স্বপ্ন পূরণ হলো না মিরাজদের

ctn gameসিটিএন ডেস্ক:

ফাইনালের স্বপ্ন পূরণ হলো না বাংলাদেশের। টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ফর্মে থেকে প্রথমবারের সেমিফাইনালে উঠেও নিজেদের মাঠে ফাইনাল খেলা হলো না মিরাজদের। শেষ মুহূর্তে কিছুটা উত্তেজনা ছড়ালেও কোনোভাবেই আর ফিরে পাওয়া হলো না সে স্বপ্ন। মিরপুরে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্যারিবীয় যুবাদের কাছে ৩ উইকেটে হেরে তাই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিতে হলো টাইগার যুবাদের। আর স্বপ্নময় এক জয় নিয়ে ফাইনালে উঠে তাক লাগিয়ে দিল প্রস্তুতি পর্বে বাংলাদেশের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়া ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বৃহস্পতিবার সকালের কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় টসে জিতে মিরাজদের প্রথমেই ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত যে কতটা ভুল ছিল, তা বোঝা যায় বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা দেখলে। সকালের স্লো কন্ডিশনের মাঠে কোনোভাবেই যেন বল পার করা যাচ্ছিল না। ম্যাচের শুরুতে তাই ভালো একটা স্কোর দাঁড় করানোর আগেই একে একে সাজঘরে ফিরে গেছেন প্রথম সারির ব্যাটসম্যানরা। ১১৩ রানের মধ্যে যখন ৫টি উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ খাদের কিনারে, তখনই সেখান থেকে মোটামুটি সম্মানজনক স্কোরের দিকে নিয়ে যান অধিনায়ক মিরাজ। নির্ধারিত ৫০ ওভারের শেষ বল পর্যন্ত খেলে এদিন বাংলার যুবারা সব উইকেট হারিয়ে ফেলে; রান করে ২২৬।

এর আগে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামের শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্রুতই উইকেট হারাতে থাকে। এতে কিছুটা চাপ তৈরি হয়। তবে জয়রাজ শেখের ব্যাটে ভর করে ভালোই এগোচ্ছিল বাংলাদেশ। তার উইকেট হারানোর পর অনেকটা সেট ব্যাটসম্যান জাকির হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক মিরাজ নিজেই। দলীয় শত রান পূরণ করার পর ২৮ ওভারের প্রথম বলে ২৪ রানে আউট হয়ে যান জাকির। এ উইকেটটি হারানোর পর মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান সাইফুদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে ক্রিজে থেকে চাপ সামলে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মিরাজ। পলের বলে আউট হওয়ার আগে ৭৪ বলে তিনি করেন ৬০ রান। এটি দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এরপর মুসাদ্দেক, মেহেদী হাসান রানা আর সালেহ আহমেদ শাওন খেলেছেন নির্ধারিত ৫০ ওভারের শেষ বল পর্যন্ত। এ দিনে বাংলাদেশ ইনিংসের একমাত্র ছক্কাটি হাঁকান শেষ ব্যাটসম্যান শাওন।

জয়ের জন্যে ২২৭ রানে লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম থেকেই মারমুখী ব্যাট করতে থাকা ক্যারিবীয় দুই ওপেনার পোপ ও ইমলাচ জুটি করেন প্রায় অর্ধশত রানের। দলীয় ৪৪ রানের সময় ওপেনিংয়ে নামা ১২ বলে ১৪ করা ইমলাচের উইকেট নিয়ে ক্যারিবীয়দের প্রথমে হোঁচটটি খাওয়ান মিরাজ। এরপর দুর্দান্ত সূচনা করা ওপেনিং ব্যাটসম্যান গিডরন পোপকে বোল্ড করে রানের লাগাম টেনে ধরেছিলেন বাংলাদেশের এই যুবা অধিনায়ক। তবে পোপ সাজঘরে ফেরার আগে দুই ছক্কা আর ৫ চারের সাহায্যে করেন ২৫ বলে ৩৮ রান। এরপর নিয়মিত বিরতিতে ৩ উইকেট নেন সালেহ আহমেদ শাওন। অবশ্য ৩৭ ওভারে সময় শাওনের পরপর নেয়া দুটি উইকেটই ফাইনালে হাতছানি দিচ্ছিল বাংলাদেশের সামনে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শামার স্প্রিংগারের নির্ভরযোগ্য ব্যাটিংয়ে ৮ বল হাতে রেখেই জয় তুলে ফাইনাল নিশ্চিত করে মাঠ ছেড়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্প্রিংগার অপরাজিত ৬২ রান করেন। এছাড়া বল হাতে ২ উইকেটও নিয়েছেন তিনি। সেই সুবাদে সেমিফাইনালের ম্যাচসেরাও হয়েছেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ যুব দল : ২২৬/১০, ওভার ৫০ (মিরাজ ৬০, সাইফুদ্দিন ৩৬, জয়রাজ ৩৫; কিমো পাউল ৩/২০, হোল্ডার ২/৩৬, স্প্রিংগার ২/৩৬)

ওয়েস্ট ইন্ডিজ যুব দল : ২৩০/৭, ওভার ৪৮.৪ (স্প্রিংগার ৬২, হেটমেয়ার ৬০; শাওন ৩/৩৭, মিরাজ ২/৪৬, সাইফুদ্দিন ২/৫৭)


শেয়ার করুন