হিসাব মিলছে না গোলাম মাওলা রনির

123896_1সিটিএন ডেস্ক :

সাবেক সংসদ সদস্য এবং কলামিস্ট গোলাম মাওলা রনি এক নিবন্ধে লিখেছেন তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, পতিত স্বৈরশাসক এইচএম এরশাদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চরিত্রের কিছু দিক নিয়ে হিসাব মেলাতে পারছেন না।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই পাঁচ প্রয়াত এবং জীবিত নেতাই সম্ভবত সবচেয়ে আলোচিত।

শুক্রবার দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রকাশিত এক নিবন্ধে গোলাম মাওলা রনি লিখেছেন, ‘আমি হিসাব মেলাতে পারি না কেন ১৯৭৩ সালের সংসদ নির্বাচনে খোন্দকার মোশতাককে জিতিয়ে আনার জন্য প্রথমে ব্যালট বাক্স ডাকাতি করা হয়েছিল এবং সেই সব লুট করা ডাকাতির পণ্য রাষ্ট্রীয় হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়েছিল। কেন ইতিহাসের মহানায়ক (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) পাগলা ঘোড়া দাবড়ায়্যা দিয়েছিলেন এবং সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন কোথায় সিরাজ শিকদার।

‘আমি মাঝে মধ্যে নিজেকে প্রশ্ন করি কেন অগ্নিকন্যা মতিয়া চৌধুরী বঙ্গবন্ধুকে এতটা ঘৃণা করতেন। বঙ্গবন্ধুর চামড়া খুলে ঢোল বানানোর স্বপ্ন এবং বঙ্গবন্ধুর হাড্ডি দিয়ে সেই ঢোল ডুগডুগির মতো বাজানোর ইচ্ছে তার কেন হয়েছিল?’

‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর কোথায় ছিল রক্ষীবাহিনী এবং সেই বাহিনীর জুলুমবাজ প্রতিষ্ঠাতারা?’

‘জিয়াউর রহমান কেন বঙ্গবন্ধুর খুনিদের জামাই আদর করে বিভিন্ন দেশের দূতাবাসে বড় বড় পদে নিয়োগ দিলেন এবং রাজনীতিতে মানি ইজ নো প্রোবলেম থিওরির জন্ম দিলেন।’

‘এরশাদ কেন ক্ষমতায় এসে সাইকেলে চড়ে অফিসে গেলেন এবং হঠাৎ করে কবি হওয়ার চেষ্টা করলেন? তিনি কেন রোজ রাতে মসজিদ স্বপ্নে দেখতেন এবং সেই স্বপ্নের মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করার জন্য উপস্থিত হতেন?’

‘বেগম জিয়া কেন ১৫ আগস্ট জন্মদিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিলেন এবং প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর অতিমাত্রায় গোলাপি রঙের প্রতি দুর্বলতা দেখাতে লাগলেন? লুৎফুজ্জামান বাবর কেন লুকিং ফর শত্রুজ বললেন এবং মহীউদ্দীন আলমগীর কেন রানা প্লাজা ধাক্কাধাক্কি করে ফেলে দেয়ার তত্ত্ব আবিষ্কার করলেন?’

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন বিদেশি ডিগ্রি এবং সনদের প্রতি দুর্বলতা অনুভব করেন?’

অভিনবত্বের সাথে নেতা-নেত্রীদের এ ধরনের চরিত্র বিশ্লেষণ করে রনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের বড় বড় মানুষের অনেক ছোট ছোট কাহিনী রয়েছে যা দিয়ে রীতিমতো অনেকগুলো মহাকাব্য রচনা করা যাবে।

আমরা আর ওদিকে অগ্রসর না হয়ে বরং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বলি- ‘হে আমাদের পরওয়ারদিগার, আমাদের দেশের বড় বড় মানুষকে তুমি সত্যিকার অর্থে বড় বানিয়ে দাও। জ্ঞান-গরিমা, উদারতা, প্রজ্ঞা এবং হেদায়েত দ্বারা তুমি তাদের মন-মস্তিষ্ককে পূর্ণতা দান করো এবং তাদের বক্ষকে প্রসারিত করে দাও। আশরাফুল মাখলুকাতের সব মানবীয় গুণ তাদের চরিত্রে সন্নিবেশ করিয়ে দাও এবং তাদেরকে মানুষ হিসেবে জমিনের জন্য উত্তম কর্ম করার তাওফিক দাও। পাপাচার, অনাচার, অত্যাচার এবং অবিচার থেকে তারা যেন নিজেদের রক্ষা করতে পারে সেই তাওফিক তাদেরকে দাও- আবার তাদের ওসব কর্ম থেকে যেন জনগণ রক্ষা পেতে পারে সেই ব্যবস্থা করে দাও।

ইয়া আল্লাহ! আমাদের বড় বড় মানুষকে লোক হাসানো কর্ম, বালখিল্যময় কথাবার্তা এবং নিম্নমানের অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন থেকে হেফাজত করো। তাদেরকে বুদ্ধি দাও। তাদেরকে শান্ত করে দাও এবং তাদের স্যাডিস্ট ভাব দূর করে দাও। তাদের চেহারার উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করো এবং এমন একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দাও যাতে করে তাদেরকে দেখলে যেন আমাদের মনে মায়ার উদ্রেক হয় এবং আমাদের জন্য তাদের অন্তরে যেন মহব্বত পয়দা হয়ে যায়।’ আমিন। ছুম্মা আমিন।’


শেয়ার করুন