শেষ ম্যাচে নাটকীয় জয় পেল জিম্বাবুয়ে

CRICKET-BAN-ZIMসিটিএন ডেস্ক :

 শেষ অবধি টাইগার বোলারদের পরাস্ত করেই শেষ টি-টোয়েন্টিতে জয় তুলে নিল সফরকারী জিম্বাবুয়ে। নির্ধারিত ওভারের এক বল বাকি থাকতেই তিন উইকেটে বাংলাদেশকে হারিয়েছে সফরকারীরা। ফলে ওয়ানডে সিরিজ হারলেও টি-টোয়েন্টিতে সমতা নিয়ে সম্মানজনক ফেরা নিশ্চিত করলো দলটি।

রবিবার মিরপুরে জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যান ওয়েলার ও মাদজিভার ব্যাটিং নৈপুণ্যে নাটকীয় এক জয় পেয়েছে চিগম্বুরার দল।

প্রথমে মাত্র ৩৯ রান তুলতেই টপ অর্ডারের পাঁচ ব্যাটসম্যানকে হারায় জিম্বাবুয়ে দল। সেই চাপ কাটিয়ে অবশেষে বাংলাদেশের দেয়া ১৩৬ রানে লক্ষ্য টপকে যায় সফরকারী দল।

আল আমিন হোসেনের জোড়া আঘাতে শুরুতেই চাপে পড়ে জিম্বাবুয়ে। সিকান্দার রাজাকে মুশফিকুর রহিমের গ্লাভসবন্দি করার পর শন উইলিয়ামসকে বোল্ড করেন আল আমিন। তার হ্যাটট্রিক ঠেকিয়ে দেন ক্রেইগ আরভিন।

বোলিংয়ে এসেই আঘাত হানেন মুস্তাফিজুর রহমান। তার দ্বিতীয় বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সাব্বির রহমানকে ক্যাচ দিয় ফিরে গেছেন রেজিস চাকাভা।

রান আউট হয়ে ফিরে যান ক্রেইগ আরভিন। লুক জংউই কাভারে ঢেলে দিয়েই একটি রান নিতে চেয়েছিলেন, রান নেওয়া সম্ভব নয় বুঝতে পেরে ফিরে যান তিনি। ততক্ষণে অনেক দূর এগিয়ে আসা আরভিন আর ফিরতে পারেননি। মাশরাফি বিন মুর্তজার থ্রো ধরে নাসির স্টাম্প ভেঙে দেন।

ক্রেইগ আরভিনের রান আউট আর এল্টন চিগুম্বুরার দ্রুত বিদায় জিম্বাবুয়ের বিপদ আরো বাড়ায়। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে শূন্য রানে আউট হন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক। জুবায়ের হোসেনের বদলে দলে ফেরা আরাফাত সানির বলে লং অফে মাহমুদউল্লাহকে ক্যাচ দেন তিনি।

৩৯ রানে ৫ উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ে প্রতিরোধ গড়ে লুক জংউই ও ম্যালকম ওয়ালারের ব্যাটে। তাদের ৫৫ রানের জুটি ভাঙেন শুরুতে জিম্বাবুয়েকে কাঁপিয়ে দেওয়া আল আমিন। তার বলে ইমরুল কায়েসকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ৩৮ বলে ৩৪ রান করা জংউই।

জিম্বাবুয়ের আশা বাঁচিয়ে রাখেন ওয়ালার ও নেভিল মাডজিভা। ১৯তম ওভারে ১০ রানে মুস্তাফিজের বলে ‘নো’ বলের কল্যাণে মাডজিভা বেঁচে যান। তবে ফ্রি হিটসহ সেই ওভারের শেষ তিন বলে কোনো রান নিতে পারেননি এই ব্যাটসম্যান।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ১৮ রান। সেই ওভারটি করতে আসেন নাসির হোসেন। এর আগে তার বলে দুটি ছক্কা হাঁকানো ওয়ালার প্রথম বলেই লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করতে চেয়েছিলেন, তবে সাব্বিরের হাতে ধরা পড়েন তিনি।

দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যবধান কমান মাডজিভা। পরের বলে লং অফে বল পাঠিয়ে নেন দুই রান। চতুর্থ বলে চার হাঁকিয়ে দলকে জয়ের আরও কাছে নিয়ে যান তিনি। পঞ্চম বলে বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে দারুণ এক জয় এনে দেন মাডজিভা।

২০ রানে ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সেরা বোলার আল আমিন।

এর আগে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে ধারাবাহিকভাবে উইকেট হারানো টাইগাররা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছে ১৩৫ রান।

ব্যাটসম্যানদের উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার এ ম্যাচে টাইগারদের সংগ্রহ ভদ্রস্ত হওয়ার পিছনে মূল ভূমিকা এনামুল হক বিজয়ের। বিজয়ের ৪৭ রানের ইনিংসে ভর করেই টাইগাররা লড়াই করার মত পুঁজি পেয়েছে।

এর আগে ভাল সূচনা করলেও ওপেনার তামিম ইকবালের ইনিংস থেমে যায় ২১ রানে। ইনিংসের ৩.৪ ওভারে মাদজিবার বলে জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক চিগম্বুরার ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগে তামিম ১ চার ও ২ ছক্কায় ১৫ বলে ২১ রান সংগ্রহ করেছেন।

এছাড়া টাইগারদের হয়ে ইমরুল কায়েস ১০, সাব্বির রহমান ১৭ রান সংগ্রহ করেছেন। অন্য কোন ব্যাটসম্যানই দুই অংকের স্কোর গড়তে পারেন নি।

জিম্বাবুয়ের হয়ে পানিয়াঙ্গারা ৩টি, মাদজিবা ও ক্রেমার ২টি করে উইকেট লাভ করেছেন। রবিবার বিকাল ৫ টায় মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয়েছে।

এর আগে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করা বাংলাদেশ প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারায়।

শেষ ম্যাচে জিম্বাবুয়ের এই জয়ে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষ হল ১-১ সমতায়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৫/৯ (তামিম ২১, ইমরুল ১০, এনামুল ৪৭, মুশফিক ৯, সাব্বির ১৭, নাসির ৩, মাহমুদউল্লাহ ৮, মাশরাফি ০, আরাফাত ৫, মুস্তাফিজ ১*, আল আমিন ১*; পানিয়াঙ্গারা ৪-০-৩০-৩, মাডজিভা ৪-০-২৫-২, চিশোরো ৪-০-২৭-১, উইলিয়ামস ৪-০-২৬-০, ক্রেমার ৪-০-২১-২)।

জিম্বাবুয়ে: ১৯.৫ ওভারে ১৩৬/৭ (রাজা ৫, চাকাভা ৪, উইলিয়ামস ০, আরভিন ১৫, জংউই, চিগুম্বুরা ০, ওয়ালার ৩৪, মাডজিভা ২৮*, ক্রেমার ০*; মাশরাফি ৪-০-২৭-০, আল আমিন ৪-০-২০-৩, মুস্তাফিজ ৪-০-১২-১, আরাফাত ৪-০-২৬-১, নাসির ৩.৫-০-৪৫-১)।

ফল: জিম্বাবুয়ে ৩ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা: নেভিল মাডজিভা। সিরিজ সেরা: ম্যালকম ওয়ালার


শেয়ার করুন