নুর আহমদ আনোয়ারীর ৯ প্রস্তাবনা

হোয়াইক্যংয়ে স্থগিত দুই ভোটকেন্দ্রের পুন:নির্বাচনে শংকা

বিশেষ সংবাদদাতা:
টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের স্থগিত দুই কেন্দ্রের পুন:নির্বাচন নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী। ভোটকেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার; বহিরাগতদের দিয়ে কেন্দ্র দখল, ভোটের আগে এজেন্টদের ঘরছাড়া করার কৌশলসহ নানা খবর যাচ্ছে তার কানে।
এমতাবস্থায় স্থগিত দুইটি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অবাধ ও নিরপেক্ষ করার দাবি জানিয়েছেন নুর আহমদ আনোয়ারী।
এ জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেণ নিতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসক ও জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর পৃথক আবেদন করেছেন। সেখানে ৯টি প্রস্তাবনা পেশ করেছেন তিনি।

প্রস্তাবনাসমূহ হলো-
১. ব্যালট পেপার ও ব্যালট বাক্সগুলো রাতের পরিবর্তে ভোটের দিন ভোরে কেন্দ্রে পাঠানো
২. সুনির্দিষ্ট ভোটারের বাইরে প্রার্থী, এজেন্ট, গণমাধ্যমকর্মী ও নির্বাচন গ্রহণে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি ছাড়া ভোটকেন্দ্রে কাউকে প্রবেশ করতে না দেওয়া
৩. প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিগণ যেন কারো বাসায় মেহমান হয়ে রাত্রি যাপন না করেন। তারা নির্ধারিত কেন্দ্রেই রাতে থাকবেন।
৪. প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের জন্য বাছাইকৃত (বিতর্কমুক্ত) যোগ্য ও দক্ষ প্রিজাইডিং এবং সহকারী প্রিজাইডিংসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ
৫. প্রতিটি কেন্দ্রের জন্য অন্তত ১ জন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পর্যাপ্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিযুক্তকরণ
৬. স্ট্রাইকিংফোর্স হিসেবে ‘স্ট্যান্ডবাই’ র‌্যাব ও বিজিবি নিয়োগ করা
৭. যে কেন্দ্রের ভোট সে কেন্দ্রে গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা দেওয়া
৮. নির্দিষ্ট দুইটি ভোটকেন্দ্রের ভৌগলিক সীমারেখার মধ্যে কোন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ করা
৯. ভোটগ্রহণ অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা হবে মর্মে ভোটারদের আশ^স্থ করা। সেই লক্ষ্যে ভোটকেন্দ্র ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি।

এ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর হোয়াইক্যং ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আমি চশমা প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলাম। ইউনিয়নের মোট ১১টি কেন্দ্রের মধ্যে ৯ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ সুষ্ঠু হয়েছে। নির্বাচনে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা অত্যন্ত নিরপেক্ষ ছিল। বিভিন্ন গণমাধ্যমেও সেভাবে প্রচার হয়েছে। কিন্তু উনছিপ্রাং সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র ও লম্বাবিল এমদাদিয়া মাদরাসা ভোটকেন্দ্রে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। ভোট শুরুর আগেই ব্যালট পেপার গায়েব হয়ে যায়। এ নিয়ে প্রার্থীদের পাশাপাশি সাধারণ জনগণও উত্তেজিত হয়ে ওঠে। আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটে। যার কারণে দুইটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে প্রশাসন। স্থগিত দুই কেন্দ্র বাদে ৯কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর চেয়ে আমি ২৩৮৩ ভোটে এগিয়ে আছি।
চেয়ারম্যান প্রার্থী নুর আহমদ আনোয়ারী আশংকা প্রকাশ করে বলেন, স্থগিত দুই কেন্দ্রের পুণ:নির্বাচনে ‘গায়েরজোরে জেতা’র কথা ভাবছে আমার প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকার প্রার্থী। যে কোন কৌশলে ভোট কেটে নেবে বলে নানা মাধ্যমে খবর আসছে।

তিনি বলেন, আমার কোন ভোটারকে কেন্দ্রে ঢুকতে দিবে না; ভোটের আগে এজেন্টদের ঘরছাড়া করবে, কেন্দ্রে বসতে দিবে না- এরকম প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী ও তার লোকজন। এমন খবরে সংশয় ও আতংক বিরাজ করছে এলাকায়। ভোট নিয়ে উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা।

যে ঘটনার প্রেক্ষিতে ভোট স্থগিত করা হয়েছে সে ধরনের ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে জানিয়েছে স্থানীয়রা। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের মাঝে আস্থা ফেরাতে এবং ভোটের উৎসব ধরে রাখতে প্রশাসনের নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি ভোট গ্রহণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি মনে করছে তারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে কোন নির্দেশনা আসে নি। সিদ্ধান্ত আসার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তার আগে আপাততঃ কিছু বলা যাচ্ছে না।


শেয়ার করুন