সব দলের মতামতে শক্তিশালী ইসি গঠন: রাষ্ট্রপতি

 সংলাপের মাধ্যমে দেয়া রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও প্রস্তাব বিবেচনা করে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নতুন ইসি গঠন নিয়ে বিএনপিসহ ৩১টি দলের সঙ্গে সংলাপ শেষে এ আশাবাদ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি। তবে কী প্রক্রিয়ায় নতুন ইসি গঠন হবে, তা জানাননি তিনি।

বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আলোচনায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ইতোমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো সার্চ কমিটি ও নির্বাচন কমিশন গঠনে অনেক সুচিন্তিত প্রস্তাব এবং মতামত দিয়েছেন। তিনি (রাষ্ট্রপতি) আশা প্রকাশ করেন, এসব প্রস্তাব ও মতামত বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রস্তাব ও মতামত শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠনে ইতিবাচক অবদান রাখবে।

দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে নিতে সব রাজনৈতিক দলকে সহযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বানও রাষ্ট্রপতি রেখেছেন বলে প্রেস সচিব জানান।

কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বিদায় নিতে যাওয়ায় গত বারের মতো এবারও দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করে নতুন ইসি গঠনের উদ‌্যোগ নেন রাষ্ট্রপতি।

কাজী রকিবউদ্দীন নেতৃত্বাধীন ইসি গঠনের আগে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান একটি সার্চ কমিটি গঠন করে তাদের সুপারিশের মধ‌্য থেকে পাঁচজনকে নিয়ে ইসি গঠন করেন।

রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে বেশিরভাগ দল সংবিধান অনুযায়ী আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে, তা না হওয়া পর্যন্ত সার্চ কমিটির পক্ষেই মত দিয়েছে বেশিরভাগ দল।

সংবিধানের ১১৮ অনুচ্ছেদে বলা আছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অনধিক চারজন নির্বাচন কমিশনারকে নিয়ে এই নির্বাচন কমিশন হবে। এ বিষয়ে প্রণীত আইনের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি কমিশন নিয়োগ দেবেন।

কিন্তু সংবিধানের আলোকে ওই আইন সাড়ে চার দশকেও না হওয়ায় প্রতিবারই নির্বাচন কমিশন গঠনে জটিলতা দেখা দেয়। গতবার নির্বাচন কমিশন গঠনের জন‌্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটি গঠনের উদ‌্যোগ নিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান।

সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান করে গঠিত ওই সার্চ কমিটি সিইসি পদের জন‌্য দুজন এবং নির্বাচন কমিশনার পদে আট জনের নাম প্রস্তাব করে।

তাদের মধ‌্য থেকে সাবেক সচিব কাজী রকিবউদ্দীন আহমদকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, জাবেদ আলী ও মো. শাহনেওয়াজকে কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন জিল্লুর রহমান।

ওই কমিশনের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে এসে এবারও একইভাবে সংলাপের আয়োজন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ‌্য দিয়ে গত ১৮ ডিসেম্বর এ আলোচনা শুরু হয়।

এরপর গত এক মাসে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ, বিরোধী দল জাতীয় পার্টিসহ মোট ৩১টি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বসেছেন রাষ্ট্রপতি।

সংলাপে অংশ নেয়া অন্য দলগুলো হল- লিবারেল ডেমোক্রেটি পার্টি (এলডিপি), কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ন্যশনালিস্ট ফ্রণ্ট (বিএনএফ), ইসলামী ঐক্যজোট, জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ), সাম‌্যবাদী দল, বিকল্প ধারা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাসদ (আম্বিয়া), বাসদ, ইসলামী আন্দোলন, গণতন্ত্রী পার্টি, গণফোরাম, খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, গণফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ও জাকের পার্টি।


শেয়ার করুন