সিটি নির্বাচন : জয়-পরাজয়ের সাতকাহন!

গোলাম মাওলা রনি

বাংলাদেশের সবকিছুর বাজার ইদানীং বেশ গরম হয়ে উঠেছে। এই গরম সেই গরম নয়। অর্থাৎ বৈশাখ মাসের রৌদ্র, জতুগৃহের আগুন কিংবা কয়লার অঙ্গারের তাপদাহ নয়- এই আগুন হলো ভাবের আগুন। আমোদপ্রিয় বাঙালির গত কয়েক বছরের দুঃখ-কষ্ট দূর করার জন্য তাদের ত্রাণকর্তারা ভাবের আয়োজন করেছেন। সিটি করপোরেশন নির্বাচন ২০১৫ নামের সেই ভাবের আগুনে সারা দেশ বেশ গরম হয়ে পড়েছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণসহ চট্টগ্রামের প্রায় তিন কোটি মানুষ এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ২৮ এপ্রিলের নির্বাচনকে ফলপ্রসূ করার জন্য। এখন প্রশ্ন হলো- এ নির্বাচন কতটুকু ফলপ্রসূ হবে! চট্টগ্রামের কথা বলতে পারব না, তবে ঢাকা নিয়ে আমার মূল্যায়ন আপনাদের হয়তো খারাপ লাগবে না।
ঢাকা নগরীর সম্ভাব্য প্রার্থীরা দিন-রাত গণসংযোগ করছেন। কেউ কেউ এমন সব কথা বলছেন তাতে মনে হচ্ছে তারা হয়তো মেয়র হয়েই গেছেন। তাদের এই ভাবসাব দেখে তাদের আপনজনদের খুশির সীমা নেই। টেলিভিশনগুলো দিন-রাত সেসব খবর প্রচার করছে এবং পত্রিকাওয়ালারা মজার মজার সব তথ্য-উপাত্ত দিয়ে পুরো জাতিকে বিনোদন দিচ্ছে। আর এসব কা-কারখানা দেখে নিশ্চিত বিজয়ী প্রার্থীদের বিরুদ্ধপক্ষ হিংসায় গড়াগড়ি খাচ্ছে। কেউ কেউ গয়া-কাশি বা অন্য কোনো পুণ্যভূমিতে গিয়ে মনের বেদনা লাঘব করার উপায় খুঁজছে। কিন্তু বাস্তব অবস্থার গভীরে ঢুকে আসল ঘটনার সন্ধান করছে এমন লোকের সংখ্যা কয়জন আছে তা আমি বলতে পারব না।
যারা প্রার্থীদের গণসংযোগ নিয়ে উল্লসিত তারা হয়তো হিসাব করে দেখেননি যে, ঢাকার মোট অলিগলি-রাস্তাঘাট, পুল-কালভার্ট এবং ফুটপাথের দৈর্ঘ্য প্রায় ২০ হাজার কিলোমিটার। সারা দেশে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মোট রাস্তার পরিমাণ মাত্র ২১ হাজার কিলোমিটার আর এলজিইডির রাস্তার পরিমাণ প্রায় ৮০ হাজার কিলোমিটার। একজন প্রার্থী ৪ কিলোমিটার বেগে যদি অনবরত হেঁটে দৈনিক ৪ ঘণ্টা সময় পার করেন তবে তিনি মাত্র ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারবেন। অন্যদিকে তিনি যদি আগামী ১০ দিন ধরে এ কাজটি করেন তবে মাত্র ১৬০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব এবং সে ক্ষেত্রে প্রার্থীকে পরপারে যেতে না হলেও হাসপাতালে যেতে হবে। কারণ পরিশ্রমের পাশাপাশি তার শরীর থেকে ১০ দিনে কম করে হলেও দেড় মণ পানি ঘাম হয়ে ঝরে পড়বে। আপনারা যদি একটু গভীরভাবে চিন্তা করেন তবে বুঝবেন আগামী ১০ দিনে একজন প্রার্থী সর্বোচ্চ ২০-২২ কিলোমিটার পথ হাঁটবেন বা হাঁটতে পারবেন।
এবার চিন্তা করুন কেমন গণসংযোগ হচ্ছে! আপনি যদি একজন লোকের সঙ্গে হাত মেলান, একটু কোলাকুলি করেন, দু-একটা কথাবার্তা বলেন তাহলে কম করে হলেও ৫ মিনিট সময় লাগবে। ৪ ঘণ্টায় আপনি মাত্র ৪৮ জন লোকের সঙ্গে মোলাকাত করতে পারবেন। ১০ দিনে পারবেন ৪৮০ জন লোকের সঙ্গে সংযোগ করতে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, রাস্তায় আপনি যাদের সঙ্গে মোলাকাত করলেন তারা হয়তো কেউই আপনার এলাকার ভোটার নন, এমনকি ঢাকার ভোটারও নন। আপনার আন্তরিকতা এবং নেতা-কর্মীদের তালিয়ার শব্দে আপনি যেমন একবারও জিজ্ঞাসা করতে পারলেন না- ভাই কি ঢাকার ভোটার! তদ্রূপ লোকটিও লজ্জার কারণে বলতে পারলেন না যে তিনি ভোটার নন।
