১০ তারিখে উত্তর কোরিয়ার হামলা শুরু!

আগামী ১০ অক্টোবর হামলা চালাতে পারে উত্তর কোরিয়া। এই বলে সতর্ক করে দিয়েছেন জাপানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ওই দিন থেকে জাপানে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। সে দেশের বিশেষ দিনটিকে টার্গেট করেই মিসাইল হামলা চালাতে পারেন উত্তর কোরিয়ার সর্বাধিনায়ক কিম জং উন, আশঙ্কা ইসুনরি অনোদেরার। গত ৩ সেপ্টেম্বর পিয়ং ইয়ং তাদের ষষ্ঠ ও সবচেয়ে বড় পারমাণবিক পরীক্ষাটি করার পর থেকে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের।
ওই দুই দেশই রাষ্ট্রসংঘের কাছে বারবার আবেদন জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার আগ্রাসনের উপর রাশ টানার। এমনকী খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একাধিকবার কড়া ভাষায় পিয়ংইয়ংকে সতর্ক করলেও লাভের লাভ হয়নি। উত্তর কোরিয়ার ক্যালেন্ডারে বিশেষ বিশেষ দিনগুলি বেছে নিয়ে পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন কিম। ঠিক যেমন, গত ৯ সেপ্টেম্বর সে দেশের প্রতিষ্ঠা দিবসে চালানো হয় বৃহত্তম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা। আর এখানেই ভয়ে কাঁটা হয়ে রয়েছে জাপান। কারণ, সে দেশে যখন নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হবে, উত্তর কোরিয়াতে সেই ১০ অক্টোবর কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠা দিবস। ট্র্যাডিশন বজায় রেখে সেদিনও পিয়ংইয়ং ভয়ানক কিছু করলে জাপানে নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিতে হতে পারে।
ইসুনরি অনোদেরা বলছেন, ‘আমরা জানি ১০ অক্টোবর দিনটি উত্তর কোরিয়ার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা ওই দিনের জন্য বিশেষভাবে সতর্ক থাকছি। আমরা হাই অ্যালার্টে রয়েছি।’ জাপ প্রতিরক্ষামন্ত্রী মতো আশঙ্কায় ভুগছেন দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা চাং ইউ অং। বৃহস্পতিবার তিনি প্রেসিডেন্ট মুনের সঙ্গে জরুরি বৈঠক সেরেছেন। একইসঙ্গে, পিয়ং ইয়ংয়ের শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমা পরীক্ষার জেরে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা আরো ঘনীভূত হচ্ছে। কোরীয় উপদ্বীপে এই মুহূর্তে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে উত্তর কোরিয়া যাই দাবি করুক না কেন, তারা যে পরমাণু অস্ত্রের গবেষণায় দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে, সেই বিষয়ে একমত আন্তর্জাতিক মহল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, এবার আমেরিকা পালটা হামলা চালালে, কিমের সমর্থনে এগিয়ে আসতে পারে রাশিয়া ও চীন। ফলে শুরু হতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।
কিউবায় মার্কিন কূটনীতিকদের ওপর রহস্যময় হামলা : কর্মীসংখ্যা হ্রাস
বিবিসি
রহস্যময় এক ‘হামলার’ কারণে কিউবায় নিযুক্ত অর্ধেকের বেশি মার্কিন কূটনৈতিক কর্মীকে সরিয়ে নিয়েছে। একই সাথে নাগরিকদের দ্বীপ দেশটিতে ভ্রমণে না যেতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ওই রহস্যময় ‘হামলার’ কারণে হাভানায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসকর্মীরা শোনার ক্ষমতা হারাচ্ছেন, মাথা ঘোরা ও অবসাদের মতো লক্ষণে ভুগছেন।

শুক্রবার ওই দূতাবাসের অর্ধেকেরও বেশি কর্মীকে সরিয়ে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জরুরি কিছু সেবা ছাড়া অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের হাভানা দূতাবাস। নিরাপত্তা পদক্ষেপ হিসেবে এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। হামলার উৎস কিংবা এর জন্য কারা দায়ী সে ব্যাপারে কিছুই শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এই হামলার ঘটনার ফলে বারাক ওবামার সময়ে দীর্ঘদিন পর শুরু হওয়া এই দুই রাষ্ট্রের সম্পর্ক আবার অনিশ্চয়তায় পড়তে যাচ্ছে। এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, ‘যে পর্যন্ত কিউবা সরকার কিউবায় থাকা আমাদের কূটনীতিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারবে, সে পর্যন্ত কূটনীতিকদের ক্ষতির ঝুঁকি এড়াতে আমাদের দূতাবাসের কর্মী সংখ্যা জরুরি পর্যায়ে নামিয়ে আনা হবে।’

‘ভ্রমণ সতর্কতায়’ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘যেহেতু আমাদের কর্মীদের নিরাপত্তাই ঝুঁকির মুখে আছে আর আমরা হামলার উৎস শনাক্ত করতে পারিনি, তাই আমরা বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরাও ঝুঁকিতে থাকতে পারে এবং এই কারণে তাদের কিউবা ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে।’ যুক্তরাষ্ট্রের এসব সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জোসেফিনা ভিদাল বলেছেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ঘোষিত যুক্তরাষ্ট্র সরকারের আজকের এই সিদ্ধান্তকে হটকারী বলে বিবেচনা করছি এবং এটি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছি আমরা।’ কিউবার রাষ্ট্র পরিচালিত টেলিভিশনে দেয়া এক বিবৃতিতে ভিদাল বলেন, কী হয়েছে তা পরিষ্কার করতে কিউবা এখনো যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার বিষয়ে আন্তরিক আছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কিউবায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের ২১ জন কর্মী রহস্যজনকভাবে আহত হয়েছেন এবং তারা কানে না শোনা, মাথা ঘোরা, মাথাব্যথা, অবসাদ, সজ্ঞানতার সমস্যা এবং ঘুমের ব্যাঘাতের মতো সমস্যার কথা জানিয়েছেন। দূতাবাসের পাশাপাশি বেশকিছু হোটেলেও এমন হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব বিষয়ে কোনো ভূমিকা থাকার কথা অস্বীকার করে অভিযোগগুলো তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কিউবা সরকার। যুক্তরাষ্ট্রের এক আইন প্রয়োগকারী কর্মকতা জানিয়েছেন, এফবিআইও ঘটনাটির তদন্ত করছে কিন্তু সমস্যার কারণ এখনো বের করতে পারেনি।

–নয়া দিগন্ত অনলাইন


শেয়ার করুন