২১ বছরে ১০০১ কোটি সাড়ে ৩৬ লক্ষ টাকা রাজস্ব আয়

২২ বছরে টেকনাফ-মিয়ানমারের মংডু সীমান্ত বাণিজ্য

আমান উল্লাহ আমান, টেকনাফ :
২২ তম বছরে পদার্পণ করেছে টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্য। ১৯৯৫ সনের ৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের টেকনাফ এবং মিয়ানমারের মংডু টাউনশীপে পৃথক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ঝাঁকজমক ও আড়ম্বরপূর্ণভাবে টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্যের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছিল। স্বল্প পরিসরে চালু হওয়া সীমান্ত বাণিজ্য হাঁটি হাঁটি পা পা করে আজ ২২ তম বর্ষে পদার্পন করেছে। অবকাঠামোসহ নানা ধরণের সমস্যা এবং সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও সরকার টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্য থেকে প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় করছে। রপ্তাণী বাণিজ্যের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে নিত্য নতুন আইটেমের পণ্য।
এদিকে দেরীতে হলেও সীমান্ত বাণিজ্যের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং সমস্যা সমূহ চিহ্নিত করে ক্রমান্বয়ে তা নিরসন করতে উভয় দেশের সীমান্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডার ট্রেড জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ। বাংলাদেশের টেকনাফ ও কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের মংডুসহ বিভিন্ন শহরে ইতিমধ্যে এই গ্রুপের ৮টি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাগুলোতে সীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণ সমস্যা সমূহ দুরীকরণের সুপারিশ এবং প্রস্তাব তৈরি বিশেষতঃ বর্ডার হাট চালু ইত্যাদি চুড়ান্ত করা হয়েছে। যা টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্য কার্যক্রমে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে। তবে গত ২ বছর ধরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার বর্ডার ট্রেড জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের সভা অনুষ্টিত হয়নি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৫ সনে ৫ সেপ্টেম্বর টেকনাফ-মংডু সীমান্ত বাণিজ্য চালু হওয়ার পর থেকে ২০১৬ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ২১ বছরে টেকনাফ স্থল বন্দর কাষ্টম্স মোট রাজস্ব আয় করেছে ১০০১ কোটি ৩৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৮৪ টাকা এবং উক্ত ২১ বছরে টেকনাফ স্থল বন্দর থেকে ১৯১ কোটি ৯৬ লাখ ৯৭ হাজার ২২০ টাকা মূল্যের বাংলাদেশী পণ্য মিয়ানমারে রপ্তানী হয়েছে।
এদিকে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের আগষ্ট মাসে এনবিআর কর্তৃক মাসিক রাজস্ব আয়ের বাজেট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছিল ৫ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। উক্ত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৭৬টি বিল অব এন্ট্রির মাধ্যমে সব মিলে রাজস্ব আয় করেছে ৭ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪৮ হাজার ৭৮৭ টাকা। আগস্ট মাসে টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে ৪৪ কোটি ১ লক্ষ ৯৮ হাজার ৩৩৬ টাকা মুল্যের পণ্য মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আমদানী হয়েছে। তম্মধ্যে ৪৩ কোটি ৫২ লক্ষ ৩৮ হাজার ৯২৫ টাকা মুল্যের পণ্য শুল্কযুক্ত এবং ৪৯ লক্ষ ৫৯ হাজার ৪১১ টাকা মুল্যের পণ্য শুল্কমুক্ত। উক্ত মাসে ৫৫টি চালানে ২ কোটি ৬০ লক্ষ ২৫ হাজার ৯২১ টাকা মুল্যের বাংলাদেশী ৪১ আইটেমের পণ্য টেকনাফ স্থল বন্দর দিয়ে মিয়ানমারে রপ্তাণী হয়েছে।
অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ২১তম বর্ষ সম্পন্ন করে ৫ সেপ্টেম্বর ২২তম বর্ষে পদার্পণ করলেও বর্ষপূর্তি এবং নববর্ষে পদার্পন উপলক্ষ্যে কাষ্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ, আমদানী-রপ্তানীকারক, সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন বা সরকারী বেসরকারী কোন সংস্থা কোন ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেনি। স্বল্প পরিসরে শুরু হওয়া এই সীমান্ত বাণিজ্য বর্তমানে সম্ভাবনাময় বিশাল ক্ষেত্র পরিণত হয়েছে।


শেয়ার করুন