শেষ হাসি কার, মাশরাফি না মাহমুদুল্লাহর?

2015_12_14_21_44_53_I9xMY9kK3S0BmIqXrWaKEhUzQQHGCH_original-400x225সিটিএন ডেস্ক:
কে হাসবে শেষ হাসি, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স না বরিশাল বুলস, মাশরাফি বিন মর্তুজা নাকি মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। কথার লড়াইয়ে যেই এগিয়ে থাকুক না কেন, মাঠের লড়াইয়েই বোঝা যাবে মঙ্গলবার রাতে শিরোপা কার হাতে উঠবে! নবাগত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স ও বরিশাল বুলসের মধ্যকার ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হবে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। এ ম্যাচটি দেখা যাবে বিটিভি ও চ্যানেল নাইনে। এই ম্যাচ দিয়েই পর্দা নামবে বিপিএলের তৃতীয় আসরের।
বিপিএল প্রেমীদের মন ভারী হতে পারে এই ভেবে যে, ২৪ দিনের আনন্দযজ্ঞ ভাঙছে। তাই টুর্নামেন্টের শেষ স্বাদ নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছে ক্রিকেট-প্রেমীরা। এক-দুই করে বিদায় নিয়েছে চার দল। ফাইনালের মহারণে মুখোমুখি দুই দল। এমন মঞ্চে নেই ক্রিস গেইল। ফাইনালের আগেই বিদায় শহীদ আফ্রিদি, কুমার সাঙ্গাকারাদের মতো তারকা সব ক্রিকেটাররাও। তারপরও বিপিএলের ফাইনালে থাকছে রাজ্যের উত্তেজনা আর রোমাঞ্চ।
ফাইনাল মঙ্গলবার। অথচ শেষ মহারণের আগের দিন সোমবার মাঠেই দেখা গেল না কোনো দলকে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স হোটেল ওয়েস্টিনে আর বরিশাল বুলস হোটেল লা মেরিডিয়ানে সংবাদ সম্মেলন করেই ফাইনালপূর্ব কাজগুলো শেষ করল। বিপিএলের ঠাসা সূচির কারণে ফাইনালের আগে অনুশীলনের প্রয়োজনীয়তা মনে করেনি দল দুটি।
কুমিল্লা এবারই প্রথম দল হিসেবে বিপিএলে অংশ নিয়েছে। শুরুতেই একের পর এক চমক দিয়ে ফাইনালে তারা। বিপিএলের আটসাটো সূচির কারণে সব দল শুধু ম্যাচ খেলার মধ্যেই ছিল। অনুশীলন করার সুযোগ পায়নি কেউ। সরাসরি ফাইনালে উঠে যাওয়ায় দু’দিন বিশ্রাম পেয়েছেন কুমিল্লার খেলোয়াড়রা। দলের মধ্যে নামকরা কোনো তারকা ক্রিকেটার ছিল না। তারপরও প্রতি খেলায় একের পর এক চোখ ধাঁধানো পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। প্রথম পর্ব থেকে শুরু করে সব জায়গাতেই শীর্ষে থেকে ফাইনালে উঠেছে কুমিল্লা।
বিপিএলের তৃতীয় আসরের ফাইনালে যাওয়ার নেপথ্যের কারিগর হিসেবে মাশরাফিকেই মানছেন অনেকে। দলকে ফাইনালে নেয়ার পরও আত্মঅহংকারে ভুগছেন না তিনি। নিজের দলটা যেমন তেমনই বর্ণনা দিয়ে যাচ্ছেন। কুমিল্লা শেষ ম্যাচে এসে শুধু আন্দ্রে রাসেলকে হারিয়েছে। তাকে ছাড়াই মাঠে নামতে হবে। বিপিএল দিয়েই নিজেকে আলোয় আনা পাকিস্তানি বংশোদ্ভেূাত ৩৪ বছর বয়সী ইংলিশ ক্রিকেটার এশার জায়েদির উপর মাশরাফির পুরো আত্মবিশ্বাস রয়েছে।
