সুদের অভিশাপেই পৃথিবীতে খাদ্যের সংকট!

35355_98957_79664-400x244সিটিএন ডেস্ক:

 ১৬ অক্টোবর বিশ্ব খাদ্য দিবস। খাদ্য মানুষের মৌলিক অধিকার। শুধু মানুষ কেন হবে; সকল প্রাণীরই বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন খাদ্য। আমাদের সমাজেও পাথর চাপা দিয়ে বাস করে দারিদ্র। অভাব অনটন আমাদের নিত্যসঙ্গী। অনাহার অর্ধহার কিংবা ক্ষুধার আগুনে পুড়ছে মানুষ। উত্তর আধুনিক পৃথিবীর এতো উৎপাদন! বেঁচে থাকা এতো আয়োজন তবুও কেন প্রতিদিন ১৭ হাজার শিশুর মৃত্যু ঘটছে শুধু খাদ্যের অভাবে? কেন ৮০ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চরম ক্ষুধার অভিশাপ নিয়ে বেঁচে আছে? এটা কি খাদ্যের অভাব নাকি অসম বন্টন? বন্টন ব্যবস্থাপনার ত্রুটির জন্যই কি ক্ষুধার এই অভিশাপ? তাছাড়াও বলা যায় কৃত্রিম খাদ্য সংকট সমস্যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাস্তুবভিত্তিক ভোগবাদী মানসিকতা এবং রিজিকদাতা মহান আল্লাহর সঙ্গে অকৃতজ্ঞতা।
তবে জোর দিয়ে বলা যায়, সুদের অভিশাপই আজকের পৃথিবীতে খাদ্য সংকটের প্রধান কারণ। কেননা সুদ সম্পদকে ধ্বংস করে দেয় ও সম্পদের বরকত মুছে দেয়। কোরআন বলছে, আল্লাহ সুদকে মিটিয়ে দেন এবং সদকাকে বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ অতি কুফরকারী পাপীকে ভালোবাসেন না। সুরা বাকরা : ২৭৬
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন, আর তোমরা যে সুদ দিয়ে থাক, মানুষের সম্পদে বৃদ্ধি পাওয়ার জন্য তা মূলত; আল্লাহর কাছে বৃদ্ধি পায় না। আর তোমরা যে জাকাত দিয়ে থাক আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে (তাই বৃদ্ধি পায়) এবং তারাই বহুগুণ সম্পদ প্রাপ্ত। সুরা রুম : ৩৯
ইসলাম ইনসাফ ভিত্তিক সকল প্রাণীর খাদ্য নিশ্চিত করেছে। তবে মনে রাখতে হবে খাদ্য নিরাপত্তা আল্লাহর এক বিশেষ অনুগ্রহ। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, যেহেতু কুরাইশের আগ্রহ আছে, আগ্রহ আছে তাদের শীত ও গ্রীষ্মের সফরের, অতএব তারা ইবাদত করুক এই ঘরের (কাবা শরিফ) মালিকের, যিনি তাদের ক্ষুধায় খাদ্য দেন এবং ভয় থেকে নিরাপদ করেন। (সুরা কুরাইশ)
কোরআনুল কারিম আরও বলছে, আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন, তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে। সুরা হুদ: ৬
কোরআনুল কারিম আরও বলছে, আল্লাহর সাজ-সজ্জাকে, যা তিনি বান্দাদের জন্যে সৃষ্টি করেছেন এবং পবিত্র খাদ্রবস্তুসমূহকে কে হারাম করেছে? আপনি বলুন, এসব নেয়ামত আসলে পার্থিব জীবনে মুমিনদের জন্যে এবং কেয়ামতের দিন খাঁটিভাবে তাদেরই জন্যে। সুরা আরাফ: ৩২
পৃথিবীর সব জীবের রিজিক, জীবনযাত্রা নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান পরিবেশন করার দায়িত্ব আল্লাহ তায়ালার। (সুরা ইউসুফ)
কোরআন আরও বলছে, তারা কি জানেনি যে, আল্লাহ যার জন্য ইচ্ছা রিজিক বৃদ্ধি করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা পরিমিত দেন। নিশ্চয় এতে বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। সুরা যুমার: ৫২
কোরআন বলছে, আর এমন কত জীব-জন্তু রয়েছে, যারা নিজদের রিজিক নিজেরা সঞ্চয় করে না, আল্লাহই তাদের রিজিক দেন এবং তোমাদেরও। আর তিনি সর্বশ্রোতা, মহাজ্ঞানী। সুরা আনকাবুত : ৬০
কোরআন আরও বলছে, যে আমার স্মরণ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবিকা সংকীর্ণ হবে এবং আমি তাকে কেয়ামতের দিন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করব। (সুরা তহা : ১২৪)
এছাড়াও যাদের কাছে সম্পদ আছে তাদের জন্য কোরআনের উপদেশ হলো, ১৯ এবং তাদের ধন-সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতের অধিকার রয়েছে। সুরা যারিয়াত : ১৯
কাজে-কর্মে উৎসাহিত করতে কোরআন বলছে, অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা জমিনে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ রিজিক তালাশ করো। আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। সুরা জুমা : ১০
ওগো মাবুদ! সুদের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিন। আমাদের খাদ্য ও জীবনের নিরাপত্তা দিন।


শেয়ার করুন