আপনারা যারা ইতিমধ্যে মেয়র হয়ে গেছেন কিংবা বিপুল ভোটে পছন্দের মানুষকে মেয়র বানিয়ে ফেলেছেন তারা দয়া করে ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ অংশের ভোট, ভোটার এবং প্রার্থী সম্পর্কে একটু চিন্তা করলেই অনেক কিছু বুঝতে পারবেন। দক্ষিণে মোট ভোট প্রায় সাড়ে ২৮ লাখ। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সারা দেশে গড় ভোটের হার যথাক্রমে ৩৩% ও ৩১%। ঢাকায় উভয় দলের ভোটের হার সারা দেশের গড় হারের চেয়ে কম। আবার বিএনপির ভোট আওয়ামী লীগের চেয়ে কম করে হলেও ৫% বেশি। বিএনপির ভোট ঢাকা নগরীতে ৩০% হলে আওয়ামী লীগের মাত্র ২৫%। আওয়ামী লীগ যেহেতু ক্ষমতায় তাই ডরে-ভয়ে আমি না হয় ভোটের হার আরও ৫% বৃদ্ধি করে দিলাম। উভয় দলের যদি মহানগরীতে গড়ে ৩০% ভোট থাকে তবে একেক প্রার্থীর রিজার্ভ ভোট প্রায় ৫ লাখ ৫৫ হাজার।
এখন আপনি কাস্টিং ভোটের হিসাব করুন। ধরুন শতকরা ৫০ ভাগ ভোট কাস্ট হলো। সে ক্ষেত্রে উভয় প্রার্থী পাবেন সর্বোচ্চ পৌনে ৪ লাখ ভোট। অঙ্কের এই হিসাবের পরবর্তী ভয়াবহ ধাপ হলো- দুটি দলের কেউই তাদের রিজার্ভ ভোটের ৫০% ভোটও পাবেন না। কারণ দলীয় রাজনীতির কূটকৌশল এবং অভ্যন্তরীণ হানাহানি, মতবিরোধ, স্বার্থের সংঘাত এবং পদ-পদবির লড়াইয়ের কারণে উভয় প্রার্থীরই তাদের নিজেদের দলের ছয়-সাত জন অতিগুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী নেতার সঙ্গে দা-কুমড়া সম্পর্ক রয়েছে। উভয় প্রার্থীর যে কোনো একজন জয়লাভ করলে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীদের রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং প্রভাব-প্রতিপত্তি মারাৎদক হুমকির মধ্যে পড়বে। ফলে এসব প্রতিদ্বন্দ্বী তাদের দলীয় প্রধানের শক্ত নির্দেশ সত্ত্বেও তাদের জন্য যা করা দরকার তাই করছেন। ফলে শেষ অবধি উভয় প্রার্থী যদি তাদের রিজার্ভ ভোটের মাত্র ৫০ ভাগ নিজেদের পক্ষে আনতে পারেন তবে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা হবে মাত্র ১ লাখ ৩৮ হাজারের মতো।
ঢাকা দক্ষিণের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের যে অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে সর্বোচ্চ তিন-চার জনের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। সে ক্ষেত্রে বিজয়ী প্রার্থীকে কম করে হলেও ৬ লাখ ভোট পেতে হবে। এবার ফাইনাল হিসাবে চলে আসুন। বিএনপি বা আওয়ামী লীগ প্রার্থীকে যদি জয়লাভ করতে হয় তবে তাদের রিজার্ভ ভোটের বাইরের পপুলার ভোটব্যাংক থেকে পৌনে ৫ লাখ ভোট ম্যানেজ করতে হবে। প্রার্থীদের জানতে হবে যে, ঢাকা দক্ষিণের পপুলার ভোট কারা এবং পপুলার ভোট কাকে বলে। প্রথমে বলে নিই পপুলার ভোট সম্পর্কে। যেসব ভোটার সরাসরি কোনো দল করেন না কিন্তু শিক্ষাদীক্ষা, আচার-আচরণ, বয়স এবং জেন্ডারের কারণে তারা তাদের সমাজে জনপ্রিয়। অন্যদিকে ভোটের সময় এসব জনপ্রিয় মানুষ নানা কারণে একজন প্রার্থীর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রদান করে প্রার্থীকে জনপ্রিয় করে ফেলেন। এ কারণেই এ ধরনের ভোটারকে বলা হয় পপুলার ভোট।
