সিরিয়ায় ব্রিটিশ ড্রোন হামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণ নিহত

100_38সিটিএন ডেস্ক :

সিরিয়ায় ব্রিটেনের ড্রোন হামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক তরুণসহ দুই ব্রিটিশ জঙ্গি নিহত হয়েছে। রুহুল আমিন এবং রিয়াদ খান নামে দুই ব্রিটিশ জঙ্গিকে ড্রোন হামলা চালিয়ে হত্যার কথা গতকাল ব্রিটিশ পার্লামেন্টে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।

এ নিয়ে এখন ব্রিটেনে রাজনৈতিক বিতর্কও চলছে। বিরোধী রাজনীতিকরা দাবি তুলেছেন, কিভাবে এই ড্রোন হামলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় তার বিস্তারিত জনসমক্ষে প্রকাশ করতে।

রুহুল আমিনের জন্ম বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলায়। কিন্তু বেড়ে উঠেছেন স্কটল্যান্ডের এবারডীনে।

২০১৪ সালের জুনে সিরিয়া থেকে ইন্টারনেটে আপলোড করা এক ভিডিওতে রুহুল আমিনকে দেখা যায় অপর দুই জঙ্গি রিয়াদ খান এবং নাসের মুথানার পাশে বসে থাকতে।

এবারডীনের বন্ধুদের ভাষ্য অনুযায়ী রুহুল আমিন একসময় ক্রিকেট খেলতেন। সঙ্গীত ভালোবাসতেন। নিয়মিত নাইট ক্লাবেও যেতেন। সিরিয়া যাওয়ার আগে কাজ করেছেন পিৎজা শপ, সেলুন এবং এক মশলার দোকানে।

রুহুল আমিনের বাল্যবন্ধু স্টিফেন মারভিন বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলছিলেন, ‘রুহুল আমিনের কোনো মৃত্যুভয় ছিল না। গত এক-দেড় বছরে সে ছিল একেবারে ভিন্ন এক ব্যক্তি। যদিও আমরা বাল্যকাল থেকে বন্ধু, তারপরও ওর জন্য আমার কোন সহানুভূতি নেই। কিন্তু তার পরিবারের জন্য আমার দুঃখ হয়।’

ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে সিরিয়া চলে যাওয়ার পরও রুহুল আমিনের সঙ্গে স্টিফেন মারভিনের যোগাযোগ ছিল।

‘সিরিয়ায় চলে যাওয়ার পর প্রথম যখন আমি তাকে ফোন করি, তখন ব্যাকগ্রাউন্ডে গুলির শব্দ শুনতে পাই। রুহুল আমিন বলছিল যে বিদ্রোহীদের সঙ্গে আছে। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তোমার গুলির ভয় করে না? ও বলেছিল, আমি যদি মরি তো আল্লাহর কাছে চলে যাব। শুনে আমি বেশি ধাক্কা খেয়েছিলাম। ওর মধ্যে মৃত্যুর কোনো ভয় ছিল না।’

স্টিফেন মারভিন জানিয়েছেন, রুহুল আমিন জঙ্গিবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন বার্মিংহ্যামে আসার পর।

‘আমি শুনেছি যে ওর মগজ ধোলাই করা হয়েছে। বার্মিংহ্যামে কিছু লোকের সঙ্গে তার দেখা হয়। এরা তাকে সিরিয়ায় যাওয়ার প্রস্তাব দেয়।’

সিরিয়ায় গিয়ে ও একটা ‘কোরআন ক্যাম্পে’ যোগ দেয়। সেখানে তিন মাস ছিল। এরপর তাকে আরেকটা সামরিক ক্যাম্পে পাঠানো হয় তিন মাসের জন্য।

স্টিফেন মারভিন বলেন, রুহুল আমিন যে এভাবে জঙ্গিতে পরিণত হলো, সেখানে তার পরিবারের কোনো দোষ নেই।

বাল্যবন্ধুর এই পরিণতিতে আঘাত পেলেও বন্ধুর জন্য কোনো সহানুভূতি নেই স্টিফেন মারভিনের। কারণ তিনি মনে করেন, গত এক-দেড় বছরে তার বন্ধু পুরোপুরি বদলে গিয়েছিলেন।

 


শেয়ার করুন