হিযবুত তাহরীরের পৃষ্ঠপোষক হাসনাত করিম

04-7-300x166সিটিএন ডেস্ক

হিযবুত তাহরীরের পৃষ্ঠপোষকতার কারণেই হাসনাত রেজা করিম নর্থ সাউথ ইউনির্ভাসিটি থেকে চাকরিচ্যুত হয়েছিলেন। ২০১২ সালে তাকেসহ চার জন শিক্ষককে এই কারণে অব্যহতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২০১২ সালের জুনের শেষ ভাগে এই ঘটনা ঘটে। সে সময়ে অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে।

সেই কমিটির রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতেই অব্যহতি দেওয়া হয় হাসনাত রেজা করিম সহ চার জনকে। বিশ্ববিদ্যালয়টির বিজনেস ফ্যাকাল্টির শিক্ষক ছিলেন হাসনাত করিম ওই বিভাগেরই শিক্ষার্থী ছিলেন গুলশানের হোলি আর্টিসান বেকারিতে হামলাকারীদের একজন নিব্রাস ইসলাম।

ধারণা করা হচ্ছে, নিব্রাসের সঙ্গে হাসনাত রেজা করিমের যোগাযোগ তখন থেকেই ছিলো। ২০১২ সালের মে মাসে প্রকাশিত বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি কোর্সের নম্বরপত্রে নিব্রাসের নাম রয়েছে।

আর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হাসনাত রেজা করিম চাকরিচ্যুত হয় ২০১২ সালেরই জুন মাসে।

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে হিযবুত তাহরীরের কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার নজির আগে থেকেই রয়েছে।

সোশ্যাল মিডিয়া রাইটার রাজিব হায়দার হত্যাকাণ্ডে জড়িতরাও ছিলো এই গ্রুপেরই সদস্য যাদের কেউ কেই নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

গুলশানের হোলি আর্টিসানে হত্যাকাণ্ডের সময় নর্থসাউথের সাবেক এই শিক্ষককে দোতলার বারান্দায় সিগারেট ফুঁকতে দেখা গেছে।

সে সময় তার পিছনে দুই জঙ্গি মাথা নিচু করে হাঁটছিলো। এছাড়াও তাকে কাচের দরজার ওপাশে রাইফেল হাতে এক জঙ্গির পাশে দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে কথা বলতে দেখা গেছে।

আর জঙ্গি নাটকের অবসানের সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে নির্বিকারভাবেই বের হয়ে আসতেও দেখা যায় তাদের।

তবে ঘরে ফিরতে পারেন নি হাসনাত রেজা করিম। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে। তখন থেকে ৫৬ ঘণ্টা যাবত তিনি গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়েই রয়েছেন।

সন্দেহের কারণেই তাকে গোয়েন্দা হেফাজতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের নির্ভরযোগ্য সূত্র।
গোয়েন্দ সূত্র জানায়, তারা দুটি বিষয় বিবেচনায় রেখে এগুচ্ছেন।

এক এই হাসনাত করিমের সঙ্গে জঙ্গিদের যোগাযোগ ছিলো। তবে এমনও হতে পারে জঙ্গিদের একজন একসময় তার বিভাগের সরাসরি শিক্ষার্থী থাকায় তাকে মুক্ত করে দিয়েছে।

যদিও হাসনাত করিমের পরিবার এর আগে সংবাদমাধ্যমকে বলেছে, কোরআন শরীফ থেকে পাঠ করতে পারার সুবাদেই তারা মুক্তি পেয়েছিলেন।

এদিকে হাসনাত করিম এখন অফিসিয়ালি কর্মরত রয়েছেন বেসিক ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে।

এই প্রতিষ্ঠানের বোর্ড অব ডিরেক্টরস-এ তার নাম রয়েছে। আর নামগুলো পড়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি হতে পারে তাদের পারিবারিক ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান।

ওই প্রতিষ্ঠানের কি ম্যানেজমেন্টের তালিকায় নাম রয়েছে আনোয়ারুল করিম নামের একজন। বাংলানিউজের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার

দুপুরে টেলিফোন করে হাসনাত করিমের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।

হাসনাত রেজা করিম ঘুরে এসেছেন কাতারেও। এই সফরের তার উদ্দেশ্য কি ছিলো তা কোথাও জানা যায়নি।

জিম্মি নাটকের রাতে ও সকালে তাকে যে টিশার্ট ও ন্যাড়া মাথায় হোলি আর্টিসানে দেখা গেছে একই টি-শার্ট পরা তার একটি ছবি রয়েছে ওই সফরের সময়েরও।

এদিকে হাসনাত করিমকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে উঠেছে নানা প্রশ্ন। একজন প্রশ্ন তুলেছেন- কে এই হাসনাত আর করিম? জিম্মি নাকি জিম্মিকারী জঙ্গি নেতা?

উঠে এসেছে নানা যুক্তিও।
একজন বলছেন, হাসনাত রেজা করিম নর্থ-সাউথ ভার্সিটির বিজনেজ ফ্যাকাল্টির শিক্ষক। নিব্রাস ইসলামও একই ফ্যাকাল্টির ছাত্র। অর্থাৎ তাদের ভিতরে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক।

এছাড়া জঙ্গিদের আরও একজন ছিলো নর্থসাউথ বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।

ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দার হত্যার সাথে জড়িত সন্দেহে নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ ছাত্র আটকের বাংলানিউজে প্রকাশিত

একটি লেখায় তুলে ধরা হয়েছিলো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষে জন্ম নেয়া জঙ্গিদের কথা। যেখানে শিক্ষক ও ছাত্র উভয়ই জঙ্গি।


শেয়ার করুন