ঢাকার পপুলার ভোটারের একটি বিরাট অংশ হলেন মহিলা এবং জীবনে প্রথম ভোটার হওয়া ৩০ বছরের কম বয়সী স্কুল-কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা। এর বাইরে আছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান। মুক্তচিন্তার প্রগতিশীল কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী এবং সাংবাদিকরা আছেন এই গ্র“পে। আছেন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা; মসজিদ-মাদ্রাসা ও মক্তবের ইমাম-মুয়াজ্জিন-শিক্ষকরা। সরকারি কর্মকর্তা, উকিল-মোক্তার, জজ-ব্যারিস্টার, ব্যবসায়ী এবং নিম্ন আয়ের স্বাধীন পেশার মানুষ, শ্রমজীবী মানুষ, বাসাবাড়ির কাজের বুয়া, হরিজন সম্প্রদায় যেমন পপুলার ভোটের অংশ তেমনি ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইটি বিশেষজ্ঞ, শিল্পপতি, উঁচুতলার নাক সিটকানো অভিজাতবর্গও পপুলার ভোটের বাইরে নন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রায় ৯ লাখ পপুলার ভোটের ওপর নির্ভর করবে একজন প্রার্থীর জয়-পরাজয়ের নিয়তি। এখন যদি প্রশ্ন করেন কীভাবে এবং কেন একজন প্রার্থী পপুলার ভোট পেতে পারেন? উত্তর খুব সহজ, ভোটাররা প্রার্থীর শিক্ষা-দীক্ষা, আচার-আচরণ, চরিত্র, কর্মদক্ষতা, অতীত ইতিহাস জানতে চাইবেন এবং বুঝতে চাইবেন। প্রার্থী যদি তাদের পূর্বপরিচিত হন তাহলে কোনো কথা নেই, তারা নীরব থাকবেন এবং সময়মতো কাজটি করে ফেলবেন। পপুলার ভোটাররা কোনো দিন প্রচারণায় অংশ নেন না, প্রচারণার দ্বারা প্রলুব্ধ হন না এবং নিজের ভোট প্রান্তিক ভোটারদের মতো বিক্রি করেন না।
প্রার্থী যদি অপরিচিত এবং আনাকোরা হন সে ক্ষেত্রে পপুলার ভোটারকে আকৃষ্ট করার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে বৃহৎ জনসভা, যেখানে প্রার্থীরা প্রাণ খুলে নিজেকে হাজার হাজার মানুষের কাছে উপস্থাপন করতে পারেন। এটি সনাতন পদ্ধতি হলেও তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় জনমত গঠনে সবচেয়ে কার্যকর উপায়। ইদানীং উন্নত বিশ্বে মানুষের ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় নির্বাচনী প্রচারের ৯০ ভাগ হয়ে থাকে টেলিভিশন বিতর্কের মাধ্যমে। এতে প্রার্থী একদিকে যেমন নিজেকে তুলে ধরতে পারেন অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সঙ্গে বিতর্ক করে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে পারেন।
ঢাকা সিটি নির্বাচন নিয়ে যা হচ্ছে তাকে কোনোমতেই প্রচার বা গণসংযোগ বলা যাবে না। নির্বাচন কমিশনের যেসব কর্তাব্যক্তি প্রার্থীদের জন্য আচরণবিধি তৈরি করেছেন তারা দেশ-বিদেশের হাজারও রকমের বহুমুখী নির্বাচন সম্পর্কে যে সম্যক ধারণা রাখেন না এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। অন্যদিকে একটি নির্বাচনের অন্তর্নিহিত সমস্যা সমাধান এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে বাস্তব জ্ঞান তাদের কারোরই নেই। ফলে তাদের তৈরি করা অদ্ভুত সব নিয়মের পাল্লায় পড়ে প্রার্থীদের অদ্ভুত সব কা-কারখানা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে যেসব প্রার্থীর অতীতে নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা নেই তারা অনেকটা বাধ্য হয়েই নানা মুনির নানা মত অনুসরণ করতে বাধ্য হচ্ছেন। অন্যদিকে যাদের অতীত নির্বাচনের সফলতা কিংবা ব্যর্থতার ইতিহাস রয়েছে তারাও হয়তো গভীরভাবে চিন্তা করেননি কেন তারা সফল হয়েছিলেন কিংবা ব্যর্থ, অথবা বর্তমান নির্বাচনের নিয়ামক দলীয় ভোট এবং পপুলার ভোট আকৃষ্ট করার জন্য তাদের আসলে কী করা উচিত?