একই সঙ্গে আবু হায়দার রনি যে অসাধারণ বোলিং করেছেন তা এক কথায় অবিশ্বাস্য। সব মিলিয়ে মাশরাফির আশা শেষটাও ভালো করবে কুমিল্লা। এ প্রসঙ্গে কুমিল্লার অধিনায়ক বলেন, ‘আমরা যেভাবে চেয়েছি এ পর্যন্ত সেভাবেই খেলে আসতে পেরেছি। আর এখন তো দুই দলের জন্যই ডু অর ডাই ম্যাচ। আমরা আশাবাদী এবং ইতিবাচক। শেষ যতগুলো ম্যাচ আমরা জিতেছি, যেভাবে ইতিবাচকভাবে খেলে এসেছি, এভাবে যদি খেলতে পারি ইনশাল্লাহ ফাইনালে ভালো কিছু হবে।’
গেইলের জায়গা পূরুণ করতে মরিয়া বরিশালের সাব্বির রহমান রুম্মান
এদিকে সবাই ফাইনালে গেইলের ব্যাটিং দেখতে চেয়েছিলেন। তার সঙ্গে বরিশাল বুলসের চুক্তি ছিল পাঁচ ম্যাচ। এক ম্যাচ তাকে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। খেলেছেন চার ম্যাচ। বাংলাদেশে থাকার পরও রোববারের ম্যাচটি খেলেননি তিনি। না খেলার কারণ হিসেবেও রয়েছে নানা কথা। অথচ দলীয় পারফরম্যান্সেই তারা টানা দুই ম্যাচ জিতে ফাইনালে উঠেছে। শুরুতে ফর্মহীনতায় থাকা সাব্বির রহমান রুম্মান ব্যাটে ছন্দ খুঁজে পেয়েছেন। দলের বিদেশি কেভিন কুপার দুর্দান্ত অলরাউন্ডার পারফরম্যান্স করছেন।
সেই সঙ্গে বরিশালের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ধারাবাহিকভাবে রান পাচ্ছেন। যদিও বরিশালের অধিনায়কের খেলা নিয়ে কিছুটা শঙ্কা ছিল। মাহমুদুল্লাহ সামান্য চোট পেয়েছেন। তবে মাহমুদুল্লাহর ফাইনালে খেলার ব্যাপারে তাদের কর্মকর্তারা দারুণ আশাবাদী।
বরিশালের মূল শক্তি বোলিংয়ে আল-আমিন হোসেন ও কেভিন কুপার টুর্নামেন্টের দারুণ সাফল্য পাচ্ছেন। বিপিএলের প্রথম আসরেও বরিশাল বার্নার্স ফাইনালে খেলেছিল। বিপিএলের তৃতীয় আসরের ফাইনাল ম্যাচের লক্ষ্য নিয়ে শাহরিয়ার নাফীস বলেন, ‘আমরা লিগ পর্ব এবং কোয়ালিফায়ারে ভালো খেলে ফাইনালে এসেছি। সেই খেলাটাই আমরা ধরে রাখতে চাই। ফাইনাল ভেবে নয়, আমরা নিজেদের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে চাই। তাহলেই ফাইনালে ভালো কিছু অবশ্যই হবে।’
বিপিএলের লিগ পর্বে কুমিল্লা ও বরিশাল সমান সাতটি করে ম্যাচ জিতেছে। তবে নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় শীর্ষে ছিল কুমিল্লা, তিনে বরিশাল। ফাইনালের আগে লিগ পর্বের ম্যাচগুলোতে প্রেরণা পেতে পারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। যেখানে দুই পর্বেই বরিশাল বুলসকে হারিয়েছিল মাশরাফির কুমিল্লা। মঙ্গলবার ফাইনালে বরিশাল কি পারবে লিগ পর্বের হারের শোধ তুলে ট্রফি উচিয়ে ধরতে, নাকি ধারাবাহিক শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ দেবেন মাশরাফিই? সব ফয়সালা হবে মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। বাংলামেইল


শেয়ার করুন