সারাদেশে নাশকতার নেপথ্যে যারা!

বাংলামেইল:

প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তারের জন্য বিএনপি-জামায়াত ও এদের অঙ্গ সংগঠনের সাড়ে তিন হাজার নেতাকর্মীকে শনাক্ত করা হয়েছে। সম্প্রতি গোয়েন্দা সংস্থা এ তালিকা চূড়ান্ত করেছে। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, গোয়েন্দারা নাশকতাকারীদের পাশাপাশি নাশকতাপ্রবণ এলাকাও শনাক্ত করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী অভিযুক্তদের ওই তালিকা নিয়ে মাঠে নেমেছে পুলিশ ও র‌্যাব।

তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- সাবেক এমপি, মন্ত্রী, বর্তমান ও সাবেক ছ্ত্রানেতা, সাবেক আমলা ও ব্যবসায়ী নেতাসহ সাধারণ কর্মীরাও। এখন পর্যন্ত তালিকাভুক্ত শতাধিক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

পুলিশের মহাপরিদর্শক একেএম শহীদুল হক বাংলামেইলকে বলেছেন, ‘বিভিন্ন জেলায় যারা সহিংসতার সঙ্গে জড়িত ও ইন্ধনদাতা তাদের আমরা শনাক্ত করেছি। তাদের তালিকা আমাদের হাতে রয়েছে। নজরদারি বাড়ানো ও অভিযান জোরদার করা হচ্ছে।’

সূত্র জানায়, যেসব জেলায় যে স্থানগুলো নাশকতার ঝুঁকিপূর্ণ সে স্থানগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। কারা এসবের পেছনে মদদ দিচ্ছেন এবং অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করছেন তাদের অনেকের নামই জানা গেছে। এ ধরনের ব্যক্তিদের নামের তালিকা করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গোয়েন্দা প্রতিবেদন পাওয়ার পর পুলিশ ও র‌্যাবকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সেই তালিকা ধরেই এখন গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা চলছে।

সূত্র আরো জানায়, রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সাড়ে তিন হাজার বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীর তালিকা এখন পুলিশ-র‌্যাবের কাছে রয়েছে। পুলিশের দাবি, তালিকাভুক্ত নেতাকর্মীদের অধিকাংশই আন্দোলনের নামে নাশকতার পরিকল্পনা করছেন। তাদের ইন্ধনে পরিকল্পিতভাবে পেট্রোলবোমা ও ককটেল ছুঁড়ে একের পর এক নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। কেউ গ্রেপ্তারের পর কারাগারে আছেন। কেউ জামিন নিয়ে এলাকায়ই আছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, তালিকায় রাজধানী ঢাকার নেতাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগরের সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, বিএনপি নেতা এমএ কাইয়ুম, কাজী আবুল বাশারসহ বেশ কয়েকজনের নাম। এরই মধ্যে আমান উল্লাহ আমান গ্রেপ্তারের পর কারাগারে রয়েছেন। এছাড়াও তালিকায় থাকা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহা-সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ:
তালিকায় রয়েছেন- জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আশরাফি পাপিয়াসহ আবুজার গিফারী, আলী আহাম্মদ বাবু, শহিদুল হক, তাজেরুল ইসলাম, মো. দোলন, মো. আমিন, মাওলানা কেরামত আলী, জাফর আলী, রবিউল ইসলাম, একরামুল হক, মাসুদ রানা, সারওয়ার হোসেন, এনায়েতুল্লাহ, মো. আশিক, আবু সায়েদ, বিপ্লব হোসেন, শাহ নেওয়াজ, ইউসুফ আলী, তসিকুল ইসলাম, দুলাল হোসেন, সামিরুল ইসলাম, লতিফুর রহমান, মাওলানা সোহরাবসহ ১৩০ জনের নাম। তবে এদের মধ্যে অধ্যাপক শাজাহান মিয়া ও আশরাফি পাপিয়া জামিনে রয়েছেন।

চট্টগ্রাম:
পুলিশের এই তালিকায় চট্টগ্রামে প্রায় ৬০ জনের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে লায়ন আসলাম চৌধুরী, কাজী আবদুল্লাহ আল হাসান, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, মো. নুরুল আমিন, মো. সালাউদ্দিন, নুরুল কবির, তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখের নাম রয়েছে।

গাইবান্ধা জেলার তালিকায় রয়েছে জেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুজ্জামান বাবু, সাধারন সম্পাদক গাউছুল আজম ডলার, জামায়াতের আমির ডা. আবদুর রহিম, বিএনপি নেতা আবদুল হামিদসহ ১৮ জনের নাম।এদের মধ্যে ডলারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

বগুড়া:
জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, আলী আজগর তালুকদার, আবদুল গনি মণ্ডল, শাহে আলম, জামায়াত নেতা আবু নছর মো. আলমগীর হুসাইন, যুবদলের জেলা সভাপতি সিপার আল বখতিয়ার, শাহাবুদ্দিন, মাওলানা আলমগীর হোসেন, মিজানুর রহমান, রেজাউল করিম, আলাউদ্দিন সোহেল, মাজেদুর রহমান জুয়েলসহ অনেকের নাম তালিকায় রয়েছে। এর মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আবদুল গনি মণ্ডল ও জামায়াত নেতা শাহে আলম, আবু নছর মো. আলমগীর হুসাইনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

রাজশাহী:
বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু, শফিকুল ইসলাম মিলন, নাদিম মোস্তফা, শাহ মইনুল ইসলাম চৌধুরী, রবিউল ইসলাম, ওয়ালিউর রহমান রানা, আবদুল মতিন, বেলাল হোসেনসহ বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতার নাম রয়েছে বলেও জানা গেছে।

সিলেট:
এমএ হক, আবদুল গাফফার, আবদুল কাইয়ুম জালালী, দিলদার হোসেন সেলিম, শাহরিয়ার হোসেন, আরিফুল হক চৌধুরী, নাসিম হোসাইন, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, আলী আহমদ, শামসুজ্জামান জামান, হাবিবুর রহমান, সায়েফ আহমদ, হাফেজ আনোয়ার হোসাইন আমীর, ফখরুল ইসলাম, মাওলানা সোহেল আহমদ, ফরিদ আল মামুন, মাশুক আহমেদ, আনোয়ারুল ওয়াদুদ টিপু, আজিম উদ্দিন, হোসাইন আহমদ, এহসানুল করিম, ইউসুফ বিন সানী, মাহবুব কাদীর, রেজাউল করিম, বদরুল ইসলাম, সায়মন আহমদ, সাদিকুর প্রমুখের নাম রয়েছে।

এছাড়া নেত্রকোনা, গাজীপুর, রাজশাহীতে, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ, যশোর, বরিশাল, রংপুর, দিনাজপুর, চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লায়, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ, নরসিংদী, মৌলভীবাজার, নাটোরের বেশকিছু নেতার


শেয়ার করুন