হোয়াইটওয়াশ এড়াতে জিম্বাবুয়ের দরকার ২৭৭

CRICKET-BAN-ZIM

এগারতম হোয়াইটওয়াশ পেতে জিম্বাবুয়েকে ২৭৫ রানের ভেতর আটকাতে হবে বাংলাদেশকে। এদিন টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটির দৃঢ়তায় বড় স্কোরের আশা জাগায় বাংলাদেশ। কিন্তু মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় স্কোর থামে ২৭৬’এ।

প্রথম তিন ব্যাটসম্যান স্ট্যাম্পিং হয়ে সাজঘরে ফেরেন। ওপেনিং জুটির রেকর্ড থেকে ২৩ রান দূরে থাকতে প্রথমে ফেরেন ইমরুল কায়েস (৭৩)। চার ওভারের ব্যবধানে ফেরেন তামিমও। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সেরা ওপেনিং জুটি ১৭০ রানের। ১৯৯৯ সালে শাহরিয়ার হোসেন এবং মেহরাব হোসেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই রেকর্ড গড়েন।

এদিন প্রথম দশ ওভারে রান ছিল ৪৭, বিশ ওভারে সেটা ৯০, পরবর্তী আট ওভারে ১৩৯। এভাবে ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে অতিথি বোলারদের পথহারা বানিয়ে ছাড়েন ইমরুল-তামিম। ৭৬ বল মোকাবিলা করে টানা দ্বিতীয় অর্ধশতকে পৌঁছান ইমরুল। ক্যারিয়ারের ১২তম। গত ম্যাচে করেছিলেন ৭৬। আর তামিম ২৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ছয় মেরে ৫০ পূর্ণ করেন।

৩০তম ওভারে সিকান্দার রাজার তৃতীয় ডেলিভারি ডাউন দ্য উইকেটে এসে হাফভলি বানাতে যান ইমরুল। রাজা সেটা বুঝতে পেরে অফসাইডে বল টার্ন করান। পরাস্ত হন ইমরুল। চিকাভা বল ধরে স্ট্যাম্পিং করতে এতটুকু সময় নেননি। গত ম্যাচেও উইলিয়ামসকে একইভাবে ফুলটস বানিয়ে খেলতে যেয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ওপেনার।

৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ক্রিজ ছেড়ে ক্রেমারকে লেটকাট করতে যেয়ে একটু আগে ব্যাট দিয়ে ফেলেন তামিম। বল যায়গায় ড্রপ করে কিপারের হাতে চলে যায়। চুল পরিমাণ সময়ের ব্যবধানে স্ট্যাম্পিং করেন আত্মবিশ্বাসী চাকাভা। ৯৮ বল খেলে ৭৩ রানের মাথায় ফিরতে হয় তামিমকে। গতকালও দারুণ কিপিং করেছিলেন এই উইকেটরক্ষক। তিনটি ক্যাচ ধরার পাশাপাশি ইমরুলকে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘর দেখিয়েছিলেন।

৩৮তম ওভারের শেষ বলে ওয়ালারকে উঠে এসে খেলতে যান মুশফিক (২৮)। ওয়ালার মুশফিককে উঠতে দেখেই অফসাইডে টেনে ‘কুইক ডেলিভারি’ দেন। মুশফিক উপায় না দেখে লেটকাটের একটা শেষ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। বল ধরেই স্ট্যাম্প ছত্রখান করেন উইকেটরক্ষক চিকাভা।

এদিকে আজও রান পাননি লিটন দাস। ব্যক্তিগত ১৭ রানের মাথায় সাজঘরে ফেরেন তিনি। প্রথম ম্যাচে ০, দ্বিতীয় ম্যাচে ৭ রানে ফেরেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান। ৪৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ক্রেমারের শরীরের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি রুম করে এক্সট্রা কাভার দিয়ে উড়িয়ে মারতে যান লিটন। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে চোখজুড়ানো ক্যাচ নেন উইলিংটন মাসাকাদজা।

বড় স্কোর গড়ার ছন্দপতন ঘটে এরপরই। এসেই ফিরে যান নাসির-সাব্বির। ৪৪তম ওভারের চতুর্থ বলে জংউইর লোভনীয় শট বলে ফিল্ডারের অবস্থান মাথায় না রেখে ব্যাট চালান সাব্বির (১)। পয়েন্টে ছিলেন ক্রেমার। মাথার উপর দিয়ে চলে যেতে থাকা বল লাফিয়ে ধরে ফেলেন তিনি। এক বল বাদে একটু নিচু হয়ে আসা শট বলে একইভাবে মারেন নাসির (০)। এবারও পয়েন্টে ক্রেমারের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

শেষ দিকে ‘পড়ে পাওয়া জীবন’ পেয়ে স্কোর নিরাপদ করার চেষ্টা করেন রিয়াদ। ‘রানআউট’ ভেবে পথ ধরেছিলেন। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা যায় আগেই বেল ফেলে দিয়েছেন চাকাভা। ওদিকে যতক্ষণে তিনি স্ট্যাম্প উঁচিয়ে ধরেন, বল ডেড হয়ে যায়। তৃতীয় আম্পায়ার এনামুল হক মনি নটআউট ঘোষণা করেন রিয়াদকে।

পরে মাশরাফি(১৬) রিয়াদকে নিয়ে ৩৭ রানের কার্যকরী জুটি গড়েন। ৪৮তম ওভারের শেষ বলে পানিয়াঙ্গারার শট বলে পুল করতে যেয়ে প্লেডঅন হন মাশরাফি। বল তার অনুমানের চেয়ে বেশ খানিকটা নিচু হয়ে আসায় লাইন মিস হয়ে যায়। এরপর সানিকে নিয়ে রিয়াদ স্কোর টেনে নেন ২৭৬ পর্যন্ত। এক বল বাকী থাকতে রানআউট হয়ে ফেরার আগে রিয়াদ ৬৫ বলে করে যান ৫২।

সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আজ জয় পেলে প্রতিপক্ষকে এগারতম হোয়াইটওয়াশ করার যোগ্যতা অর্জন করবে মাশরাফি বাহিনী।

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ জয় পায় ১৪৫ রানের। দ্বিতীয় ম্যাচে ৫৮ রানের জয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।


শেয়ার করুন