৪৩ হাজার বার …… শিকার!

rap_90355সিটিএন ডেস্ক :

অন্ধকার জীবনের গল্প শোনালেন ২৩ বছরের মেয়েটি। তার বেড়ে ওঠা মেক্সিকো সিটিতে। পাচারকারীদের নিষ্ঠুরতায় ক্ষতবিক্ষত তার জীবন। কার্লা জেসিন্তো নামের মেয়েটি বার্তা সংস্থা সিএনএনকে জানিয়েছেন তার জীবনের কালো অধ্যায়। জানিয়েছেন কখন, কোথায়, কীভাবে তিনি নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তার হৃদয়বিদারক বর্ণনা।

কার্লা জানান, টানা চার বছরে প্রতিটি দিন, সপ্তাহ, মাস তাকে ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে পাচারকারীদের হাতে। দিনে কমপক্ষে ৩০ বার হিসাব করে মোটের ওপর ৪৩ হাজার ২০০ বার ধর্ষণের কথা জানান তিনি।

কার্লা আরও জানান, মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি পাচারকারীদের হাতে পড়েন। তার পাচারের গল্পটাও ছিল কৌতূহলোদ্দীপক।

তিনি জানান, একদিন মেক্সিকো সিটির একটি পাতাল রেলস্টেশনের কাছে দাঁড়িয়ে কয়েকজন বন্ধুর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় মিষ্টান্ন বিক্রেতা একটি শিশু তার হাতে একটি লজেন্স দিল। ওই শিশু তাকে বলল, কেউ একজন এটি পাঠিয়েছে। এর কিছুক্ষণের মধ্যে একজন যুবক তার কাছে এলো। যুবকটি নিজেকে ব্যবহৃত গাড়ির ব্যবসায়ী পরিচয় দিল।

যুবকের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা হয় কার্লার। এর পর ওই ব্যক্তি তাকে জানান, তিনি নিজেও শিশু বয়সে লাঞ্ছিত হয়েছেন। তখন কার্লার মনে হলো, এ তো পুরোদস্তুর ভদ্রলোক। তার সঙ্গে মেশা যায়।

ওই দিনই যুবকের সঙ্গে নম্বর বিনিময় হয় কার্লার। তিনি তাকে (কার্লা) প্রস্তাব দেন, মেক্সিকোর পুয়েবলার শহরে যেতে। কার্লাও গররাজি ছিল। এর কয়েক দিনের মধ্যে কার্লা সত্যিই এই লোকটির সঙ্গে পুয়েবলা গেল। এর জন্য অবশ্য তার মায়েরও দায় ছিল।

একদিন রাতে দেরি করে ঘরে ফেরায় কার্লার মা তাকে ঘরে ঢুকতে দেয়নি। এর পরদিনই ওই লোকটির সঙ্গে চলে যান কার্লা। এর পর থেকে শুরু হয় তার অন্ধকার জীবন।

তিনি বলেন, আমি সকাল ১০টায় শুরু করতাম। চলত মধ্যরাত পর্যন্ত। শুরু এক সপ্তাহের জন্য ছিলাম গুয়াদালাজারায়। তখন হিসাব কষতাম। এই সপ্তাহ ধরে দিনে ২০ বার আমাকে বাধ্যতামূলক যৌনাচারে লিপ্ত হতে হতো। তখন আমার কান্নাকাটি দেখে কিছু লোক হাসত। আমাকে চোখ বন্ধ করে রাখতে বলা হতো, যাতে আমার সঙ্গে কী করা হচ্ছে, তা দেখতে না পাই।

মেক্সিকোর এই নারী জানান, তাকে কয়েকটি শহরে বিভিন্ন পতিতালয়, রাস্তার পাশের মোটেলে রাখা হয়। কোনো ছুটির দিন বা অবসর ছিল না। পাচারের শিকার হওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই দিনে ৩০ বার বাধ্যতামূলক যৌনাচারে লিপ্ত হতে হতো। এভাবে ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতিদিন ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে তাকে।


শেয়ার করুন