শৈত্যপ্রবাহ ও বৃষ্টি : জেলার লবণশিল্পে অচলাবস্থা

লবণ ,,,মাঠআতিকুর রহমান মানিক, কক্সবাজার ::

প্রায় সপ্তাহ ব্যাপী বিরাজমান শৈত্যপ্রবাহ ও সাম্প্রতিক গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে অচলাবস্থায় পড়েছে কক্সবাজারের লবণ শিল্প। জেলাব্যাপী সদ্য শুরু হওয়া লবণ উৎপাদন মৌসুমের প্রারম্ভেই এ রকম বিরূপ আবহাওয়ার ফলে প্রকৃতিনির্ভর এ শিল্প চলতি মৌসুমে লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদনকারী জেলা কক্সবাজারে প্রায় ১ মাস আগে লবণ উৎপাদনের জন্য মাঠে নামেন চাষীরা। দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী-কুতুবদিয়াসহ পেকুয়া, চকরিয়া, টেকনাফ ও সদর উপজেলার উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৬৫ হাজার একর লবণ মাঠে মাঠ প্রস্তুতি, আইল বাধা, চালানের পানি তোলা, গরা মারা ও পলিথিন বিছানোসহ আনুষাঙ্গিক অপরাপর সব প্রস্তুতি শেষ হওয়ার পর সবেমাত্র দু’এক চালান লবণ তুলেছেন চাষীরা। সিংহভাগ লবণ মাঠ এখনো উৎপাদন পর্যায়ে যায়নি। এমতাবস্থায় শৈত্যপ্রবাহ ও গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে থমকে গেছে লবণ উৎপাদন।
সদরের গোমতলীর লবণ চাষী বেলাল উদ্দিন বলেন, লবণ মাঠে ঢুকানো সমুদ্রের লোনা পানি উৎপাদনের জন্য কয়েক পর্যায়ে পক্রিয়াজাত ( জাত পানি) হতে উত্তরা বাতাস ও প্রখর সূর্যালোক দরকার। কিন্তু গত কয়েক দিনের ক্রমাগত শৈত্যপ্রবাহজনিত মেঘমেদুর আবহাওয়া ও আজকের বৃষ্টির ফলে ফাইনাল বেডে লবণ বসানো যাচ্ছেনা।
আরএক চাষী মুফিজুর রহমান বলেন, বুধবার সকাল থেকে হালকা বৃষ্টি শুরু হওয়ায় প্রোডাকশন বেড থেকে পলিথিন গুটিয়ে নেয়া হয়েছে। এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা সম্ভব হবেনা। আবহাওয়া স্বাভাবিক হয়ে উৎপাদন উপযোগী না হওয়া পর্যন্ত অলস সময় কাটাতে হচ্ছে জেলার লবণশিল্প সংশ্লিষ্টদের।
উল্লেখ্য, কক্সবাজারে স্বয়ংসম্পূর্ণ লবণশিল্প থেকে প্রতিবছর হাজর হাজার কোটি টাকা জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হয় ও এখানে উৎপাদিত লবণ পক্রিয়াজাতকরণের জন্য সদরের ইসলামপুর শিল্প এলাকায় প্রায় ৫৪ টি লবণ কারখানা স্থাপিত হয়েছে। স্থানীয় উদ্যোক্তারা ছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্র“প সমূহের মালিকানাধীন এসব কারখানায় বিভিন্ন ব্যাংক ও অর্থলগ্নী প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ রয়েছে। মৌসুমের প্রারম্ভেই আবহাওয়া জনিত বিরূপতার ফলে উৎপাদন বিঘিœত হওয়ায় লবণ কারখানাগুলো কাচাঁমাল সংকটে পড়তে পারে বলে আশংকা ব্যক্ত করেছেন মালিক-শ্রমিকরা।


শেয়ার করুন