সাংবাদিক সম্মেলনে নিহত মঞ্জুরুলের পরিবার, এমপির দাপট দেখাচ্ছে খুনিরা

DSC_0030নিজস্ব প্রতিবেদক : স্বামীর হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে কক্সবাজারে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে রামু গর্জনিয়ার যুবলীগকর্মী মঞ্জুরুল আলমের স্ত্রী সলিমা খাতুন। ২৯ জুন বুধবার দুপুরে কক্সবাজার প্রেসক্লাবে এ সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে তাঁর দুই শিশু সন্তান এবং পিতা উপস্থিত ছিলেন।
এসময় সলিমা খাতুন বলেন, গর্জনিয়ার নির্বাচনের আগের দিন তথা ২৭ মে রাতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী সাবেক শিবির ক্যাডার সৈয়দ নজরুল ইসলাম তার লোকজন নিয়ে আওয়ামীলীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরীকে হত্যা করতে গেছে এমন খবর মাইকে প্রচার হতে থাকলে আমি ও আমার স্বামী ঘর থেকে বেরহয়ে আসি। স্কুলমুড়া থেকে চেয়ারম্যানের বাড়ির সামনে যাওয়া মাত্রই আমরা হামলাকারীদের সামনে পড়ে যায়। তখন তাঁরা মঞ্জুরুলের গলায় নৌকার কার্ড ঝুলানো দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে লোহার রড় ও লাঠি দিয়ে মাথাসহ শরিরের বিভিন্ন অংশে আঘাত করতে থাকে। বিশেষ করে সাবেক শিবির ক্যাডার নজরুল, মাজেদ সিকদার ও মোজাফ্ফর নির্যাতন চালায় মধ্যযুগিয় কায়দায়। গ্রামের লোকজন এগিয়ে আসলে তাঁরা পালিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত  স্বামীকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সেখানেই তিনি একদিনের ব্যবধানে মারা যান।

DSC_0008
সলিমা খাতুন আরও বলেন, স্বামীকে অকালে হারিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার পর আইনী প্রতিকার চাইতে বারবার ছুটে গেছি রামু থানায়। কিন্তু থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর নানা অপারগতা দেখিয়ে মামলা নেয়নি। অবশেষে গত ৫ জুন ‘সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নং-১ কক্সবাজারে ’সাবেক শিবির ক্যাডার সৈয়দ নজরুল ইসলামকে এক নম্বর, মোজাফ্ফর আহমদকে দুই নম্বর  ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ. রহমান হলের সাবেক শিবির ক্যাডার মাজেদ সিকদারকে তিন নম্বর আসামি করে ২০ জনের বিরুদ্ধে  ফৌজদারি দরখাস্ত দিয়েছিলাম।
এ দরখাস্তে ৪০/৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারকের নির্দেশে ৯জুন রামু থানা পুলিশ হত্যা মামলাটি আমলে নেয়। কিন্তু পুলিশ এখনো একজন আসামীকেও গ্রেপ্তার করেনি। পুলিশের লাই পেয়ে আসামীরা এখন আমাকে মামলা তোলে নিতে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। তাঁরা এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের দাপটও দেখাচ্ছেন। তাঁদের  অব্যাহত হুমকিতে বাড়ছে নিরাপত্তাহিনতা।
মঞ্জুরুল নাকি নজরুলের সমর্থক ছিল সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে সলিমা খাতুন বলেন, নাতা মোটেও সঠিক নয়। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী তৈয়ব উল্লাহ চৌধুরীর পক্ষে কাজ করেছেন। আওয়ামীলীগের পক্ষে কাজ করেছে বলেই অকালে প্রাণ হারাতে হলো স্বামীকে। তাই এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সাংবাদিক সম্মেলনে মঞ্জুরুলের শশুড় ও স্থানীয় গ্রাম পুলিশ আবু শাহমা বলেন, খুনিরা আমাদেরকে ৩ লাখ টাকা দিয়ে ম্যানেজ করতে  চেয়েছিল। কিন্তু আমরা লোভি নই। এ কারণে আমাকেও নজরুল একাধিক মিথ্যা মামলায় আসামী করেছে। হত্যা মামলার একাধিক  স্বাক্ষীকে সে অহেতুক ভাবে মামলায় জড়িয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা কামনা করছি।


শেয়ার করুন