সংলাপের পথে হাঁটছে না আ.লীগ

বাংলামেইল:

আ. লীগবিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোট সংলাপ ও নির্বাচনের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে হরতাল-অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছে। মধ্যবর্তী নির্বাচন ও সংলাপের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি। তবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এই মুহূর্তে সংলাপের পথে হাঁটতে চাইছে না।

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন বক্তৃতা বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বিএনপি নেত্রী যদি জামায়াতকে ছেড়ে আসতে পারে তাহলে তাদের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে।’ আবার তারা এটাও বলেছেন, ‘যারা আন্দোলনের নামে কর্মসূচি দিয়ে নাশকতা ও সন্ত্রাস করছে তাদের সঙ্গে  কোনো সংলাপ হতে পারে না। তবে নাশকতা ও সন্ত্রাসের পথ ছেড়ে আসলে সংলাপের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।’

গত ৮ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের এক মানববন্ধনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ‘সংলাপ অবশ্যই হবে। এই সংলাপ হবে ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে। তবে কোনো দলের সঙ্গে নয়। সংলাপ হবে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে।’
১০ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সচিবালয়ে তার কার্যোলয়ে বলেছেন, ‘শামসুল হুদা কেন, কারো প্রস্তাবেই সংলাপ হবে না।’ তার ভাষায় ‘নাশকতা ও জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে কোনো আপেস নেই।’

আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা মনে করেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট  রাজনীতির নামে অরাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়। দেশে সাংবিধানিক একটা সরকার রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী আগামী নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনের আগে সকল দলের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে। তবে সঙ্ঘাত আর সংলাপ এক সঙ্গে হতে পারে না।

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয় উল্লেখ করে বলেন, ‘ ২০ দলীয় জোট আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করছে। আর যারা রাজনীতির নাম করে পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করে, তাদের সঙ্গে কখনো সংলাপ হয় না। হতে পারে না। আর সংলাপের জন্য প্রয়োজন শান্তিপূর্ণ পরিবেশ। বিএনপি যা করছে এটা আন্দোলন নয়, অপরাধ।’

আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য এ্যাডভোকেট ইউসূফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ‘বিএনপির যে বক্তব্য তা সম্পূর্ণই অর্থহীন। তারা জেনে শুনেই এসব বক্তব্য দিচ্ছে। আর শর্ত দিয়ে কখনও সংলাপ হয় না। এটা কোনোভাবে সম্ভব নয়। কেনই বা হবে! দেশের সংবিধান রয়েছে। সংবিধান অনুযায়ী এখন কিসের নির্বাচন! আর নির্বাচনের আগেই বা কিসের সংলাপ! গত নির্বাচনের আগে তো তাদের সংলাপের জন্য বলা হয়েছিল। তারা তা মানেনি।’

সংলাপের কথা উড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন বলেন, ‘বিএনপি একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। তারা রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করছে। তাদের সঙ্গে কিসের সংলাপ! তারা নাশকতার সঙ্গে জড়িত। দেশের সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করছে। নারী শিশুকে হত্যা করছে। আন্দোলনের নামে কর্মসূচি দিয়ে দেশে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে। দেশকে একটি অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করছে। সুতরাং তাদের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই উঠে না ‘

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘অনেকে অনেক কথাই বলতে পারেন। কিন্তু আমি যতটুকু জানি বিএনপির সঙ্গে কোনো আলোচনায় বসবে না সরকার।’

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগরে সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘বিএনপি একটি সন্ত্রাসী দল। তাদের সঙ্গে কোনো সংলাপ নয়। তারা মানুষ পোড়ানোর রাজনীতি করছে। এরা মানুষ পুড়িয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। এটা আমরা হতে দিতে পারি না। তাই তাদের সঙ্গে সংলাপের কোনো প্রশ্নই আসে না।’

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গত ৪ জানুয়ারি থেকে গুলশানে তার দলের কার্যালয়ে অবস্থান করছেন। ৫ জানুয়ারি সমাবেশ করতে না দেয়ায় তিনি সেখান থেকেই আন্দোলন চালি যাচ্ছেন।


শেয়ার করুন