শেখ কামালের ৬৭তম জন্মবার্ষিকী আজ

নিউজ ডেস্ক :

ঢাকা: ৫ আগস্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে শেখ কামালের ৬৭তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৯ সালের এই দিনে তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

শেখ কামালের ৬৭তম জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন ক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠন সকাল ৮টায় ধানমন্ডি আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও সকাল ৯ টায় বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে।

আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সকাল ১১ টায় এ উপলক্ষে ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেছে। এদিকে শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী যুবলীগ সকাল ১০ টায় শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা ও আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি প্রধান অতিথি থাকবেন।

আবাহনী সমর্থক গোষ্ঠী বৃহষ্পতিবার মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিটে ক্লাব চত্বরে আবাহনীর প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।

এছাড়ও শুক্রবার বিকাল ৪টায় আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হবে স্মৃতিচারণ সভা। এতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ও ক্লাবের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।

বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী, তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক শহীদ শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বি.এ. অনার্স পাস করেন। বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি অঙ্গনের শিক্ষার অন্যতম উৎসমুখ ‘ছায়ানট’-এর সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন তিনি।

তিনি ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধূলায় প্রচন্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সেই সময়ের জনপ্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠীরও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি।

শেখ কামালের দিকনির্দেশনায় তৎকালীন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সেসময় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন।

১৯৭১-এর ২৫ মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী দ্বারা বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের বাসভবন আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে বাড়ি থেকে বের হয়ে সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তিনি।

শেখ কামাল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়্যারকোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন লাভ ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন।

তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন এবং শাহাদাত বরণের সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমসারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’।

তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই দেশবরেণ্য অ্যাথলেট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ সুলতানা খুকুর সাথে তার বিয়ে হয়। পরে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে মাত্র ২৬ বছর বয়সে শত্রুদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে স্বপরিবারে শাহাদাত বরণ করেন।

সূত্র: বাসস

 


শেয়ার করুন