একাডেমিক কাউন্সিলের সভা

১৭ মে ঢাবি হল খুলবে

সিটিএন ডেস্কঃ
উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানছবি: প্রথম আলো
পরীক্ষা ও আবাসিক হল খোলার ব্যাপারে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা পরিষদ (একাডেমিক কাউন্সিল)। তবে কাউন্সিল সরকারের কাছে একটি ‘বিনম্র আহ্বান’ জানিয়েছে। আহ্বানটি হলো ১৭ এপ্রিলের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে করোনার টিকার প্রথম ডোজের আওতায় আনা।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গতকাল সোমবার বলেছিলেন, করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শ্রেণিকক্ষে সরাসরি ক্লাস শুরু হবে আগামী ২৪ মে থেকে। তার এক সপ্তাহ আগে ১৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে। ২৪ মের আগে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় কোনো পরীক্ষা হবে না। শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরের অবস্থাকে ‘পরিবর্তিত পরিস্থিতি’ আখ্যা দিয়ে আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভা ডাকেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান৷
একাডেমিক কাউন্সিল হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সর্বোচ্চ ফোরাম। আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে কাউন্সিলের জরুরি সভা চলে।

সভা শেষে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছে একাডেমিক কাউন্সিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের করোনা টিকা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, একাডেমিক কাউন্সিল এর ভূয়সী প্রশংসা করে এবং আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়।

মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ১৩ মার্চকে সামনে রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষার্থীদের হলে তোলার যে আয়োজনগুলো ছিল, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে টিকা পাওয়ার সুবিধার্থে, অর্থাৎ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টিকা দেওয়া নিশ্চিত করতে সরকার যেটি নির্ধারণ করেছে যে ১৭ মের আগে টিকা দেওয়া হবে, সে কারণে তাঁরা ১৭ মে থেকে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হলে ওঠানোর উদ্যোগ নেবেন। ১৭ মের কত দিন আগে টিকা কার্যক্রমের প্রথম ডোজ শেষ করতে হবে, একাডেমিক কাউন্সিলে বিশেষজ্ঞ সদস্যরা সে বিষয়েও মতামত দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, প্রথম ডোজের চার সপ্তাহ পরে ইমিউনিটি হয়। তাই একাডেমিক কাউন্সিল সরকারের প্রতি অনুরোধ ও বিনম্র আহ্বান জানিয়েছে, ১৭ এপ্রিলের মধ্যে যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টিকার প্রথম ডোজের আওতায় আনা হয়। সেটি হলে ১৭ মে থেকে তাঁরা শিক্ষার্থীদের হলে ওঠাতে পারেন।

আখতারুজ্জামান বলেন, ১৩ মার্চকে সামনে রেখে বড় আকারের যে পরীক্ষাগুলোর তারিখ ঘোষিত ছিল, সেগুলোর কোনোটিই থাকবে না। সেগুলো স্থগিত করা হলো। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কখনো স্থবির হয় না, এখানে বহু ধরনের পরীক্ষা সব সময় হতে থাকে। কখনো ভাইভা, কখনো ল্যাব পরীক্ষা ইত্যাদি হতেই থাকে। স্থানীয় পর্যায়ে যে কাজগুলো অতি জরুরি, সেগুলো সম্পাদিত হবে, ১৩ মার্চকে সামনে রেখে বড় ধরনের যেসব পরীক্ষার (চূড়ান্ত পরীক্ষা) তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল, আজ একাডেমিক কাউন্সিল সেগুলো স্থগিত রাখার অনুরোধ করেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে সন্ধ্যায় একটি বৈঠক হবে। সেখানে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। তবে ১৭ মের আগে বড় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্তগুলো পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ওঠা হল খোলার দাবির বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা সব সময় যৌক্তিক অবস্থানে থাকে ও দায়িত্বশীল আচরণের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ফলে যখন তাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি মহৎ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, আমরা প্রত্যাশা করব শিক্ষার্থীদের ধৈর্য ও মূল্যবোধ, আইনশৃঙ্খলার প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার কোনো ঘাটতি নেই। যেকোনো সৎ প্রয়াসের সঙ্গে আমাদের শিক্ষার্থীরা সব সময় সহমত ও একীভূত থাকে।’


শেয়ার করুন