আমার মনে হয় প্রচলিত গণসংযোগ এবং সেইফ দৃশ্য নিয়ে তৈরি ভিডিও ফুটেজগুলো টিভিতে প্রদর্শিত হলে প্রার্থীর জন্য হিতে বিপরীত হয়। সাধারণ ভোটাররা এতে দুটি কারণে বিরক্ত হন। প্রথমত, তিনি এত জায়গায় গেলেন আমাদের এলাকায় এলেন না কেন অথবা এত মানুষের সঙ্গে হাত মেলালেন আমি কী দোষ করলাম ইত্যাদি। দ্বিতীয়ত, প্রার্থীকে যারা অপছন্দ করেন তারা আরও বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এবং যারা পছন্দ করেন তারা টিভি দেখার পর বিচিত্র সব কথাবার্তা বলতে থাকেন যেমন হাসিটা ভালো হয়নি, ড্রেসটা ঠিক ছিল না, পেটটা ফুলা ফুলা লাগছিল ইত্যাদি। এর বাইরে তারা আরও বলেন- ও আচ্ছা ওমুককে নিয়ে গণসংযোগ করছেন ভালো! কারণ ও-ই আপনাকে সব ভোট এনে দেবে, আমাদের দরকার নেই! ইত্যাদি।
আজকের লেখার শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। ভোটের মাঠের দুটি বাস্তব উদাহরণ দিয়ে লেখাটি শেষ করব। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল কারওয়ান বাজারে। কইতরী বেগম নামের ৬০ বছরের জীর্ণশীর্ণ দরিদ্র মহিলাটি দু-তিন দিন আগে ঢাকায় এসেছেন শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জের একটি প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে। একটি মুদি দোকানের গম ঝাড়ার কাজ করেন। সেদিন কাজ করতে করতে হঠাৎ তার পান খাওয়ার নেশা চেপে বসল। তিনি রাস্তার পাশের একটি পানের দোকান থেকে এক খিলি পান কিনে মুখে পুরে যেই না ফিরতে যাবেন ওমনি এক মেয়র প্রার্থী এসে তার হাত ধরলেন। বুড়ি দিশাহারা হয়ে পড়লেন। তিনি ভেবে উঠতে পারলেন না কী করবেন। লজ্জা পাবেন নাকি ভয়! মুখের পান ফেলে দেবেন নাকি দেবেন না। এরই মধ্যে প্রার্থী তার মাথায় হাত বোলালেন, কী যেন বললেন এবং চলে গেলেন। বুড়ির মেজাজ গরম হয়ে গেল। তিনি রাগের মাথায় মুখের পান ফেলে দিলেন এবং আশপাশের চ্যাংড়া পোলাপানদের জিজ্ঞাসা করলেন বিডা কিডা? (লোকটা কে) পোলাপান যা বলল তাতে বুড়ির গাল লাল হয়ে গেল!
দ্বিতীয় কাহিনীটি আমার নিজের। আমাদের ফরিদপুরের গ্রামের বাড়ির পাশের এক মুরব্বি বহু বছর ঢাকায় রিকশা চালাতেন। থাকতেন হাজারীবাগ। বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে বছর দশেক হলো গ্রামে থাকেন। আমার ইলেকশন করার কথা শুনে তিনি কী কারণে যেন ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। গ্রামের লোকজনকে বলা শুরু করলেন আমি ওর দল করব না, আমি করব ওমুকের দল। আমার প্রতীকটি নিয়ে তার ক্ষোভ আরও বেশি। তিনি বলে বেড়াচ্ছেন আংটি মার্কা পাইছে ওইডা নাকি হীরার আংটি। ইলেকশন করতে কি হীরার আংটি লাগে! সোলেমানি আংটি অইলে না হয় কথা ছিল। হীরার আংটি নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুইরা এমন ঢং দেহায় মনে অয় যেন নিহা করব! (নিকাহ করবে। ফরিদপুর অঞ্চলে দ্বিতীয় বিবাহকে নিকাহ বা নিহা বলে)
উপরোক্ত সমালোচনার ধরনধারণ দেখে আপনারা সহজেই অনুমান করতে পারবেন যে, একজন প্রার্থীকে কত কথা শুনতে হয়। বাংলাদেশ প্রতিদিন
লেখক : কলামিস্ট


শেয়ার করুন