছানি। অপরপাশে উত্তাল সমুদ্রের ঢেউ আছড়ে পড়ছে বালিয়াড়ির বুকে। এই দুইয়ের বুক চিরে মাঝখানে নদীর মত এগিয়ে গেছে স্বপ্নের মেরিন ড্রাইভ সড়কটি। সড়কের ধারে রয়েছে নারিকেল, সুপারি, ঝাউবিথী সহ নানা প্রজাতির গুল্ম-লতা ও ফলজ গাছ-গাছালি। সাগর তীর আর পাহাড়ের পাদদেশে কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তৃত মেরীন ড্রাইভ সড়কের বাস্তব চিত্রটিই এরকম।


শেয়ার করুন