২০২৩ সাল সংকটের বছরের শঙ্কা, ৬ নির্দেশনা মন্ত্রিসভার

ডেস্ক নিউজঃ

কোভিড–১৯ পরবর্তী রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধসহ কয়েকটি কারণে ২০২৩ সালটি সংকটের বছর হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এ জন্য খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোসহ একগুচ্ছ পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিসভা।

আজ সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২১-২২ অর্থবছরের কার্যাবলি–সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় এসব বিষয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। দ্য ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনের সূত্র ধরে আগামী বছর সংকটের বছর হওয়ার আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন তিনি।

নির্দেশনা ও পর্যবেক্ষণ জানাতে গিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রথমত, সর্বাবস্থায় খাদ্যের উৎপাদন বাড়াতে হবে। কারণ, যতই খাদ্যের আমদানির কথা বলা হোক না কেন, সমস্যাটি থাকবেই।

যদিও রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রার যেহেতু সংকট হচ্ছে, ফেডারেল রিজার্ভের হার বেড়ে যাওয়ার ফলে যেসব দেশ ঋণ নিয়ে কাজ করে বা যাদের আমদানি বেশি, তাদের দুই দিক থেকেই অসুবিধা হচ্ছে।

এর মধ্যে একটি হলো যখন টাকা দেওয়া হচ্ছে, তখন বেশি দিতে হচ্ছে, আবার যখন নেওয়া হচ্ছে, তখন কম পাওয়া যাচ্ছে। এ জন্য সবাইকে খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে এবং এর সম্ভাবনাও আছে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দ্বিতীয়ত, বিদেশে যেন অদক্ষ শ্রমিক না পাঠিয়ে দক্ষ শ্রমিক পাঠানো হয়। তাতে উচ্চ বেতনে কাজ করা সম্ভব হবে। সংশ্লিষ্ট দেশের চাহিদা অনুসরণ করে যেন এই সুযোগ বাড়ানো হয়। আর দক্ষতার সনদের ক্ষেত্রে যেন যথাযথ প্রতিষ্ঠানের সনদ দেওয়া হয়।

তৃতীয়ত, প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) বাড়ানোর জন্য কিছু কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক একটি পরিপত্র দিয়েছে বা না দিলে দেবে যে এখন আর রেমিট্যান্স পাঠাতে আলাদা ফি দিতে হবে না। যে ব্যাংকে পাঠাবে, সেই ব্যাংকই বিষয়টি দেখবে। আরও কিছু ক্ষেত্রে নমনীয়তা দেখানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, চতুর্থত, বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এ জন্য বিনিয়োগের যেসব শর্ত আছে, সেগুলোকে আরেকটু নমনীয় করা যায় কি না, সেটি দেখতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে কয়েকবার বসা হয়েছে এবং কাজ চলছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষেই (বিডা) কয়েকটি শাখা থাকবে। যেমন লাইসেন্সের জন্য যেন পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনে যেতে না হয়।

এ ছাড়া খাদ্য মজুতের বিষয়টি সব সময় ভালো অবস্থায় রাখার বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এ বিষয়ে মন্ত্রপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমানে খাদ্যের মজুত পরিস্থিতি খুবই ভালো অবস্থায় আছে। বেসরকারি খাতকে অনেক পরিমাণ খাদ্য আমদানি করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পরিমাণটি প্রায় ১৫ লাখ মেট্রিক টন। খাদ্য আমদানির ক্ষেত্রে উৎস করাজাতীয় কিছু করের বিষয়ে নমনীয় হওয়ার বিষয়েও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এনবিআর আলাপ-আলোচনা করে অবিলম্বে যেন সন্তোষজনক বিধান চালু করে।


শেয়ার করুন