স্বামীকে মাটিচাপা, ১৬ দিন পর লাশ উদ্ধার

121_111459চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলাধীন শাহ্রাস্তিতে স্বামীকে হত্যা করে সন্তানের সহযোগিতায় মাটি চাপা দিয়েছে এক পাষ- স্ত্রী। নির্মম এ ঘটনাটি ঘটেছে, উপজেলার মেহের উত্তর ইউনিয়নের নয়নপুর বেপারী বাড়িতে। ঘটনায় ১৬দিন পর রবিবার স্ত্রীর স্বীকারোক্তিতে বাড়ির পাশ্ববর্তী জমি থেকে স্বামী জামাল হোসেনের (৪০) গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

নিহত জামাল হোসেন ওই বাড়ির মৃত আঃ হাকিমের ছেলে।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত ১৪ এপ্রিল থেকে স্বামী নিখোঁজ রয়েছে বলে ২৮ এপ্রিল শাহরাস্তি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন ফাতেমা বেগম হ্যাপি (৩৫)। যার নং-১০৭৬। ডায়েরি করার পর থানা পুলিশ নিখোঁজ ব্যক্তির সন্ধানের জন্য বিভিন্ন থানাকে জানায়। পরে বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হলে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে পুলিশ। অপরদিকে ফাতেমা বেগম ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তার এক নিকটাত্মীয় আমির হোসেনের স্বরণাপন্ন হন। আমির হোসেন ফাতেমার সঙ্গে কথা বলে কিছুটা অনুমান করতে পেরে শাহরাস্তি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মমর্তা মোঃ মিজানুর রহমানকে অবগত করেন। পরে শাহরাস্তি গেইট দোয়াভাঙ্গা এলাকায় আমির হোসেন ফাতেমা বেগমকে কৌশলে ডেকে থানা হতে সাধারণ ডায়েরি উত্তোলনের নাম করে ওসি মিজানুর রহমানের পরিচয় গোপন করে তার সঙ্গে থানায় পাঠিয়ে দেন। এরপর ওসি ওই নারীকে থানায় এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে হত্যার কথা স্বীকার করে এবং লাশ মাটি চাপা দেয়ার বিবরণ দেন। তার স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে শাহরাস্তি মডেল থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান, উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মো আবদুল মান্নান, মো. নিজাম উদ্দিন, সমীর মজুমদার ও মো. কামাল হোসেন ফোর্স নিয়ে বাড়ির পশ্চিম পাশের জমি থেকে গর্ত খুঁড়ে গলিত লাশ উত্তোলন করেন। এ সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে হাজার হাজার নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে ভিড় জমান। এদিকে নিহতের ভাই আজাদ হোসেন জানান, আমার ভাই ১ পুত্র ও ২ কন্যা সন্তানের জনক। তিনি পারিবারিকভাবে সুখেই ছিলেন। আমার ভাবির পরকীয়ার জেরে বিভিন্ন সময় ভাইয়ের সঙ্গে বাকবিত- হতো। তার পরকীয়ার কারণেই আমার ভাই এ নির্মম হত্যার শিকার হয়েছে।

এ বিষয়ে শাহরাস্তি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মিজানুর রহমান জানান, প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে ফাতেমা জানায়, ঘটনার রাতে তার স্বামীর জন্ডিসের ঔষুধের সঙ্গে ৮টি ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে দেন। স্বামী গভীর ঘুমে থাকাবস্থায় বালিশ চাপা দিয়ে তাকে হত্যা করে হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে থাকা তার ৯ম শ্রেণিতে পড়–য়া পুত্র জাহিদুল ইসলাম ফাহিমকে (১৩) ডেকে তোলে তার বাবা আত্মহত্যা করেছে বলে জানায়।

দিনের বেলায় স্থানীয়দের বিষয়টি বিশ্বাস করাতে পারবে না বলে রাতেই বাড়ির পশ্চিম পাশের জমিতে মাটি চাপা দেবে বলে ছেলেকে রাজি করে। এরপর মা ও ছেলে দুজনে মিলে তার লাশ মাটি চাপা দেয়।

ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় স্ত্রী ফাতেমা বেগম হ্যাপী ও ছেলে থানায় আটক রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় আমজাদ হোসেন বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে।


শেয়ার করুন