পূণ্যের মাসে পূণ্যবান শিশু

শিশু আফরা-আবতাহি রোজা রাখছে খুশি মনে

Afra-Abtahi Pictureবিশেষ প্রতিবেদক:
ইসলামের মূল ফরয পাঁচটি। কালেমা ,নামাজ,রোযা,হজ্ব,যাকাত।শিশুরা চাইলে এই পাঁচ মূল স্তম্ভের মধ্যে প্রথম তিনটি সহজেই পালন করতে পারে। বিশেষ করে মাহে রমজানে শিশু মনে ধর্মীয় ফরজ কাজ নামাজ,রোযার অপরিহার্যতা প্রমাণের এক বিরাট সুযোগ। বড়দের দেখা-দেখি মাহে রমজানে শিশুরা নামাজ-রোজার মত ইবাদত বন্দেগীতে মেতে উঠে। মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাযিল এর মাস তথা সিয়াম সাধনার এই মাসে প্রত্যেক মুসলমানদের ঘরে শিশুদের সেহেরী খাওয়া, রোজা পালন ও ইফতারীতে শরীক হওয়া অন্যরকম এক পবিত্র আবহ বিরাজ করে। শিশুরা নিজেদের তৈরী করে নেয় ভবিষ্যৎ ইবাদত বন্দেগীর জন্য । এরই অংশ হিসেবে দু’শিশু ভাই-বোন চলতি বছরের দৈনিক ১৬ ঘন্টা রোজা পালনে সাধ্যমত চেষ্টা করছে। তাদের মধ্যে বড় আনিকা মাহবুব আফরা। ১১ বছর বয়সী পঞ্চম শ্রেণির এই ছাত্রী ২৪জুন পর্যন্ত ১৮টি রোজার মধ্যে ১৫টি খুব ভালভাবে পালন করেছে। শুরুর ১ম সপ্তাহে গাঁয়ে জ্বর- সর্দির মত শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনটি রোজা পালন করতে পারেনি আফরা । এই জন্য শিশু আফরার মনে বড় কষ্ট। ঈদের পর সম্ভব হলে তনিটি কাযা রোজা রেখে দেয়ার প্রতিজ্ঞা করেছে আফরা। রোজা রাখার পাশাপাশি আফরা নিয়মিত নামাজ আদায় ও কোরআন তিলাওয়াত চালিয়ে যাচ্ছে। রোযা রাখা কষ্ট কি না জানতে চাইলে সহাস্যে আফরা জানান, গেল বছর ৫টি রোজা রেখেছি, এই বছর পণ করেছিলাম সব ক’টি রাখবো। অসুস্থতার জন্য ৩টি রাখা সম্ভব হয়নি। এবার যেহেতু পি.এস.সি পরীক্ষা হচ্ছে না, তাই পড়ার টেনশন নেই । ইনশাল্লাহ অবশিষ্ট রোজা অবশ্যই রাখব। শিশু আফরা জানান, ইসলামের বাধ্যবাধকতা পালনে বাবা সাংবাদিক এম.আর মাহবুব ও মা খালেদা জন্নাত আমরা ৩ ভাই-বোনকে সর্বদা বোঝান এবং উৎসাহ দেন। যেহেতু রোজা রাখলে আল্লাহ খুশি হন সেজন্য রোজা রাখছি । আফরা আরো জানান, দুপুরের পর একটু কষ্ট হলেও মা –বাবার সাথে ইফতারীতে বসলে সব ভুলে যাই। তাছাড়া আমার বান্ধবী তুষার, সালসাবিল ও মাহিয়ারা প্রতিদিন রোজা রাখছে। অন্যদিকে শিশু আফরার ছোট ভাই নাভিদ মাহবুব আবতাহি- পড়ে তৃতীয় শ্রেণিতে। চলতি রমজানে ৮বছর বয়সী আবতাহি ১০টি রোজা রেখে দিয়েছে। বাবা-মায়ের চোখ রাঙ্গানীকে চোখের পানিতে ম্যানেজ করে শিশু আবতাহি রোজার মত কঠিন কাজটি পালনে খুবই আগ্রহী শিশু আবতাহির ব্যাপারে জানতে চাইলে তারই প্রতিবেশী, ঝিলংজার পশ্চিম হাজ্বী পাড়ার বাসিন্দা, কক্সবাজারের সিনিয়র সাংবাদিক মমতাজ উদ্দীন বাহারী জানান- আমার ভাতিজা আবতাহিকে দেখছি ৬বছর বয়স থেকে সে মসজিদে গিয়ে নিয়মিত নামাজ আদায় করছে। ছোট আবতাহির পক্ষে সম্ভব ধৈর্য্য ও সিয়াম সাধনার রোজা রাখা। শিশু আবতাহি জানান বাবা-মা, আপু নিয়মিত রোজা রাখছেন। তাছাড়া স্যারেরাও রোজার সওয়াবের কথা বলেছেন। মাঝেমধ্যে আম্মা নিষেধ করলেও বাবার উৎসাহে রোজা রাখছি। আমি বড় হলে সব রোজা রাখবো। হুজুরেরা বলেছেন, নামাজ-রোজা রাখলে মুসলমানরা বেহেস্তে যাবেন, আমি বেহেস্তে যেতে চাই।
এদিকে শিশু আফরা, আবতাহির বাবা সাংবাদিক এম.আর ও মা খালেদা জন্নাত জানান, নৈতিকতাবোধ সম্পন্ন পরহেজগার সন্তান সকল মা-বাবার কাছে আরাধনার বিষয় । চেষ্টা করছি সন্তানেরা যাতে, ইসলামের মূল আকিদা পালনের মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে ঈমানদার মুসলমানে পরিণত হয়। শিশু আফরা- আবতাহি নন, চলতি রমজানে এদের মতো প্রতিটি মুসলমানদের ঘরে রোজাদার শিশু বেড়ে উঠুক। এই প্রত্যাশা সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ।


শেয়ার করুন